আতাহার ও এশিয়া কাপের সেই স্পেশাল ইনিংস

সেই ম্যাচের পর ইডেনের অভিজ্ঞ সাংবাদিকরা বলেছিলেন, ইডেনে ওই টুর্নামেন্টের সেরা ইনিংস খেলেছিলেন আতাহার। শচীন টেন্ডুলকার, সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, মোহাম্মদ আজাহারউদ্দীন, সনাৎ জয়াসুরিয়াও ইডেনে ভালো ইনিংস খেলেছিলেন ওই টুর্নামেন্টে। তাদের টপকে এই স্বীকৃতি পাওয়া আতাহারের জন্য অনন্য এক অর্জন।

ক্রিকেট গবেষক অভিষেক মুখোপাধ্যায় আতাহার আলীখানের জন্মদিনে স্মৃতিচারণ করেছেন।

ক্রিকেটকান্ট্রির সাবেক চিফ এডিটর এবং উইজডেন ইন্ডিয়া অ্যালম্যানাকের সাবেক সহকারী সম্পাদক অভিষেক মুখোপাধ্যায়।

আতাহার আলী খানের ১৯৯০-৯১ সালের বহুল আলোচিত অপরাজিত ৭৮ রানের ইনিংসটি তিনি দেখেননি। তবে সেই ম্যাচের পর ইডেনের অভিজ্ঞ সাংবাদিকরা বলেছিলেন, ইডেনে ওই টুর্নামেন্টের সেরা ইনিংস খেলেছিলেন আতাহার। শচীন টেন্ডুলকার, সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, মোহাম্মদ আজাহারউদ্দীনও ইডেনে ভালো ইনিংস খেলেছিলেন ওই টুর্নামেন্টে। তাঁদের টপকে এই স্বীকৃতি পাওয়া আতাহারের জন্য অনন্য এক অর্জন।

আজ আতাহার আলী খানের জন্মদিন।

তাঁর সম্পর্কে আমার একটা গল্প বলার আছে; ১৯৯০-৯১ এশিয়া কাপের ঘটনা সেটা। পাকিস্তান এশিয়া কাপে অংশ নিলো না। ফলে ভারতের পথটা তুলনামূলক সহজ হয়ে গেলো।

ফরম্যাট ছিলো রাউন্ড রবিন লিগ।

চন্ডিগড়ে ভারত বাংলাদেশকে হারিয়ে দিলো। কিন্তু কটকে আবার ভারত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে গেলো। তারপরও তারা (ভারত) ফাইনালে কোয়ালিফাই করলো।

অন্য লিগ ম্যাচগুলো হয়েছিলো ইডেন গার্ডেন্সে। ফাইনালের ভেন্যুও ছিলো সেটা।

শ্রীলঙ্কা আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ২৪৯ রান করেছিলো। বাংলাদেশ জবাবে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান করেছিলো। ২৩ রানে ২ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আতাহার উইকেটে এসে ৯৫ বলে ৭৮ রানে শেষ করেছিলেন।

ম্যাচের ফল যাই হোক না কেনো, তাকে ম্যান অব দ্য ম্যাচ ঘোষণা করা হয়েছিলো।

আমি সেই ম্যাচটা দেখিনি। আমি ঠিক নিশ্চিত নই যে, ম্যাচটা আদৌ সম্প্রচার হয়েছিলো কি না।

চার দিন পর ফাইনাল উপলক্ষ্যে আমি ইডেন গার্ডেন্সে দিয়েছিলাম। শ্রীলঙ্কা ৯ উইকেটে ২০৪ রান করেছিলো। ওই ইনিংস নিয়ে আমার বেশ কিছু স্মৃতি আছে।

কপিল দেব হ্যাটট্রিক করেছিলেন। কিন্তু সেই সময় ব্যাপারটা প্রায় খেয়ালই করা হয়নি। তরুণ এক সনাৎ জয়াসুরিয়া ছিলো। লোকেরা লোকাল হিরো শরদ্বিন্দুকে নিয়ে খুব উল্লাস করছিলো।

ভারত খুব সহজে জয় পেয়ে গিয়েছিলো।

তখনকার ভারতীয় দলের তারকা ব্যাটসম্যান মাঞ্জরেকার দারুণ কিছু শট করেছিলেন। টেন্ডুলকার তখনও খুব তরুণ (বয়স তখন ১৭)। তারপরও খুব প্রশংসিত হয়েছিলেন। আজাহারউদ্দীন চোখ ধাঁধানো স্টাইলে শেষ করেছিলেন ম্যাচ; এই ভেন্যুতে তো উনি খুব একটা ব্যর্থ হতেন না।

কিন্তু এইসব যখন ঘটছে, ইডেন গার্ডেন্সের পুরোনো সৈনিকেরা আমার দিকে চেয়ে মাথা দোলাচ্ছিলেন। একজন বিস্ময়ের সাথে বললেন, ‘এসব সুন্দর। কিন্তু আতাহারের ইনিংস সেরা ছিলো।’

বাকিরা সবাই তার সাথে একমত হলেন!

তাহলে অপরাজিত ৭৮ রানের সেই ইনিংসটা একটা বিশেষ কিছু ছিলো নিশ্চয়ই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...