অশ্বিনের ঘূর্ণি বাংলাদেশের গোলকধাঁধা

সেই অসম্ভব কাজটাকে বাস্তবতা থেকে বহুদূরে ঠেলে দিলেন অশ্বিন। তার ঘূর্ণি জাদুতে কাবু হয়েছেন বাংলাদেশের তিনজন ব্যাটার।

রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ঝলকটা সম্ভবত প্রকাশ পেল মুমিনুল হকের বিরুদ্ধে। দুর্দান্ত একটা ডেলিভারি। একেবারে শার্প টার্ন। তাতে পরাস্ত হলেন মুমিনুল হক। উড়ে গেল অফ স্ট্যাম্পের ভরসায় থাকা বেল। ক্যারিশম্যাটিক এক চরিত্র রবিচন্দ্রন অশ্বিন। যদিও প্রথম ইনিংসে তাকে থাকতে হয়েছিল উইকেট শূন্য।

চেন্নাইয়ে ৫১৫ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে ভারত। ব্যাট হাতে যেখানে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অবদান ছিল বটে। বাংলাদেশের পক্ষে জয় পাওয়া প্রায় অসম্ভব। সেই অসম্ভব কাজটাকে বাস্তবতা থেকে বহুদূরে ঠেলে দিলেন অশ্বিন। তার ঘূর্ণি জাদুতে কাবু হয়েছেন বাংলাদেশের তিনজন ব্যাটার। চতুর্থ ইনিংসে তিনি ভাইটাল চরিত্র হতে চলেছে সেটা ছিল অনুমিত।

এভারেস্টের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের দুই ওপেনার একটা ভাল শুরুর আভাস দিয়েছিলেন বটে। জাকির হাসান আর সাদমান ইসলাম পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর দিকেই দিচ্ছিলেন মনোযোগ। সেই জুটিতে আঘাত করেছিলেন মূলত জাসপ্রিত বুমরাহ। কিন্তু তৃতীয় দিনের শেষটার বাকিটুকু জুড়ে রয়েছেন অশ্বিন।

প্রথম উইকেট হিসেবে সাদমানকে ফেরান অশ্বিন। ফ্লিক করতে গিয়ে মিড উইকেটে ধরা পড়েন সাদমান। ফ্লাইটেড ডেলিভারি পড়তে ব্যর্থ হয়েছিলেন সাদমান। তাতে করে বহু কষ্টের পর উইকেট এসে ধরা দেয় অশ্বিনের হাতে। বেশ লম্বা সময় ধরেই তিনি ব্যাটারকে একটা ধুম্রজালের মধ্যে ফেলতে চেয়েছিলেন বটে।

এরপর মুমিনুলের উইকেট তুলে নেন অশ্বিন। দিনের শেষ উইকেট হিসেবে মুশফিকুর রহিমের উইকেট শিকার করেন অশ্বিন। আউট হওয়ার ঠিক আগের বলেই অশ্বিনকে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন মুশফিক। পরের বলেও খানিক এগিয়ে এসে খেলার চেষ্টা চালান অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। কিন্তু এবার আর ব্যাটে বলে সংযোগ ঠিকঠাক হয়নি। মিড অনের দিকে হাওয়া ভেসে এগিয়ে যেতে থাকে বল।

দারুণ দক্ষতার সাথে প্রায় মাটির স্পর্শে চলে আসা বলকে তালু-বন্দী করেন লোকেশ রাহুল। ছক্কা হজমের পরের বলেই ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে ফেরান অশ্বিন। এ যেন এক মধুর প্রতিশোধ। চতুর্থ দিনের সকাল বেলায় হয়ত অশ্বিন নিজের নামের পাশের উইকেট সংখ্যা বাড়িয়ে নেবেন অনেকটাই।

কেননা চিপকের উইকেটে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে বটে। পেসারদের পায়ের চাপে উইকেটের মাটি খানিক আলগা হয়েছে। সেসব জায়গা লক্ষ্য করেই বল ছুঁড়ছেন অশ্বিনরা। চতুর্থ দিনের রোদের আলোতে একেবারেই শুষ্ক হওয়া উইকেটের আবরণ থেকে উঠতে পারে ধুলো। আর সেই ধুলো মাখা বলগুলোতে অশ্বিনের ধূর্ততা মিশ্রিত হলে তা হয়ে উঠবে আরও ভয়ংকর।

চেন্নাই অশ্বিনের ঘরের মাটি। এখান থেকেই তার উত্থান। সেখানে তিনি ছড়ি ঘোড়াবেন না- তা কি আর হয়? ইতোমধ্যেই ব্যাট হাতে অনবদ্য এক ইনিংস খেলে ফেলেছেন। এখন বল হাতে ভারতের জয়কে ত্বরান্বিত করাই হবে অশ্বিনের কাজ। সে কাজটা বেশ ভালভাবেই করতে জানেন তিনি। ঘরের মাঠে আরও একবার জয়ের নায়ক হওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে অশ্বিন।

Share via
Copy link