নতুন নির্বাচক, নতুন অধিনায়ক?

বৈশ্বিক আসরে এসে শেষ বেশ ক’বছর ধরেই বারংবার ব্যর্থ হচ্ছে টিম ইন্ডিয়া। প্রায় এক দশক ধরে আইসিসির শিরোপা খরায় ভুগছে দলটি। সম্প্রতি শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তিক্ত এক স্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরেছে রোহিত শর্মার দল। আর ইংল্যান্ডের কাছে এই ভরাডুবির পরেই এবার বেশ নড়েচড়ে বসেছে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)।

বৈশ্বিক আসরে এসে শেষ বেশ ক’বছর ধরেই বারংবার ব্যর্থ হচ্ছে টিম ইন্ডিয়া। প্রায় এক দশক ধরে আইসিসির শিরোপা খরায় ভুগছে দলটি। সম্প্রতি শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তিক্ত এক স্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরেছে রোহিত শর্মার দল। আর ইংল্যান্ডের কাছে এই ভরাডুবির পরেই এবার বেশ নড়েচড়ে বসেছে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)।  বড় আসরে টানা হতাশার পর নির্বাচক কমিটি ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁরা। 

সেই পরিপ্রেক্ষিতে, আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে শুক্রবার ৫ সদস্যের নির্বাচক কমিটির জন্য নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিসিসিআই। আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত এ পদের জন্য আবেদন করা যাবে। অর্থাৎ এতদিনে থাকা নির্বাচক কমিটির চার সদস্য চেতন শর্মা, সুনিল জোশি, হারভিন্দর সিং ও দেবাশিস মোহান্তির নির্বাচক হিসেবে যাত্রা পথের সমাপ্তি এখানেই ঘটছে।

বিসিসিআইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগ্রহী প্রার্থীদের ৭টি টেস্ট অথবা ৩০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ অথবা ১০টি ওয়ানডে ও ২০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কমপক্ষে ৫ বছর আগে অবসর নিয়েছেন এবং বোর্ডের কোনো ক্রিকেট কমিটিতে ৫ বছর কাজ করেননি- এমন ব্যক্তিরাই শুধু আবেদন করতে পারবেন। 

তবে, আরেক সুত্রের খবর, ভারতীয় ক্রিকেটে এমন ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়ায় ভিন্ন ফরম্যাটে ভিন্ন অধিনায়কেরও পরিকল্পনা রয়েছে বিসিসিআইয়ের। একাধিক সূত্র বলছে, আগামী ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য রোহিত শর্মার স্থলে নতুন কাউকে অধিনায়কত্ব দেওয়ার পথে হাঁটছে বিসিসিআই। 

যাতে আগামী ২ বছর পর সীমিত ওভারের বিশ্বকাপ নিয়ে ভারত এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে পারে। এ ছাড়া বাকি দুই ফরম্যাটে যথারীতি রোহিত শর্মাই অধিনায়ক থাকবেন। তবে নতুন নির্বাচক কমিটির সাথে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের কাপ্তানিতে ভারতের একটা রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা এখন পর্যন্ত বেশ প্রবল।

২০২০ সালে ভারতের জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্ব দেওয়া হয় চেতন শর্মা, সুনিল জোশি, হারভিন্দর সিং, দেবাশিস ও আভে কুরুভিল্লাকে। এর পরের বছর শেষ দিকে নির্বাচক হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের মেয়াদ পূরণ হয়ে যায় কুরুভিল্লার। ফলে দায়িত্ব ছাড়তে হয় তাকে। এরপর থেকে চেতনের নির্বাচক কমিটি ছিল চার সদস্যের। এ চারজনের মধ্যে দেবাশিস মোহান্তিই কেবল তাঁর মেয়াদকাল পূরণের কাছাকাছি রয়েছেন। তাছাড়া বাকি তিনজনকেই আসন ছেড়ে দিতে হচ্ছে মেয়াদকাল পূরণ হওয়ার আগেই। 

অবশ্য চেতন শর্মা নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের নির্বাচক কমিটি শুরু থেকেই ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে ছিল। একই সাথে তাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে অনেক। তাদের সময়কালে একটিও শিরোপা জেতেনি ভারত। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল হারের পরে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভেই আটকে গিয়েছিল ভারত। এরপর এশিয়া কাপে এসেও সেই ব্যর্থতার ধারা অব্যাহত থাকে। আর সবশেষ ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবি তো আছেই। সব মিলিয়ে এতসব ব্যর্থতার কারণে নির্বাচক কমিটি থেকে চেতন শর্মাদের অব্যাহতি দেওয়া সময়ের ব্যাপারই ছিল মাত্র। 

তাছাড়া, গুঞ্জন আছে, এই নির্বাচক কমিটির সাথে নাকি কোচ রাহুল দ্রাবিড় এবং ক্রিকেটাররা নাকি তেমন একটা স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল না। গত বছর বিরাট কোহলির ওয়ানডে ক্যাপ্টেন্সি যাওয়ার পেছনেও এই নির্বাচক কমিটির একটা হাত আছে বলে ধারণা করা হয়। তাই সব মিলিয়ে চেতন শর্মাদের অধ্যায়টা শেষ হওয়ার পথেই ছিল। 

এখন দেখার পালা, ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়ায় নতুন নির্বাচক কমিটি ভারতের এই দলটাকে কতটা রসদ জোগাতে পারে। একই সাথে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকছে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতের নেতৃত্বের পালাবদলের দিকেও। তবে সব কিছুর জন্য আপাতত আরও কিছু সময়ের অপেক্ষা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...