কোন ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে জাতীয় দলে এসে ব্যর্থ হলেই বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে নিয়মিতই। কিন্তু বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল মনে করেন ভেবে চিন্তে সুযোগ না দেওয়ার কারণেই ব্যর্থ হচ্ছেন তারা।
খেলা ৭১- এর নিয়মিত আয়োজন ‘ছেলেখেলা লাইভ’-এ এসে জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক জানিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স করার পর কাকে জাতীয় দলে আর কাকে প্রস্তুতি ম্যাচ গুলোতে সুযোগ দেওয়া হবে এই সিদ্বান্ত নিতে হবে নির্বাচকদেরই। তিনি মনে করেন এখানে ভুল হলেই আসলে ফলাফল আসে না। আশরাফুলের মতে নির্বাচকদের চোখ ভিন্ন হতেই হবে।
তিনি বলেন, ‘ঘরোয়া লিগে ভালো করলেই যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ দিতে হবে, সাধারণ মানুষের চোখ আর নির্বাচকদের চোখ এক হলে হবে না। ওনাদের চোখ হতে হবে ভিন্ন। ঘরোয়া লিগে ভালো করেছে কাকে আন্তর্জাতিক ম্যাচে সুযোগ দেবো, কাকে সাইড ম্যাচে সুযোগ দেবো এখানে সবার মত চোখ হলে হবে না, এই কারণেই আসলে ব্যর্থ হয়। চোখটা ভিন্ন হতে হবে কোন ছেলেটা আন্তর্জাতিক ম্যাচে পারফরম্যান্স করতে পারবে এটা ভেবে সুযোগ দিতে হবে। এখানে চিন্তা কম করেই হয়তো সুযোগ সুবিধা দেই।’
নিজের ব্যাখার পক্ষে সাইফ হাসানকে দিয়ে যুক্তিও দিয়েছেন আশরাফুল। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্স করার পরেও জাতীয় দলে টানা ব্যর্থ হয়েছেন সাইফ হাসান। সাদমান আগের ম্যাচ গুলোতে ভালো করার পরেও সুযোগ দেওয়া হয়েছে সাইফকে। আশরাফুল মনে করেন এই সুযোগ দেওয়ার সময় সব চিন্তা করতে হবে কে পারবে, কে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘এটা তো অবশ্যই দূর্ভাগ্য। সাদমানের রেকর্ড যদি দেখেন ওতোটা গ্রেট না কিন্তু সাইফের থেকে ভালো। সেটাই বললাম আপনার চোখ ভিন্ন হতে হবে। সবার মত চোখ হলে উন্নতি হবে না। সাইফ প্রচুর রান করেছে এইচপিতে, এই কারণেই নির্বাচকরা চিন্তা করেছে সাইফকে আমরা সুযোগ দেবো। সাদমান যেহেতু চোটে ছিল দ্বিতীয় টেস্টে, সাদমানের দেখেছি ধৈর্য্যটা চমৎকার, নতুন বল খুব ছাড়তে পারে দুইটা ফিফটি, ২৬ গড় এতো গ্রেট না। অভিষেকে ৭০ করছে, শেষ টেস্টে ৫৯ করছে।’
তবে বাড় পড়ার ক্ষেত্রে সাদমানেরও দায় দেখছেন আশরাফুল। ক্যারিয়ারের প্রথম সাত টেস্টে দুইটা হাফসেঞ্চুরি করেছেন সাদমান। আশরাফুল মনে করেন এগুলো সেঞ্চুরিতে নিয়ে যেতে পারলেই আর কোন প্রশ্ন উঠতো না তাকে নিয়ে।
আশরাফুল বলেন, ‘এই ইনিংস গুলো যদি সেঞ্চুরি করে ফেলতো তাকে নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠতো না। ৬ টা টেস্ট খেলার পরে ওর বড় ইনিংসই ছিলো ৭০ আর ৫৯ ম্যানেজমেন্ট চিন্তা করেছে গড় ২৬। ওর দায় হলো ও কেনো এগুলো সেঞ্চুরি করতে পারলো না। এগুলো সেঞ্চুরি হলে বাদ দেওয়ার সুযোগ থাকতো না। আমাদের খেলোয়াড়দের দায়িত্বটা নিতে হবে।’
জাতীয় দলে ব্যর্থ হওয়ার পর প্রায়ই আরেকটা অভিযোগ শোনা যায় ঘরোয়া ক্রিকেটে গতির বল খেলে অভ্যাস্ত না থাকার কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে সমস্য হয় ব্যাটসম্যানদের। তবে আশরাফুল মনে করেন এখন আলাদা করে প্রস্তুতি নেওয়ার যে সুযোগ সুবিধা রয়েছে তাতে এই সমস্য হওয়ার কথা নয়।
আশরাফুল বলেন, ‘যারা ক্রিকেট বোর্ডের নজরে আছে তাদের কিন্তু এটা সমস্য হওয়া উচিত না। কারণ আমরা যখন শুরু করেছিলাম তখন থেকে এখনকার সুযোগ সুবিধা আরো বেটার। প্রস্তুতিটাও নিতে পারে সবাই। তো এখন ঐ কথাটা বলা উচিত না যে আমরা তো ১৪০-৫০ গতির বল খেলে অভ্যাস্ত না। এখন বোলিং মেশিন আছে, থ্রোয়ার আছে, আপনাকে আলাদা করে প্রস্তুতি নিতে হবে।’