নতুন হিরোর সন্ধান

অপেক্ষার প্রহর বাড়ল আরো। কারণ, আসিফ নিজের বিকাশ ঘটাতে একটু বেশিই সময় নিয়ে ফেললেন। তবে, আশার ব্যাপার হল - একটু দেরিতে হলেও তাঁর পায়ের নিচের মাটি শক্ত হল। এবার শুধু এই জায়গাটা ধরে রাখার পালা। যে ঝড় দিয়ে তিনি বিশ্বকাপটা শুরু করলেন, সেই ঝড় অব্যহত থাকলে বাকি দলগুলোর জন্য বিপদ নিশ্চিত করেই বাড়বে।

নতুন এক হিরোর সন্ধান পেয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট। দু:সময়ে নতুন কাউকে খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্য পাকিস্তানের কোনো জুড়ি নেই। সেই নতুন তারার নাম আসিফ আলী। স্লগার হিসেবে পাকিস্তান দলে তাঁর ঠাই হলেও নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না একদমই। তবে, এবার সেটা পারলেন, সেটাও আবার বিশ্বকাপের মঞ্চে।

আরো পড়ুন

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানটান উত্তেজনার মুহূর্তে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান আসিফ আলী। ডান হাতি এই ব্যাটসম্যান ১২ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ইনিংসে ছিল একটি চার ও তিনটি ছক্কা। স্ট্রাইক রেট ২২৫! বোঝাই যাচ্ছে ‘স্লগার’ পরিচয়ের প্রতি অবশেষে সুবিচার করতে পেরেছেন তিনি।

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ১৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে একটা পর্যায়ে খেঁই হারিয়ে ফেলেছিল পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ। ১৫ তম ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে তাঁরা করে মাত্র ৮৭ রান।

সেখান থেকেই আসলে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তানের বদলে যাওয়া শুরু। অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক আর  আসিফ আলী মিলে অপরাজিত ৪৮ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। আর টানা দুই জয়ে সেমিফাইনালের পথে এক পা দিয়েই রাখল বাবর আজমের দল।

রান তাড়ায় সবচেয়ে বড় অবদান এই জু’টির। আরেকটু স্পষ্ট করে বললে ১৭ তম ওভারে আসিফের ব্যাট থেকে আসা টানা দুই ছক্কাতেই জয়ের পথে ফেরে পাকিস্তান দল।

মূলত ‘লেট ইনিংস স্লগার’ হিসেবেই একাদশে ঠাই হয়েছে আসিফের। তবে, তাঁর ব্যাটিংয়ে সেই পরিচয়ের ছাপ ছিল সামান্যই। সাম্প্রতিক অতীতেই এই আসিফ আলী তাঁর ব্যাটিং অ্যাপ্রোচের জন্য বেশ সমালোচিত হয়েছেন।

বিশেষ করে তাঁর ‘হিট অ্যান্ড মিস’ দর্শনের জন্য পাকিস্তানের দর্শকদের চক্ষুশ্যূলে পরিণত হন দ্রুতই। স্যোশাল মিডিয়ায় তিনি ছিলেন দর্শকদের সহজ শিকার। বিস্তর ট্রল হত তাঁকে নিয়ে। শুধু দর্শক নয়, পাকিস্তানের গণমাধ্যমও ছিল আসিফের সমালোচনায় সরব।

তবে, এবার সমালোচকদের মুখের ‍ওপর জবাব দিতে পেরেছেন আসিফ। সমালোচকদের এখন বাধ্য হয়েই নিজেদের কথা হজম করে ফেলতে হয়েছে। এর জন্য পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্টের অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য। দিনের পর দিনে এক অংকের ঘরে আউট হয়ে যাওয়ার পরও আসিফের ওপর তাঁরা ভরসা করে গেছেন।

আসিফ সেই ভরসার প্রতিদান দিলেন দলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গিয়ে। চাহিদামাফিক ছক্কা হাঁকিয়ে গিয়েছেন তিনি। এবার সেই ব্যাটিং দাপটের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার পালা।

আসিফের ব্যাপারে পাকিস্তানের পরিকল্পনা ‍খুব পরিস্কার। তাকে পাঠানোই হয় বলটাকে পেটানোর জন্য। দীর্ঘ সময় পাকিস্তান শেষে দিকে ঝড় তোলার মত একজন ব্যাটসম্যান খুঁজে ফিরেছে। একটু দেরিতে হলেও পাওয়া গেছে আসিফকে।

আবার, অপেক্ষার প্রহর বাড়ল আরো। কারণ, আসিফ নিজের বিকাশ ঘটাতে একটু বেশিই সময় নিয়ে ফেললেন। তবে, আশার ব্যাপার হল – একটু দেরিতে হলেও তাঁর পায়ের নিচের মাটি শক্ত হল। এবার শুধু এই জায়গাটা ধরে রাখার পালা। যে ঝড় দিয়ে তিনি বিশ্বকাপটা শুরু করলেন, সেই ঝড় অব্যহত থাকলে বাকি দলগুলোর জন্য বিপদ নিশ্চিত করেই বাড়বে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...