চা-বাগানের কোল ঘেঁষা স্টেডিয়ামে পাওয়া গেছে ঐতিহাসিক এক জয়। ঘরের মাঠে প্রথমবারের মত হারানো গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। সেই সুখস্মৃতি নিয়েই টাইগাররা মাঠে নামছে। এবার লক্ষ্য তাদের সিরিজ জয়। অন্যদিকে, কিউইরাও মরিয়া জয়ের ধারায় ফিরতে।
কেননা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শুরুর দিকেই পিছিয়ে পড়তে চায় না প্রথম চক্রের চ্যাম্পিয়নরা। তাইতো মিরপুরে জম্পেশ এক লড়াইয়ের আভাস মিলছে। যে লড়াইয়ের সম্মুখভাগেই থাকবেন দুই দলের স্পিনাররা। সিলেটের স্পোর্টিং উইকেটেই দাপট দেখিয়েছেন তাইজুল ইসলাম, এজাজ প্যাটেলরা।
শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম যে রীতিমত এক স্পিনস্বর্গ। সেখানে স্পিনারদের মধ্যে হওয়া লড়াইটা নিশ্চিতরূপেই ভোগাবে দুই দলের ব্যাটারদের। বিরূপ আচরণ করা উইকেটের কারণে সময়ের আগেই শেষ হয়ে যেতে পারে ঢাকা টেস্ট।
সিলেট টেস্টে মোট ৩২ উইকেট নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করেছিলেন বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের স্পিনাররা। দুই দলের তিন পেসার যেন ছিলেন একেবারে ছায়া হয়ে। তেমন এক দৃশ্যের আবারও মঞ্চায়ন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
নিউজিল্যান্ড দল সিলেট টেস্টে একজন অতিরিক্ত স্পিনার না নিয়ে খেলার আক্ষেপে পুড়েছে। সেদিক থেকে ঢাকা টেস্টে নিউজিল্যান্ডের দলে রাচিন রবীন্দ্র কিংবা মিশেল স্যান্টনারদেরকে দেখা যেতেই পারে। সেদিক থেকে পরিবর্তনের গ্যাড়াকলে পিষ্ট হতে পারেন হেনরি নিকলস। সিলেটের দুই ইনিংসে বলার মত কিছুই করতে পারেননি নিকলস।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ দলে একটা পরিবর্তন আসছে। নিরুপায় এক পরিবর্তন। নেট অনুশীলনে চোটে পড়েছেন ডান-হাতি স্পিনার নাঈম হাসান। তার ডানহাতের তর্জনী ফেটে রক্তপাত হয়েছে। সুতরাং তার পরিবর্তে নবাগত হাসান মুরাদকে একাদশে দেখা যেতে পারে।
শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পরিসংখ্যান জুড়েই স্পিনারদের আধিপত্যের চিত্র স্পষ্ট। এই মাঠে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিন বোলারই স্পিনার। তাছাড়া আফগানিস্তান সিরিজকে ব্যতিক্রম হিসেবে গণনা করলে এখানে স্পিনারদের উইকেট শিকারের হারও সবচেয়ে বেশি।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের আগে হওয়া আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচেও ছিল স্পিনারদের একচ্ছত্র দাপট। ২৩টি উইকেট শিকার করেছিলেন দুই দলের স্পিনাররা। সাম্প্রতিক ইতিহাসও স্পিনারদের পক্ষেই কথা বলছে।
অতএব স্পিনারদের দ্বৈরথেরই দেখা মিলবে ঢাকা টেস্টে। সেটা অনুমিতই বলা চলে। এমনকি বাংলাদেশের হেডকোচ চান্ডিকা হাতুরুসিংহে সেই আভাসও দিয়েছেন। তবে তিনি এটাও স্বীকার করেছেন মিরপুরের উইকেট বেশ দুর্বোধ্য। এক-দুই সেশন খেলা হওয়ার পরও উইকেটের আচরণ বুঝতে পারা দায়।
নিউজিল্যান্ড শিবির থেকেও ভেসে এসেছে একই সুর। তারাও যেন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে উইকেট বোঝার চেষ্টা করেছেন। তবুও যেন কুল-কিনারা করা যায়নি। তাইতো অতীত পরিসংখ্যানের উপর ভরসা করেই স্পিনারদের অগ্রাধিকার দেবে নিউজিল্যান্ড। এখন স্রেফ বল মাঠে গড়ানোর অপেক্ষা।