রাহুল দ্রাবিড়কে নিয়ে ধোয়াঁশা কেটেছে

অদ্ভুত এক ধোঁয়াশা, অনিশ্চয়তা ছিল। ভারতের কোচ হিসেবে রাহুল দ্রাবিড় কি আর ভারতের সঙ্গে মেয়াদ বাড়াবেন? এমন প্রশ্নের যেন কোনো সদুত্তরই মিলছিল না। বিশ্বকাপ স্বপ্নভঙ্গের পর একরকম নিশ্চুপ বনেই গিয়েছিলেন ভারতের এই কোচ।

এ দিকে কিছুদিন আগেই, জাতীয় দলের দায়িত্ব ছেড়ে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি লখনৌ সুপার জায়ান্টসের পরামর্শক হবেন দ্রাবিড়, এমন গুঞ্জনও শোনা গিয়েছিল। রাহুলের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ গন্তব্য হিসেবে রাজস্থান রয়্যালসের নামও চলে এসেছিল।

তবে প্রধান কোচের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা যখন চরমে, তখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড নিজেদের কাজ এক ধাপ এগিয়েই রেখেছিল। আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য দ্রাবিড়, লক্ষ্ণণ দুজনেরই সাপোর্ট স্টাফের ভিসা সম্পন্ন করেছে তাঁরা। জনপ্রিয় ক্রিকেট গণমাধ্যম ক্রিকবাজ জানায়, চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে দ্রাবিড়কে থেকে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)।

রাহুল দ্রাবিড় সেই পরামর্শ মেনে নিয়েছেন। তিনি বিসিসিআইয়ের সাথে চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত করেছেন। এক বিবৃতিতে দ্রাবিড় বলেন, ‘গত দু’বছর ধরে দল হিসাবে আমরা অনেক উত্থান-পতন দেখেছি। কিন্তু এই দু’বছরে আমরা একটা দল হিসেবে খেলেছি। সবাই সবার জন্য লড়েছে। দলের মধ্যে যে সংস্কৃতি আমরা তৈরি করতে পেরেছি তার জন্য আমরা গর্বিত। এই সংস্কৃতি মনে করিয়ে দেয় যে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, একটা দল হিসাবে খেলব আমরা। দলের প্রত্যেক ক্রিকেটার নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। আমরা যে সঠিক ভাবে নিজেদের তৈরি করেছি তার ফল আমরা দেখেছি।’

তাঁর উপর আস্থা রাখার জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ দিয়েছেন দ্রাবিড়। তিনি বলেন, ‘আমার দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভরসা রাখার জন্য, আমার পাশে থাকার জন্য বোর্ডকে ধন্যবাদ। সেই সঙ্গে আমার পরিবারকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ, কাজের জন্য বছরের একটা বড় সময় আমাকে বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। পরিবারও অনেক আত্মত্যাগ করে।’

এর আগে অবশ্য রাহুলকে নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয় বিসিসিআইয়ের অন্দর মহলে।  জানা গেছে, রাহুল দ্রাবিড়ের ভবিষ্যৎ ঠিক করতে গত সপ্তাহে তাঁর সঙ্গে আলোচনা সেরেছেন বিসিসিআইয়ের শীর্ষ কর্তারা। এ আলোচনায় তাঁকে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তাতে তিনি রাজি হয়েছেন। একই সাথে, বিশ্বকাপের অন্যান্য কোচিং স্টাফদেরও মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোর, বোলিং কোচ পরশ মামব্রে ও ফিল্ডিং কোচ টি দিলিপদের নিজ দায়িত্বে থাকার সম্ভাবনা বেশি। তবে বিসিসিআইয়ের প্রস্তাবে দ্রাবিড়সহ অন্য কোচরা রাজি হয়েছেন কি না, সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা সফর হবে দ্রাবিড়ের নতুন মেয়াদের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। এরপর ব্যস্ত সূচিই অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার আগে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ সিরিজ খেলবে ভারত।

জানিয়ে রাখা ভাল, এর আগে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর নভেম্বরে ভারতীয় দলের প্রধান কোচ হন রাহুল দ্রাবিড়। বিসিসিআইয়ের সঙ্গে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্তই চুক্তি ছিল তাঁর। এ সময়কালে দারুণ সফলই ছিলেন এ কোচ। তাঁর অধীনে ভারত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে হারলেও জিতেছে এশিয়া কাপ। এ ছাড়া তিন ফরম্যাটেই দলকে শীর্ষে তোলার নেপথ্যে ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link