হারিয়ে যাওয়ার মিছিল চিড়ে

শুধু বল হাতে নয়; ব্যাট হাতেও নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছেন এই বাহাতি পেসার। তাইতো অনুশীলনের সময় বেশ খোশ মেজাজেই ছিলেন তিনি। উদ্দেশ্য একটাই আসন্ন এনসিএলের জন্য নিজেকে পুরোপুরিরূপে প্রস্তুত করা।

বিশ্বব্যাপী ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে বা-হাতি পেসারদের প্রাধান্য সবসময়ই ছিল। বাংলাদেশ ক্রিকেটেও তার ব্যতিক্রম নয়। বহু বা-হাতি পেসার বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাথে যুক্ত হয়েছেন। কেউ সম্ভাবনার সবটুকু উজাড় করে দিয়েছেন। আবার কেউ হারিয়ে যাওয়ার মিছিলে যোগ দিয়েছেন। তেমনই এক উদাহরণ আবু হায়দার রনি।

মিরপুর অ্যাকেডেমি মাঠে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন এক সময়ে জাতীয় দলের প্ল্যানে থাকা পেসার আবু হায়দার রনি। কখনো আউট সুইং বল করে ব্যাটারকে পরাস্ত করেছেন তো আবার কখনো ইনসুইং বল করে ব্যাটারের প্যাডে বল লাগিয়ে নাস্তানাবুদ করেছেন। আজ যেনো এক অন্যরকম আবু হায়দার রনিকেই দেখা গেলো মাঠে। ডান হাতি এবং বাঁহাতি, উভয় প্রকার ব্যাটারের বিপক্ষেই আজ বল হাতে দারুণ ছন্দে ছিলেন রনি। অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া জাতীয় ক্রিকেট লিগকে সামনে রেখেই আজ এমন কঠোর অনুশীলনে মেতে ছিলেন রনি।

শুধু বল হাতে নয়; ব্যাট হাতেও নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছেন এই বাহাতি পেসার। তাইতো অনুশীলনের সময় বেশ খোশ মেজাজেই ছিলেন তিনি। উদ্দেশ্য একটাই আসন্ন এনসিএলের জন্য নিজেকে পুরোপুরি রূপে প্রস্তুত করা। একটা সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এক পেস বোলিং তারা হিসেবে বিবেচনা করা হতো তাঁকে। দীর্ঘদিন ছিলেন জাতীয় দলের জন্য করা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায়। সেই সুবাদে জড়িয়েছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিও। তবে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে দেশের জার্সি গায়ে তেমনভাবে মেলে ধরতে পারেননি রনি।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন রনি। সেবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের শিরোপা জয়ের পেছনে এক অন্যতম ভূমিকা ছিলো তাঁর। সেই বিপিএলে কুমিল্লার হয়ে মোট ২১টি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। সেই সুবাদেই বিপিএল পরবর্তী সিরিজেই তাঁর জন্য খুলে যায় বাংলাদেশ দলের দরজা। ২০১৬ সালে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে রনির। নিজের অভিষেক ম্যাচে চার ওভারে ৪০ রান দিয়ে দুই উইকেট লাভ করেছিলেন রনি।

একই বছর , দেশের মাটিতে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ পান রনি। সেই ম্যাচে মূলত এক ওভার বোলিং করে মোট ১৪ রান দিয়েছিলেন তিনি। এরপর, জাতীয় দলের জার্সি গায়ে বহুদিন মাঠে নামা হয়নি তাঁর। ২০১৮ সালে এশিয়া কাপে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় রনির। সেই ম্যাচে ৯ ওভারে ৫০ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন তিনি। এরপরে, ঘরোয়া ক্রিকেটে ফর্মের সুবাদে দলের একাদশে নিয়মিত সুযোগ না পেলেও দলের অংশ হয়ে স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন ব্যাক আপ পেসার হিসেবে।

তবে, ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টি টোয়েন্টি ম্যাচে দুই ওভার বল করে মোট ৩৯ রান খরচ করেন রনি। এরপর, আর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নামা হয়নি তাঁর। নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে ওয়ানডে অপেক্ষা টি টোয়েন্টি ক্রিকেট বেশি খেলেছেন রনি। আন্তর্জাতক টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে মোট ১৩ ম্যাচ খেলে ৯.১৭ ইকোনোমিতে বল করে তিনি মোট উইকেট নিয়েছেন ৬টি। যেখানে, আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে ২ ম্যাচে ৪.৯৪ ইকোনোমিতে মোট তিন উইকেট নিয়েছেন রনি।

বয়সটা বেশি নয় তাঁর, মাত্র ২৬। সেই হিসেবে এখনো একজন পেস বোলার হিসেবে দারুণ উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে তাঁর। রনি আবার ফিরবেন নাকি টিম ম্যানেজমেন্টের খামখেয়ালি পরিকল্পনায় হারিয়ে যাবেন তা সময়ই বলে দিবে। কিন্তু, তাই বলে নিজেকে শাণিত করার কোনো সুযোগই হাতছাড়া করছেন না রনি, যার উদাহরণ দেখা গেলো মিরপুর মাঠে তার ঘাম ঝড়ানো অনুশীলনে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...