বিশ্বকাপ জয়ীদের হাতেই শিরোপার স্বপ্ন

একজন দুইজন নয়, ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ ব্যাচ থেকে পাঁচ পাঁচজন তরুণ ক্রিকেটার একসাথে সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশের এশিয়া কাপ দলে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটা বয়সভিত্তিক দল থেকে এতজনকে একসাথে পাওয়ার ঘটনা বিরলই বটে; আর এই বিরল ঘটনা বিশ্বজয়ী সেই দলের সামর্থ্যের প্রমাণ দেয়।

শুরুতে অবশ্য শরিফুল ইসলাম, তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন এবং তানজিদ তামিমকে নিয়েই এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করেছিল নির্বাচকরা। তবে পরবর্তী সময়ে হাঁটুর ইনজুরিতে ইবাদত হোসেন পড়ায় বদলি হিসেবে ডাকা হয় পেসার তানজিম হাসান সাকিবকে। সবমিলিয়ে তাই শ্রীলঙ্কায় এখন আছেন লাল-সবুজের পাঁচজন উদীয়মান তারকা।

আকবর আলীর নেতৃত্বে এরা সবাই যখন বিশ্বকাপ ট্রফি জিতেছিল সেসময় দলের কোচ ছিলেন নাভিদ নেওয়াজ। তিনি এখন শ্রীলঙ্কার সহকারী কোচ, তবে ভোলেননি পুরনো শিষ্যদের। তাইতো মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট শুরুর আগে শুভকামনা জানিয়েছেন তাঁদের। নেওয়াজ বলেন, ‘আমি তাদের সবাইকে শুভকামনা জানাই, যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাঁরা খুব বেশি ভাল করবে না সেই আশা করি।’

এই তরুণেরা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়েই থামবে না, বরং এগিয়ে যাবে আরো বড় কোন অর্জনের দিকে সেটাই এখন প্রত্যাশা নাভিদ নেওয়াজের। তিনি জানান, ‘যুব বিশ্বকাপ জেতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিছু, কেননা এটি তাদের সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের পথ খুলে দিয়েছে। কিভাবে তাঁরা নিজেদের টিকিয়ে রাখবে এবং কিভাবে ক্রমাগত উন্নতি করবে সেটার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।’

এই কোচ আরো যোগ করেন, ‘একজন কোচ হিসেবে ছেলেদের অগ্রগতি দেখে সন্তুষ্ট। যখন তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরো ভাল করবে এবং সেখানকার চাপ মোকাবেলা করতে শিখবে তখন সেটা আমাকে আরো আনন্দ দিবে।’

অন্যদিকে অধিনায়ক আকবর আলী জানিয়েছেন সতীর্থদের সাফল্যের রহস্য। এই উইকেটকিপারের বিশ্বাস, আমাদের ব্যাচের সবচেয়ে বড় গুণ হলো প্রত্যেকেই ইতিবাচক – আমরা সহজে হতাশাগ্রস্ত হই না, আবার অল্পতেই একেবারে আকাশে উঠে যাই না। খারাপ বা ভাল সময়কে আমরা স্বাভাবিকভাবে নেয়ার চেষ্টা করি।’

এসবের পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বিভিন্ন পদক্ষেপকেও উন্নতির কারণ বলে মনে করেন তিনি। বিশেষ করে বিশ্বকাপ জেতার পর স্কোয়াডের প্রত্যেককে আর্থিক নিরাপত্তা দিয়েছিল বোর্ড, আর সেটি তাঁদের অনেক সাহায্য করেছে বলে জানান আকবর।

বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজনেরও অবদান আছে যুব বিশ্বকাপ জয়ে। তবে মূল কৃতিত্ব খেলোয়াড় এবং কোচকেই দিচ্ছেন তিনি।

সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, ‘নাভিদ নেওয়াজ দারুণ কাজ দেখিয়েছে, তাঁকে সেটার কৃতিত্ব দিতে হবে। আবার সেই ব্যাচের খেলোয়াড় প্রচণ্ড প্রতিভাবান, তাঁরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যত। এমনকি যারা এ মুহূর্তে জাতীয় দলের সঙ্গে নেই; আকবর, ইমন, দীপু – এরাও একটা সময় দলে নিজেদের জায়গা করে নিবে।’

শরিফুল ইসলাম, তাওহীদ হৃদয়রা তো এখন জাতীয় দলে নিয়মিত। তামিম ইকবালের বিকল্প ভাবা হয় তানজিদ তামিমকে; আর শামীম হোসেন, তানজিম সাকিবরা হতে পারেন ফিনিশার এবং পেস বোলিং অলরাউন্ডার সমস্যার সমাধান। এছাড়া আকবর আলী, দীপু, ইমনদের উপরও রয়েছে প্রত্যাশা। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ এখন তাকিয়ে আছে সম্ভাবনাময়ী এক ঝাঁক তরুণ তুর্কির দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link