যাবার সময় হল

বাংলাদেশ জাতীয় দলের এক সময়ের নিয়মিত মুখ ছিলেন অলক কাপালি। ফর্ম হারানো, বোর্ডের সাথে বিদ্রোহের মত কারণে দলে জায়গা হারান। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স ঠিকই খবরের শিরোনামে প্রায় দেখা যেতো এই ক্রিকেটারকে। এবার অবশ্য প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন। সাদা পোশাক আর সাদা রঙের প্যাড তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

২০২০ সালে টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে নাসিম শাহ বিশ্বের কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। কিন্তু তাঁর আগে কে ছিলেন এই রেকর্ডের মালিক? মোটামুটি ক্রিকেট অনুসরণ করলে জানা থাকারই কথা। বিরল এই রেকর্ডের মালিক ছিলেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার অলক কাপালি।

২০০৩ সালে মুলতান টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে অলক কাপালি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। সাব্বির আহমেদ, দানিশ কানেরিয়া এবং উমর গুলকে আউট করে এই কীর্তি গড়েছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের এক সময়ের নিয়মিত মুখ ছিলেন অলক কাপালি। ফর্ম হারানো, বোর্ডের সাথে বিদ্রোহের মত কারণে দলে জায়গা হারান। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স ঠিকই খবরের শিরোনামে প্রায় দেখা যেতো এই ক্রিকেটারকে। এবার অবশ্য প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন। সাদা পোশাক আর সাদা রঙের প্যাড তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে অলক কাপালি এক পোস্টে নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এখন তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য আরো বেশি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার সুযোগ করে দেওয়া উচিৎ। তরুণ ক্রিকেটারদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে আসার জন্য এবং আমার পরিবারকে বেশী সময় দেওয়ার লক্ষ্যে আমি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

দীর্ঘ পথচলায় অনেকেই অলক কাপালিকে সহায়তা করেছেন। উনাদের সহ সকল শুভাকাঙ্ক্ষী ও শুভানুধ্যায়ীর কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছেন এই ডানহাতি। সেই সাথে বাংলাদেশ ও বৃহত্তর সিলেটের ক্রীড়াঙ্গনের অংশ হতে পারায় নিজেকে গর্বিত ভাবেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

যদিও ২০২২/২৩ মৌসুমে সাদা বলের (টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে) ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করবেন। এখনো ঘরোয়া ক্রিকেটে অলক কাপালি অন্যতম সেরা পারফর্মার। বয়সের সাথে পাল্লা দিতে না পারায় হয়তো চার দিনের ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন, তবে রঙিন পোশাকে এখনো তাঁর উপস্থিতি দলের জন্য দারুণ কিছু।

২০০০/০১ মৌসুমে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল অলক কাপালির। এরপর থেকে দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় দেশের ঘরোয়া আঙ্গিনায় সাদা পোশাকে ক্রিকেট খেলেছেন তিনি। এরই সাথে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি ফরমাম্যাটে অংশগ্রহন করেছেন তিনি।

এখন পর্যন্ত ১৭২টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা অলক কাপালি ৯১৩৮ রান করেছেন; ব্যাটিং গড় ৩৩.৫। অন্যদিকে বল হাতেও তিনি ছিলেন সেরাদের একজন ৷ চার দিনের ক্রিকেটে ২১৭ উইকেট আছে তাঁর ঝুলিতে, বোলিং গড় ৩২ এর একটু বেশি এবং বোলিং ইকোনমি মাত্র ২.৯৮।

বাংলাদেশের লাল-সবুজ জার্সিতেও নিজের সময়ে অলক কাপালি ছিলেন অন্যতম সেরা৷ ৬৯ টি ওয়ানডে ম্যাচে করেছেন ১২৩৫ রান এবং একইসাথে নিয়েছিলেন ২৪ উইকেট। এছাড়া সাদা পোশাকে ১৭ ম্যাচে ৫৮৪ রান করেছিলেন। অবশ্য বল হাতে খুব একটা সফলতার মুখ দেখেননি তিনি। তবে সে সময়কার প্রেক্ষাপটে কাপালি ছিলেন দেশসেরা ক্রিকেটার।

অবসর বার্তায় অলক কাপালি বলেন, ‘আমি বৃহত্তর সিলেটের ক্রিকেটের সর্বাঙ্গীন সফলতা কামনা করছি। সিলেটের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য যেকোনো সহায়তার জন্য আমি সাধ্যমত চেষ্টা করবো প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি।’

নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দিয়েছেন। সেই সাথে অঙ্গীকার করেছেন ক্রিকেটের সাথেই থাকার। এটা সত্যি, অলক কাপালি তাঁর প্রতিভার তুলনায় মাঠে পারফর্ম করতে পারেননি। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে কাপালির ভিন্ন রকমের একটা স্থান থাকবে সবসময়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...