মিরাজকে ঘিরেই ব্যাটিং পরিকল্পনা

৭ অক্টোবর শুরু হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। ভাল কিছু করবার প্রত্যয় নিয়েই বাংলাদেশ নামবে। এই ভাল কিছু করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সবচেয়ে কার্য্যকর ক্রিকেটার হতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি ‘ভার্সেটাইল’ তিনি যেন রীতিমত এক তরল। যে পাত্রে অবস্থান, সেই পাত্রের আকার ধারণ।

মেহেদী হাসান মিরাজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরু একজন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে। তবে সময় যত গড়িয়েছে, তত তিনি নিজেকে একজন ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবেই গড়ে তুলতে হয়েছেন মড়িয়া। তিনি সেই প্রমাণের রাস্তায় নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন বহুবার।

তবে বিশ্বকাপে তিনি হাজির হয়েছেন একজন ‘ইউটিলিটি ক্রিকেটার’ হিসেবেই। যে কোন ব্যাটিং পজিশনে তিনি খাপ খাইয়ে নিতে একেবারে প্রস্তুত। ওপেনিং থেকে মিডেল অর্ডার সবখানেই নিজের ছাপ ফেলে রাখার চেষ্টায় মত্ত মিরাজ। দল চাইলেই তাকে যেকোন পরিকল্পনায় ব্যবহার করতে পারবে। এমন ‘ফ্লেক্সিবিলিটি’ তিনি ইতোমধ্যেই প্রকাশ করেছেন।

এশিয়া কাপের মঞ্চে দলের কৌশলগত কারণে তাকে ‘মেকশিফট ওপেনার’ হিসেবেই দেখা যায়। ওপেনিংয়ে শতক হাকিয়ে বসলেন তিনি। কৌশলগত পরিবর্তনটায় বাংলাদেশ সফল শতভাগ। মূলত তাকে সাত নম্বরের জন্যেই ভাবা হচ্ছিল। তবে তিনি এখন আর স্রেফ সাত নম্বরের ভাবনাতে নেই।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এখন অবধি তিন কিংবা চার নম্বরে খেলার খুব বেশি অভিজ্ঞতা নেই মিরাজের। তবে শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ার্মআপ ম্যাচে যথাক্রমে তিন ও চার নম্বরে ব্যাটিং করেছেন তিনি। আর দু’ক্ষেত্রেই হয়েছেন সফল। তাতে করে ব্যাটিং অর্ডারের এক থেকে নয় – সব পজিশনে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে তাঁর।

বিশ্বকাপের আগের ওয়ার্মআপ ম্যাচগুলোতে সাফল্যও পেয়েছেন তিনি। দু’টো ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাট থেকে। অথচ ক্যারিয়ারের লম্বা সময় ধরে তিনি ব্যাটিং করেছেন ৮ নম্বরে। কিছুকিছু সময় ৭ নম্বরে ব্যাট করেছেন তিনি। যার অধিকাংশই সাম্প্রতিক সময়ে।

প্রায় প্রতিটা পজিশনেই ব্যাট থেকে রান এসেছে তার। সেই বয়সভিত্তিক সময় থেকেই মেহেদী হাসান মিরাজ নিজের মস্তিষ্কের প্রমাণ রেখে আসছেন। বাংলাদেশের পরবর্তী অধিনায়কদের একজন হিসেবেও তাকে বিবেচনায় করা হয়।পেছনের কারণ স্রেফ একটিই, ম্যাচের পরিস্থিতি পড়তে এবং সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন তিনি।

তিনি ঠিকঠাক পরিস্থিতির চাহিদা আন্দাজ করতে পারেন। সেই মোতাবেক নিজের ব্যাটটাও চালাতে জানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ঠিক সে কারণেই তিনি হয়ে উঠতে পারেন বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলের প্রাণভোমড়া। তিনি যেকোন পরিকল্পনার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন। ঠিক তরকারিতে আলুর মত। খানিক নেতিবাচক ঠেকলেও আলু কিন্তু ভারসাম্যই বজায় রাখে।

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তার বোলিংটাও কার্য্যকর। স্ট্রাইক বোলার ছাড়াও ভিন্নতা আনতে তাকে ব্যবহার করা যাবে অনায়াসে। ঠিক এসব কারণেই মিরাজ বর্তমান দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। অন্তত এই বিশ্বকাপে তাকে একাদশের বাইরে রাখতে চাইবে না টিম ম্যানেজমেন্ট।

কেননা ম্যানেজমেন্টকে বাড়তি ভরসা জুগিয়ে যাচ্ছেন মিরাজ। তাছাড়া ফিটনেসের দিক থেকেও দলের সেরাদের কাতারেই রয়েছেন মিরাজ। তার ইনজুরি প্রবণতাও প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। এখন শুধু প্রত্যাশা সবকিছু ঠিকঠাক থাকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link