আকাশ দীপের বয়সটা ২৭, কিন্তু চেহারা দেখে আপনার মনে হবে আরো বেশি বয়স্ক। ঠিক তেমনি তাঁর অভিষেক ম্যাচ দেখেও বোঝার কোন উপায় নেই যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি একেবারে নতুন; যেভাবে নিয়ন্ত্রিত লাইন লেন্থে বাজবল সৈনিকদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন এই পেসার, তাতে যেই কারো মনে হবে অনেকটা সময় হয়তো জাতীয় দলে খেলছেন তিনি।
সরফরাজ খান আর ধ্রুব জুরেল রাজকোট টেস্টে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন। একই পথে হেঁটে পরের ম্যাচেই রাহুল দ্রাবিড়ের হাত থেকে ক্যাপ পেলেন আকাশ। তাঁর মা ৩০০ কিলোমিটার দূরত্ব পেরিয়ে স্টেডিয়ামে এসেছিলেন কেবল ছেলের ক্যাপ পাওয়ার দৃশ্য স্বচক্ষে দেখতে। যদিও শিক্ষক বাবা দেখতে পারেননি এমন সাফল্য, কেননা ইহলোকের মায়া ইতোমধ্যে ত্যাগ করেছেন তিনি।
এই ডানহাতি অবশ্য নিজের অভিষেক ম্যাচ উৎসর্গ করেছেন প্রয়াত বাবাকে। তিনি বলেন, ‘একই বছর বাবা আর ভাই মারা যাওয়ার পর আমার হারানোর আর কিছু ছিল না। এরপর আমি কেবল খেলেছি, বাংলা রাজ্য দল আমাকে সাহায্য করেছিল। আমি আমার সাফল্য বাবাকে উৎসর্গ করব, যিনি সবসময় চাইতেন জীবনে কিছু একটা যেন করতে পারি।’
বয়সে তরুণ না হলেও অভিজ্ঞতার দিক থেকে একেবারে তরুণ এই তারকা। সেজন্য জাসপ্রিত বুমরাহ বিশেষভাবে পরামর্শ দিয়েছেন তাঁকে, এবং সেসব কাজে লাগিয়েই ইংলিশ টপ অর্ডার গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে আমরা একটু বেশি ফুলার লেন্থে বল করি। কিন্তু বুমরাহ ভাই বললো এখানে লেন্থ আরেকটু শর্ট রাখতে কারণ ব্যাটাররা বল চেজ করে থাকে।’
ভাগ্য অনেকবারই ছলনা করেছে আকাশের সঙ্গে, এই ম্যাচেও জ্যাক ক্রলিকে বোল্ড করা সত্ত্বেও নো-বলের কারণে উদযাপন করা হয়নি। এটা নিয়ে একটু খারাপ লাগা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমে বেশি হতাশ হইনি, জানতাম অন্য কেউ ঠিকই আউট করবে তাঁকে (ক্রলি)। কিন্তু যখন সিরাজ ভাইকে হিট করছিল তখন খারাপ লেগেছিল, মনে হচ্ছিলো আমার জন্য দলের ক্ষতি হচ্ছে।’
ক্রিকেটে উত্থান আছে, পতনও আছে। আকাশ দীপের গল্পে উত্থান পর্ব চলেই এলো, এবার পতন ঠেকানোর পালা। এদিন পুরনো বলে তিনি নড়বড়ে ছিলেন, এসব নিয়ে কাজ করতে হবে তাঁকে। ধারাবাহিক হতে না পারলে ভারতীয় ক্রিকেটে টিকে থাকা যাবে না, সেটাও নিশ্চয়ই জানা আছে তাঁর।