বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল আয়ারল্যান্ডের দখলে, ২০১১ সালে ইংল্যান্ডের ছুড়ে ৩৩০ রানের টার্গেট টপকে গিয়েছিল আইরিশরা। তাই তো এবারের বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কা যখন ৩৪৫ রানের পাহাড়সম পুঁজি পায়, জিততে হলে পাকিস্তানকে তখন নতুন ইতিহাস লিখতে হতো – আর সেই কাজটা মোহাম্মদ রিজওয়ান এবং আবদুল্লাহ শফিকের ব্যাটে ছড়ে করে ফেলে তাঁরা।
তবে এই দারুণ কীর্তি গড়ার দিনে আরেকটা অপ্রত্যাশিত রেকর্ডও লেখা হয়েছে বাবর আজমদের নামের পাশে। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় যজ্ঞে এতদিন পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল ভারতের ৩৩৬ রান, কিন্তু শ্রীলঙ্কা সেই মাইলফলক ভেঙে ৩৪৫ রান স্কোরবোর্ডে জমা করেছে। শাহীন শাহ, হারিস রউফদের মত বিশ্ব মানের বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে এই রানের পাহাড় গড়েছেন কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমারা।
ম্যাচের শুরুতেই কুশল পেরেরা আউট হওয়ায় মাঠে নামতে হয় মেন্ডিসকে, এত দ্রুত ড্রেসিরুম ছেড়ে আসা বোধহয় পছন্দ হয়নি তাঁর। তাই তো এদিন পাক বোলারদের ওপর রীতিমতো তান্ডব চালিয়েছেন তিনি, মাত্র ৬৫ বলে পূর্ণ করেছেন শতক – যা কি না দলটির বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্রুততম সেঞ্চুরি বনে গিয়েছে। শেষপর্যন্ত আউট হওয়ার ১২২ রান করেছেন এই তারকা।
মেন্ডিস ফিরে যাওয়ার পর শ্রীলঙ্কাকে টেনে নিয়ে গিয়েছেন তরুণ সামারাবিক্রমা। অতটা আগ্রাসী হননি ঠিকই, কিন্তু ছাড় দেননি কাউকেই। ৮৯ বলে ১০৮ রানের দুর্দান্ত একটা ইনিংস এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে।
সবমিলিয়ে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে ৩৪৫ রানে জমা করে শ্রীলঙ্কা, এর আগে ২০১৯ সালে ম্যানচেস্টারে পাকিস্তানের বিপক্ষে রানের পাহাড় গড়েছিল ভারত। রোহিত শর্মারা সেদিন ৩৩৬ রান তুলেছিল, যা এতদিন পর্যন্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল।
এমন পারফরম্যান্সের পিছনে অবশ্য পাকিস্তানি ফিল্ডারদের অবদানও নেহাত কম নয়। কুশল মেন্ডিসকেই দুইবার জীবন দিয়েছে তাঁরা – প্রথমবার পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে থাকা শাহীন শাহ মেন্ডিসের ক্যাচ লুফে নিতে ভুল করেন। পরেরবার শাহীনের বলেই ইমাম উল হক এই ব্যাটারের সহজ ক্যাচ হাত ছাড়া করেন। ভাগ্যিস, পাকিস্তান শেষমেশ জিততে পেরেছে; নাহলে সমর্থকদের কাঠগড়ায় অনেকদিন থাকতে হতো ইমামকে।