ক্রিকেটের আইন প্রণয়ন করে এমসিসি। বোল্ড আউট, ক্যাচ আউট বা অন্য সব আউট কীভাবে হবে, তারাই তা ঠিক করে দিয়েছে। রান আউটের নিয়মও তারাই ঠিক করেছে এবং নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রান আউট করা তাদের আইনে সাধারণ একটি রান আউট।
আপনি যে ক্রিকেটীয় স্পিরিটের কথা বলছেন, সেই স্পিরিট রক্ষায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা এই এমসিসিরই। কোনটা স্পিরিটের বাইরে, কোনটা স্পিরিটের মধ্যে, এসব নিয়ে তাদের গাইডলাইন আছে। তারা ‘এমসিসি স্পিরিট অব ক্রিকেট কাউড্রে লেকচার’ আয়োজন করে প্রতি বছর। তারা স্পিরিটের শিক্ষা দেয় বছরজুড়ে।
এই এমসিসিই বারবার বলে দিচ্ছে, নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রান আউটের সঙ্গে স্পিরিটের সম্পর্ক নেই, এটি সিম্পল রান আউট। অথচ স্পিরিটের চিন্তায় আপনার-আমার ঘুম হচ্ছে না!
ক্রিকেটের স্পিরিট অনেক বড় ব্যাপার। ইন্টারনেটে ক্লিক করুন, কিছুটা ধারণা পাবেন। খেলাধুলার স্পিরিটই অনেক বড় ব্যাপার। একটা বৈধ আউটের প্রসঙ্গ টেনে আনলে বরং স্পিরিটকেই ছোট করা হয়। আর ‘ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা’-এই কথাটাও অতি চর্চিত একটা আপত্তিকর কথা। দুনিয়ার কোন খেলাটা ‘অভদ্রলোকের’ খেলা?
সব খেলাই তো ভদ্রলোকের খেলা, সব খেলারই স্পিরিটের পরিধি বিশাল। এই যুগে এসে এসব নিয়ে বিতর্ক করাটাই হাস্যকর। অতীত ধারণার মানসিক দা*সত্ব থেকে বের হয়ে আসা উচিত।
স্ট্রাইক প্রান্তে ক্রিজ ছেড়ে বের হলে ব্যাটসম্যানরা যেমন স্টাম্পড হয়, নন-স্ট্রাইক প্রান্তে আগেভাগেই বের হলে রান আউট হয়। বোলার বল করার আগে ক্রিজ ছেড়ে বের হওয়া যাবে না–এটাই নিয়ম। নিয়ম ভেঙে যে অবৈধ সুবিধা নিচ্ছে, তাকে আপনি কিছু বলছেন না। যে নিয়ম মেনে রান আউট করছে, তাকে কাঠগড়ায় তুলছেন!
ধরুন, কোনো ব্যাটসম্যান রান নিতে গিয়ে পিছলে পড়ে গেলেন বা হঠাৎ পায়ে টান লাগায় আটকে গেলেন বা ইনজুরড হলেন, তখন রান আউট না করলে সেটিকে ‘স্পিরিট’ বলা যায়। কিন্তু অবৈধ সুবিধা নেওয়া একজনকে আউট করাটা স্পিরিট ভঙ্গ নয়।
হাসান মাহমুদ যা করেছেন, সেটাই সঠিক। দুর্ভাগ্যজনক যে, এটা আলাদা করে বলতে হচ্ছে। আশা করি, তাকে দল থেকে বলা হবে যে তিনি ঠিক ছিলেন, তিনি ঠিক ছিলেন , তিনি ঠিক ছিলেন। ব্যাটসম্যানদের অবৈধ সুবিধা নেওয়া থেকে বিরত রাখতে বোলারদের এরকমই সচেতন ও স্মার্ট থাকা উচিত। সব ক্রিকেটারের এটাই করা উচিত, উঠতি ক্রিকেটারদের এটাই অনুসরণ করা উচিত।
– ফেসবুক থেকে