আগুন ঝরার দিন

এই দিন, এমন একটা দিন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটা স্বপ্নই ছিল। আগের দিনেই সংবাদ সম্মেলনে ১৭ টা মিনিট কাটিয়েছেন পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড। বাংলাদেশের পেসারদের নিয়ে শুনিয়ে গেছেন আশার কথা।

এই দিন, এমন একটা দিন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটা স্বপ্নই ছিল। আগের দিনেই সংবাদ সম্মেলনে ১৭ টা মিনিট কাটিয়েছেন পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড। বাংলাদেশের পেসারদের নিয়ে শুনিয়ে গেছেন আশার কথা।

কে জানত, তিনি যে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন – সেই আশা এত দ্রুতই আগুন হয়ে ঝরবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।

প্রশ্ন হল, কতটা ভাল করেছে পেসাররা? – এতটাই ভাল যে, খোদ সাকিব আল হাসানের বল হাতে নেওয়ার প্রয়োজনও পড়েনি। সিলেটে তৃতীয় ওয়ানডেতে মোটে ২৮.১ ওভারে অল আউট হয় সফরকারী আয়ারল্যান্ড দল। সেখানে বাংলাদেশি স্পিনারদের দিয়ে তামিম ইকবাল করিয়েছেন মাত্র চারটা ওভার।

নাসুম আহমেদ তিন ওভার করেন আর মেহেদী  হাসান মিরাজ করেন এক ওভার। এর বাদে ২৪.১ ওভারের পুরোটাই করেছেন পেসাররা। আর এরই সুবাদে ঘটল বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রায় অবাস্তব এক ঘটনা। প্রথমবারের মত প্রতিপক্ষের ইনিংসের  সবগুলো উইকেটই নিয়েছেন ফাস্ট বোলাররা। শুধু ওয়ানডে নয়, এই পরিসংখ্যান সব রকমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মিলিয়ে বলা।

দেশের মাটিতে এই রকম দুই-আড়াই ঘণ্টা সত্যিই অভাবনীয় আর অবিশ্বাস্য এক ব্যাপার। এর আগেও চারবার করে প্রতিপক্ষের ইনিংসের নয় উইকেট নিয়েছেন পেসাররা। চারটা নজীরই অবশ্য টেস্টে।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পেসারদের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছিল সংগ্রহ ছিল ৮ উইকেট, ১২ বার। এবার মুছে গেল অতীতের সকল পরিসংখ্যান। সোনালি আগুন ঝরা দিনের গান গাইল বাংলাদেশের নব্য গতি তারকারা।

সবচেয়ে বেশি ঝড় তুলেছেন হাসান মাহমুদ। যিনি আসলে ওয়ানডে দলে মোটেও নিয়মিত কোনো সদস্য নন। গেল ইংল্যান্ড সিরিজেও তিনি একটি ওয়ানডে ম্যাচও পাননি। সেই হাসান ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মত পাঁচ উইকেট পেয়ে গেলেন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেই।

সবচেয়ে বেশি আলোটা হাসান মাহমুদ কেড়ে নিলেও খুব বেশি পিছিয়ে ছিলেন না বাকি দুই পেসার – তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেনও। তাসকিন তিনবার ও এবাদত দুবার আঘাত হানেন প্রতিপক্ষের বুকে। আর তাতে বোর্ডে ১০১ বেশির রান জমা করতে পারেনি আইরিশরা।

ক্যারিবিয়ান সেই পেস চতুষ্টয়, কিংবা পাকিস্তানের পেস স্বর্ণযুগ, অথবা অস্ট্রেলিয়ার সেই লিলি-থম্পসন জুটি – এর আগে এতশত কিংবদন্তিতুল্য পেস আক্রমণের সামনে প্রতিপক্ষের অসহায় আত্মসমর্পনের অসংখ্য নজীর আছে। বলা চলে, তারই একটা সংস্করণের মঞ্চায়ন হল সিলেটে। এবার এখান থেকে কেবলই বাংলাদেশের পেসারদের এগিয়ে যাবার পালার। নবজাগরণের এই পেস বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...