এক্স ফ্যাক্টর শেখ মেহেদী

মাস তিন চারেক আগেও বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় তেমন একটা ছিলেন না শেখ মেহেদী হাসান। তবে ইমার্জিং এশিয়া কাপ থেকে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের কল্যাণে তিনি পেয়ে গিয়েছেন বিশ্বকাপের টিকিট। মূলত এশিয়া কাপ আর নিউজিল্যান্ড সিরিজে সন্তোষজনক পারফর্ম করায় স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন এই অফ স্পিনার।

বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকলেও একাদশে শেখ মেহেদী থাকবেন কি না সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। যদি থাকেন তবে তাঁর দায়িত্ব হবে বোলিংয়ের পাশাপাশি আট নম্বরে ব্যাটিং করা। আদতে বোলার হলেও টুকটাক ব্যাটিং জানায় তাঁকে বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে খেলানোর ইচ্ছে রয়েছে টিম ম্যানেজম্যান্টের।

ওয়ানডেতে অবশ্য এখনো নিয়মিত মুখ হয়ে উঠতে পারেননি এই স্পিনার। এখন পর্যন্ত মাত্র আটটি ম্যাচ খেলেছেন, সমান সংখ্যক উইকেটও পেয়েছেন। তাঁর সবচেয়ে প্রশংসনীয় দিক ইকোনমি; ওভার প্রতি সাড়ে চারেরও কম রান খরচ করেছেন তিনি, এমনকি বিদেশের মাটিতেও ইকোনমি এমন।

খেলার ধরন অনুযায়ী শেখ মেহেদী অনেকটাই মেহেদি মিরাজের মত। তবে বোলিংয়ের দিক দিয়ে মিরাজের চেয়ে এগিয়ে রাখা হয় তাঁকে; বিশেষ করে ফ্ল্যাট পিচে মেহেদীর বোলিং তুলনামূলক বেশি কার্যকর হবে।

দুজনের বোলিংয়ের ধরন খেয়াল করলেই বোঝা যাবে ব্যাপারটা। মেহেদি মিরাজ ডেলিভারি করেন খানিকটা ঝুলিয়ে, তাঁর বলে ফ্লাইট থাকে একটু বেশি। ফলে টার্নিং পিচ হলে বলে স্পিন বেশি হয়, ব্যাটারদেরও খেলতে সমস্যা হয়। কিন্তু ফ্ল্যাট বা স্পোর্টিং পিচ হলে এই অলরাউন্ডারের বলগুলো সাধারণত নির্বিষ হয়ে যায়।

অন্যদিকে, শেখ মেহেদী বোলিং করেন পেসারদের ঢংয়ে। পিচের ওপর বলকে হিট করানো তাঁর বোলিংয়ের বৈশিষ্ট্য, ফলে টার্ন একটু কম হলেও বল স্কিড করে বেশি। সেজন্য স্পোর্টিং পিচে এই ডান-হাতি সুবিধা আদায় করে নিতে পারেন। আবার একই কারণে পাওয়ার প্লে আর ডেথ ওভারেও ব্যবহার করা যায় তাঁকে।

অবশ্য ব্যাটিংয়ে মেহেদি হাসান মিরাজের চেয়ে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে আছেন খুলনার এই ক্রিকেটার। টেকনিক আর টেম্পারমেন্ট দুই দিক দিয়েই তাঁর উন্নতির জায়গা অনেক। তাই মিরাজ সাত বা আট নম্বরে খেললে একসাথে দুই অফ স্পিনারকে একাদশে দেখার সম্ভাবনা অনেক কম।

কিন্তু যদি মেহেদি মিরাজকে ব্যাটিং অর্ডারের ওপরের দিকে খেলানো হয় তাহলে নি:সন্দেহে লোয়ার মিডল অর্ডারে সেরা অপশন শেখ মেহেদী। কিপ্টে বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও অবদান রাখার সামর্থ্য রয়েছে তাঁর; সেক্ষেত্রে এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে তাঁর অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস অনুপ্রেরণা হতে পারে।

সব মিলিয়ে শেখ মেহেদী বাংলাদেশ দলের জন্য ‘স্কোয়াড ম্যান’। একজন বাড়তি বোলার খেলাতে চাইলে কিংবা মেহেদী মিরাজকে ওপরে পাঠালে শূণ্যস্থান পূরণ করা যাবে তাঁকে দিয়ে। আর নিজের সেরাটা দিতে পারলে এবারের আসরে টাইগারদের এক্স ফ্যাক্টরও হতে পারে তাঁর কার্যকরী অফ স্পিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link