বিশ্বরেকর্ড গড়েই জিততে হবে ভারতকে

ভারতের সামনে এখন ৪৪৪ রানের লক্ষ্য। এমন পাহাড়সম লক্ষ্য টপকাতে হলে বিশ্বরেকর্ড গড়েই জিততে হবে ভারতকে। এই মুহূর্তে জিততে হলে, শেষ দিনে ২৮০ রান করতে হবে ভারতকে।

ওভালের ফাইনাল এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, তাতে ভারতকে জিততে হবে বিশ্ব রেকর্ড গড়েই। কারণ টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে ৪১৮ রানের বেশি রান লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জিততে পারেনি কোনো দল। সেখানে ভারতকে ৪৪৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

টেস্টে ক্রিকেটের ১৪৬ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০০৩ সালে অ্যান্টিগায় অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৪১৮ রানের লক্ষ্য ছুঁয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা।

শুধু সেটাই নয়। ওভালের মাটিতে ভারতের এ টেস্ট জয়ের ভাবনার সাথে বাস্তবতা কতটা কঠিন, তার প্রমাণ মিলবে আরেকটি পরিসংখ্যানে। ওভালে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি ১২১ বছরের পুরোনো।

১৯০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৬৩ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ১ উইকেটে জিতেছিল ইংল্যান্ড। সেখানে এই মাটিতেই ৪৪৪ রানের অসম এক লক্ষ্য টপকাতে হবে ভারতকে।

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৬৯ রান তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ২৯৬ রানেরই থেমেছিল ভারতের প্রথম ইনিংস।

ফলে ১৭৩ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেখানে ৮ উইকেটে ২৭০ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে অজিরা। এর ফলে ভারতের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৪৪ রানের।

এর আগে ৪ উইকেটে ১২৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে দিনের শুরুতে ১ রান যোগ করতেই মার্নাশ ল্যাবুশেনকে অস্ট্রেলিয়া। ব্যাট হাতে দারুণ ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি গ্রিন। রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হয়ে এ বাঁহাতি ব্যাটার ফেরেন ২৫ রানে।

তবে গ্রিন ফিরে গেলেও এ দিন স্টার্ককে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন অ্যালেক্স ক্যারি। প্রথম ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি হাতছাড়া হলে এ দিন অর্ধশতক তুলে নেন ক্যারি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬৬ রানে।

ক্যারিকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন স্টার্ক। ৫৭ বলে ৪১ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়াকে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে দেন এ পেসার। ২৭০ রানে প্যাট কামিন্স বিদায় নিলে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। ভারতের হয়ে ৫৮ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন রবীন্দ্র জাদেজা।

অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৪৪৪ রানের লক্ষ্যে আক্রমণাত্মক শুরুই করেছিল ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। তবে ৪১ রানের মাথায় থার্ড আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ফিরে যেতে হয় গিলকে। গিলের আউটের পর চা বিরতিতে যায় ভারত।

এরপর চেতেশ্বর পুজারার সাথে ৫১ রানের জুটি গড়ে তোলেন ওপেনার রোহিত শর্মা। তবে এরপরেই ভারতের ইনিংসে আসে ধাক্কা। দলীয় ৯২ রানে নাথান লিঁও’র বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান রোহিত শর্মা। আর এর ৩ রান বাদেই প্যাট কামিন্সের বলে পরাস্ত হয়ে সাজঘরে ফিরে যান চেতেশ্বর পুজারা।

৯৫ রানে ৩ উইকেট হারানো ভারতকে এরপর কিছুটা পথ দেখান বিরাট কোহলি আর আজিঙ্কা রাহানে। এ দুই ব্যাটারের ৬৯ রানের নিরবচ্ছিন্ন জুটিতে চতুর্থ দিন শেষ করে ভারত।

বিরাট কোহলি ৪৪ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। আর তাঁর সাথে ২০ রান নিয়ে আগামী দিন আবারো ব্যাটিংয়ে নামবেন আজিঙ্কা রাহানে।

শেষ দিনে এখন ভারতের জয়ের পথে সমীকরণ হচ্ছে ৩ সেশনে ২৮০ রান করতে হবে তাদের। এর আগে গ্যাবায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ দিনে ৩০০ এর বেশি রান করে ম্যাচ জিতেছিল ভারত। এবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কি ঘটাতে পারবে টিম ইন্ডিয়া? তেমন কিছু হলে দীর্ঘ ১০ বছর আইসিসি শিরোপার আক্ষেপ ঘুচবে ভারতের।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...