বিশ্বকাপে আফগানিস্তান এবার যেন ভিন্ন কোন রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে। ইংল্যান্ড, পাকিস্তানের মত হট ফেভারিট দলকে হারানোর পর এবার শ্রীলঙ্কাকেও উড়িয়ে দিল তাঁরা।
দুর্দান্ত বোলিংয়ের দিনে সময়োপযোগী ব্যাটিং করার বদৌলতে সাত উইকেটের বড় জয় পেয়েছে হাসমতউল্লাহ শহীদির দল। ছয় ম্যাচ খেলে তিনটি জয় পাওয়া আফগানদের হাতে এখনও আছে তিনটি ম্যাচ। ফলে, সেমির স্বপ্ন দেখতেই পারে তাঁরা।
ধারাবাহিক ব্যর্থ কুশল পেরেরার জায়গায় এদিন দিমুথ করুণারত্নেকে আনলেও লাভ হয়নি শ্রীলঙ্কার। বরাবরের মতই শুরুতে উইকেট হারিয়েছে তাঁরা, ১৫ রান করে ফিরেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। তবে দুই ইনফর্ম কুশল মেন্ডিস আর পাথুম নিশাঙ্কা রানের চাকা সচল রাখেন, দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তাঁরা স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৬২ রান।
চার রানের জন্য টানা পঞ্চম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন নিশাঙ্কা; মেন্ডিসও থামেন ৩৯ করে। অন্যদিকে মিডল অর্ডারে সাদিরা সামারাবিক্রমার ব্যাট থেকে আসে ৩৬ রান – এই শেষ, এরপর ব্যাটিং লাইনআপে শুরু হয়েছিল আসা যাওয়ার মিছিল। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, চারিথ আসালঙ্কা সেট হয়েও বড় রান করতে পারেননি।
তাতেই ১৮৫ রানে সাত উইকেট হারিয়ে বসে লঙ্কানরা। সেখান থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস আর মাহিশ থিকসানা। এই দুজনের ৪৫ রানের জুটির কল্যাণে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা; অলআউট হওয়ার আগে ২৪১ রান করতে সক্ষম হয় দলটি।
রান তাড়ায় যাকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল আফগানিস্তানের সেই রহমানউল্লাহ গুরবাজ ফিরেছেন শূণ্য রানে। কিন্তু দলকে পথ হারাতে দেননি ইব্রাহিম জাদরান ও রহমত শাহ। তাঁদের ৭৩ রানের জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আফগানরা। ৩৯ রান করে ইব্রাহিম আউট হলেও অধিনায়ক শহীদির দৃঢ়তায় জয়ের দিকে এগুতে থাকা তাঁরা।
দলীয় ১৩১ রানের মাথায় হাফসেঞ্চুরিয়ান রহমতকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের ব্রেক থ্রু এনে দেন কাসুন রাজিথা। তবে চালকের আসনে বসতে পারেনি দলটি; মূলত আফগান কাপ্তান আর তরুণ আজমতউল্লাহ সেই সুযোগ দেননি তাঁদের। দুজনেই পূর্ণ করেন অর্ধশতক। ততক্ষণে আফগানিস্তান ২০০ রানের গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
ফলে জয় তখনি নিশ্চিত হয়ে যায় তাঁদের; শেষপর্যন্ত ২৮ বল হাতে রেখেই নির্ধারিত টার্গেট টপকে যায়। সবমিলিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখিয়েছে আফগানিস্তান। উইকেটের পতনে ভয় পেয়ে যায়নি, রক্ষণাত্মক খেলেনি; স্বাভাবিক ব্যাটিংটাই করে গিয়েছে আর সেটারই সুফল পেয়েছে হাতে-নাতে।
এই জয়ে হুট করেই সেমিফাইনালের কাছে চলে এসেছে রশিদ- মুজিবরা। সামনের ম্যাচগুলোতে তাঁদের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দু’টো ম্যাচ জিতে গেলেই বিশ্বকাপের শেষ চারের দৌঁড়ে চলে আসবে তাঁরা। তবে, সাথে থাকবে নেট রান রেটের বিষয়ও। তবে, একটা কথা ঠিক যে এই বিশ্বকাপ দিয়ে সত্যিকার ভাবেই উত্থান হল আফগান ক্রিকেটের।