অবহেলা, বঞ্চনা আর বিশ্রাম নামক নাটকের অবসান ঘটিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ঠিকই ফিরেছেন। না, নিজের ‘সিনিয়র’ পরিচয়ের জোরে নয়; পারফরম্যান্স দিয়েই লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়ে বিশ্বকাপে খেলছেন তিনি। শুধু খেলছেন বললে ভুল হবে, দলের সেরা ক্রিকেটারও এখন এই ব্যাটার। তাঁর ব্যাট থেকেই এসেছে এবারের আসরে দেশের প্রথম সেঞ্চুরি।
কিন্তু ফর্মে ফিরলেও বাস্তবতা ভুলে যাননি মাহমুদউল্লাহ, তাই তো ইঙ্গিত দিয়েছেন অবসরের। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) একটি ভিডিওতে জানিয়েছেন শীঘ্রই হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন।
নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমি আমার শেষ বিশ্বকাপ খেলছি। আমি বাংলাদেশ দলের পক্ষে আর কতদিন খেলব তা নির্ভর করছে আমার পারফরম্যান্স ও শারীরিক ফিটনেসের ওপর। হয়তো কয়েকদিন পরে বা দ্রুতই আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাব।’
এই ডানহাতির কথায় স্পষ্ট, বিশ্বকাপ শেষে সম্ভবত খুব বেশি দীর্ঘ হবে না রিয়াদ অধ্যায়। টেস্ট ক্রিকেটকে যেমন হুট করেই ‘গুড বাই’ বলে দিয়েছিলেন তেমনি করে লাল-সবুজ জার্সিও তুলে রাখবেন একদিন। বয়সটা ৩৭, চাইলেও অবশ্য আরো কয়েক বছর খেলতে পারবেন না তিনি; সেজন্য ফর্মে থেকেই সরে দাঁড়ানোর চেষ্টা তাঁর।
২০০৭ সালে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর। শুরুতে বোলার ছিলেন, এরপর সময়ের সাথে হয়ে উঠেছেন নির্ভরযোগ্য ব্যাটার। ক্যারিয়ার জুড়ে টপ, মিডল এমনকি লোয়ার মিডল অর্ডারেও খেলেছেন তিনি। দলের বিপর্যয়ে এগিয়ে এসেছেন অনেক সময়ই, হয়ে উঠেছেন টাইগার স্কোয়াডের ‘সাইলেন্ট কিলার’।
আইসিসি ইভেন্টের সাথে বরাবরই সুসম্পর্ক আছে এই ডানহাতির। ওয়ানডেতে তাঁর সেঞ্চুরি আছে চারটি; আর এর তিনটিই এসেছে বিশ্বকাপে, বাকি একটা করেছেন ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে।
এসব নিয়ে রিয়াদ বলেন, ‘দেশের হয়ে অনেকদিন ধরেই খেলছি আমি। ২০০৭ সালে আমার অভিষেক হয় বাংলাদেশের জার্সিতে। এরপর অনেক সময় হয়ে গেলো আমি খেলে যাচ্ছি, আইসিসি ইভেন্টে চারটি সেঞ্চুরি করতে পারায় আসলে আমি নিজেকে ভাগ্যবানই মনে করি।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যত নিয়েও নিজের প্রত্যাশার কথা প্রকাশ করেছেন এই তারকা। তাসকিন, শান্তরা আগামী দিনে আরো বড় তারকা হবে; দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিবে বহুদূর এমনটাই আশা তাঁর।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অবশ্যই এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের ড্রেসিংরুমে যে প্রতিভা আছে – মুস্তাফিজ, তাসকিন, শান্ত, লিটন, মিরাজ; এরপর তাঁরাই ধীরে ধীরে সিনিয়র ক্রিকেটার হবে। তাঁরাই এরপর দলের দায়িত্ব নেবে। বাংলাদেশের কিংবদন্তি একদিন তারা হবে।’