Social Media

Light
Dark

দু’জনার দু’টি পথ দু’টি দিকে গেছে বেঁকে

সাধারণত ঘরোয়া পর্যায়ে খেলা কোন ক্রিকেটারের চূড়ান্ত লক্ষ্য থাকে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামা। খেলোয়াড়ি জীবনের এ ধাপটি প্রায়শই অত্যন্ত কঠিন বলে প্রমাণিত। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার সুযোগ তৈরি করে নেয়াটা যত না কঠিন তার চেয়ে বেশি কঠিন সেখানে নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করে টিকে থাকাটা।

সেজন্য ঘরোয়া লিগগুলোতে স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে পারফর্ম করেও জাতীয় দলে গিয়ে খেই হারানো ক্রিকেটারের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। এমন বেশ কয়েকজন জুটির দেখা মিলেছে ভারতীয় ক্রিকেটেও। তারা জাতীয় দলের হয়ে একই ম্যাচ বা সিরিজে অভিষেক ঘটলেও সময়ের সাথে তাদের ক্যারিয়ারের গতিবিধি হয়েছে বিপরীতমুখী।

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি ও যোগিন্দর শর্মা

২০০৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একইসাথে অভিষেক ঘটে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও যোগিন্দর শর্মার। তবে তাদের ক্যারিয়ার কখনও এক রকম ছিল না। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্ব আসরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচের চূড়ান্ত ওভারে বল করার পরেও দলে নিজের জায়গাটি স্থায়ী করতে পারেননি যোগিন্দর। তিনি মাত্র চারটি ওয়ানডে ও চারটি টি-টোয়েন্টিতে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর হরিয়ানা পুলিশে চাকরি দেয়া হয় তাকে। বর্তমানে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে সেখানে দায়িত্বরত আছেন তিনি।

অন্যদিকে মহেন্দ্র সিং ধোনি হলেন ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। তাঁর নেতৃত্বে দু’টি বিশ্বকাপ ও একটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতে ভারত। তর্কসাপেক্ষে এ প্রজন্মের সেরা ওয়ানডে খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

  • গৌতম গম্ভীর ও আভিষ্কার সালভি

২০০৩ সালের ১১ এপ্রিল ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ ও ভারত। সে ম্যাচে ইনিংস গোড়াপত্তনে বীরেন্দর শেবাগের নতুন সঙ্গী হিসেবে আবির্ভূত হোন গৌতম গম্ভীর যেখানে জহির খানের নতুন সঙ্গী হিসেবে হাতে বল তুলে নেন আভিষ্কার সালভি।

যদিও গম্ভীর এবং সালভির মধ্যকার মিলের সমাপ্তি এখানেই ঘটেছিল। আবিষ্কার সালভি ভারতের হয়ে মাত্র চারটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন।

অন্যদিকে গৌতম গম্ভীর ভারতের হয়ে দু’টি বিশ্বকাপ জয়ে মূল ভূমিকা পালন করেন। ২০০৯ সালে টেস্ট ব্যাটসম্যানদের তালিকার শীর্ষে ওঠে যান তিনি। তাঁর নেতৃত্বে ২০১২ ও ২০১৪ সালে দু’টি আইপিএল শিরোপা জিতে কলকাতা নাইট রাইডার্স।

  • শচীন টেন্ডুলকার ও সলিল আঙ্কোলা

আরও দু’টি বিপরীতমুখী ক্রিকেট ক্যারিয়ারের কথা বলতে গেলে সামনে চলে আসে দু’টি নাম- শচীন টেন্ডুলকার ও সলিল আঙ্কোলা।

তর্কসাপেক্ষে ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার। ১৯৮৯ সালের ১৮ই ডিসেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে গুজরানওয়ালে অভিষেক ঘটে তাঁর। একই ম্যাচে ভারতের হয়ে প্রথমবারের মত খেলতে নামেন পেসার সলিল আঙ্কোলা।

তবে ক্রিকেটজীবনে খুব বেশিদূর এগোতে পারেননি সলিল। মাত্র ২০ টি ওয়ানডে ও একটি টেস্ট খেলে থেমে যায় তাঁর ক্যারিয়ারের চাকা।

  • সুরেশ রায়না ও বেনুগোপাল রাও

২০০৫ সালের ৩০ জুলাই। একই দিনে দুই প্রতিভাবান তরুণ ব্যাটসম্যান সুরেশ রায়না ও বেনুগোপাল রাওকে ওয়ানডে অভিষেকের সুযোগ দেয় ভারত। ডাম্বুলায় ম্যাচটা ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।

সেই ম্যাচে দুই বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন রায়না। অন্যদিকে বেনুগোপাল ৩৮ রানের একটা প্রয়োজনীয় ইনিংস খেরেন দলের জন্য। যদিও, এরপর মাত্র ১৫ টি ওয়ানডে খেলার সুযোগ পান ভারতের হয়ে। অথচ, ওই সময় বিশাখাপত্তনমের এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যানকে সৌরভ গাঙ্গুলির যোগ্য উত্তরসুরী মনে করা হত।

অভিষেক ম্যাচে শূণ্য রান করলেও সব মিলিয়ে পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আট হাজারের ওপর রান করেন রায়না। উত্তর প্রদেশের এই ব্যাটসম্যান ২০১১ সালে ভারতের হয়ে বিশ্বকাপও জয় করেন।

  • রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও পঙ্কজ সিং

পাঁচ জুন, ২০১০। ভারতের বিপক্ষে হারারে স্পোর্টস ক্লাবে ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচে মাঠে নামে শ্রীলঙ্কা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) থেকে আসা দুই প্রতিভাকে সেদিন অভিষেকের সুযোগ দেয় ভারত। তারা হল পঙ্কজ সিং ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

এর মধ্যে অশ্বিন পরবর্তীতে বিশ্বেরই অন্যতম সেরা স্পিনারদের একজন হিসেবে বিবেচিত হন। সাড়ে পাঁচশ’রও বেশি উইকেট পান তিনি। অন্যদিকে ডান হাতি পেসার পঙ্কজের সেটাই প্রথম ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচ। পরে ২০১৪ সালে ভারতের ইংল্যান্ড সফরে ফিরে দু’টি টেস্ট খেলেছিলেন। সেখানে পান মাত্র দুই উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link