২০০০ সালের ২৯ অক্টোবর, কোকা-কোলা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মুখোমুখি হয়েছিল শ্রীলঙ্কা এবং ভারত। সনাথ জয়সুরিয়ার ১৮৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ভর করে ২৯৯ রান স্কোরবোর্ডে তুলেছিল শ্রীলঙ্কা – জবাবে লড়াই করা তো দূরে থাক, নূন্যতম প্রতিরোধও সেদিন গড়তে পারেনি ভারত। মাত্র ৫৪ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল সৌরভ, শচীনরা।
প্রায় দুই যুগ পরে পুরনো সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিয়েছে ভারত; এশিয়া কাপের ফাইনালে লঙ্কানদের পঞ্চাশ রানে গুটিয়ে দিয়েছে সিরাজ, হার্দিকরা। বাকি কাজ অনায়াসেই করে ফেলেছে দলটির ওপেনাররা, কোন উইকেট না হারিয়ে সপ্তম ওভারে টপকে গিয়েছে নির্ধারিত লক্ষ্য।
এদিন টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দাসুন শানাকা, কিন্তু এরপরই রীতিমতো তান্ডবের মুখে পড়ে তাঁর দল। শুরুটা করেন জাসপ্রিত বুমরাহ, এরপর মোহাম্মদ সিরাজ একটানা ফেরান পাঁচজন ব্যাটসম্যানকে। তাতেই ১২ রানের মধ্যে ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। কুশল মেন্ডিস খানিকটা চেষ্টা করেছিলেন, তবে স্থায়ী হতে পারেননি বেশিক্ষণ।
দলীয় ৩৩ রানে মেন্ডিসকে আউট করেন সিরাজ। এরপর ওয়েলেলাগেকে সাজঘরের পথ দেখান পেসার হার্দিক পান্ডিয়া। বাকি দুই উইকেটও শেষ ওভারে শিকার করে নেন পান্ডিয়া, শেষ পর্যন্ত ১৫.২ ওভারে ৫০ রানে থেমে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস।
৫১ রানে মামুলি টার্গেট তাড়া করতে নেমে নিয়মিত ওপেনার রোহিত শর্মাকে ছাড়াই নামে ভারত। ঈশান কিষাণ আর শুভমান গিল অবশ্য কোন ছাড় দেননি; শ্রীলঙ্কান বোলারদের কোন সুযোগ দেয়ার আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন দলের তরী। দশ উইকেটের পাশাপাশি ২৬৩ বল হাতে রেখেই জয়ের স্বাদ পেয়েছে টিম ইন্ডিয়া। ভারত তো বটেই, ইতিহাসে এর আগে কোনো দলই কোনো ফাইনালে এত বল বাকি রেখে জয় নিশ্চিত করতে পারেনি।
২৩ বছর আগে যেভাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা, ঠিক তেমনটাই এবার লঙ্কানদের ফিরিয়ে দিলো গিল, সিরাজরা। বলা যায়, উত্তরসূরিদের হয়ে প্রতিশোধই নিয়েছে ভারতীয় দল।
এই নিয়ে অষ্টমবারের মত এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে নিলো ভারত। এর আগের ওয়ানডে এশিয়া কাপেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়া। বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট এমন আধিপত্য দেখানো জয় নিশ্চিতভাবেই বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিবে বিরাট কোহলিদের।