পাঁচটা শর্ট বল, পাঁচটা পুল শট, পাঁচ বারই ক্যাচ আউট। হ্যাঁ, এক বাক্যে সাঞ্জু স্যামসনের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, টি-টোয়েন্টি সিরিজের পারফরম্যান্স এটাই। সাঞ্জুকে আউট করাই যেন সবচেয়ে সহজ কাজ এই মুহূর্তে। অথচ এই সিরিজের আগেও এই পুল শটই ছিল তার অন্যতম হাতিয়ার। তাহলে হঠাৎ এই ছন্দপতনের কারণ কী? ব্যাপারটা কি শুধুই কাকতালীয়? নাকি আসলেই ব্যাটিং টেকনিকে সমস্যা দেখা দিচ্ছে সাঞ্জুর?
ইংল্যান্ড সিরিজের আগেও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে, তিনি সবচেয়ে বেশি রান করেছিলেন পুল শট থেকেই। ৬৫ বলে প্রায় ২৫০ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ১৬০ রান। তবে পুল শটে তার কন্ট্রোল তেমন ভালো ছিল না, মাত্র ৭৫.৪০ শতাংশ। তবু তার শর্ট বল মোকাবিলার ক্ষমতা নিয়ে কখনো সন্দেহ ছিল না।
গত তিন আইপিএলে পেসারদের শর্ট বলে পুল-হুক করে আউট হয়েছেন মাত্র চার বার, স্ট্রাইক রেট ২৭২.৭২! দক্ষিণ আফ্রিকায় সাম্প্রতিক সিরিজেও পুল করে ৯ বলে ৩৫ রান তুলেছিলেন, কোনোবার আউট হননি। অথচ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হুট করেই একদম লেজেগোবরে অবস্থা হয়ে গেছে তার।
সমস্যা কি তাহলে ম্যাচ আপে? ইংল্যান্ড দলে ছিল জোফ্রা আর্চার, মার্ক উড, সাকিব মাহমুদের মতো গতি তারকা। যারা ধারাবাহিকভাবে শর্ট বল দিতে সক্ষম। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে সাঞ্জু ক্রিজের অনেক ভিতরে দাঁড়িয়েছিলেন, জায়গা পাননি, পুল করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। অথচ পঞ্চম ম্যাচে ঠিকই শরীর সরিয়ে বলের লাইনে এসে আর্চারকে দুই ছক্কা মেরেছেন। পরের ওভারে উডের শর্ট বলে দারুণ টাইমিং করেও ধরা পড়লেন স্কয়ার লেগে।
এটা কি ব্যাটিং দুর্বলতা? নাকি টি-টোয়েন্টির হাই রিস্ক-হাই রিওয়ার্ড দর্শনের অংশ? ভারতের বর্তমান থিওরি অনুযায়ী, ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে হবে। ২৫০ করতে গেলে মাঝে মাঝে ১২০-১৩০ রানে গুটিয়ে যেতেই হবে। ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরও বলেছেন, ‘আমরা হারার ভয় পাই না, আমাদের ব্যাটাররাও পায় না।’
সুতরাং, এটা নিছকই টেকনিক্যাল সমস্যা না, বরং হাই রিস্কেরই প্রভাব। সাঞ্জু বরাবরই পুল শটে ভালো, শর্ট বল তার জন্য দুর্বলতা নয়। বরং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নির্দিষ্ট কন্ডিশনে, নির্দিষ্ট বোলারদের কারণে সমস্যায় পড়েছেন। ভাগ্য একটু সহায় হলে তার কয়েকটি শটই ছক্কা হতে পারত।
তাই এটা সমস্যা নাকি কাকতালীয়, সেটি বোঝা যাবে সামনের সিরিজগুলোতে। পরেরবার তিনি এই সমস্যার মোকাবিলা কীভাবে করেন, সেটাই বলে দেবে, এটা নিছক দুঃসময় ছিল নাকি প্রকৃত সমস্যা!