টানা ছয় ম্যাচে পরাজয়; বিধ্বস্ত বাংলাদেশ রীতিমতো নখদন্তহীন বাঘে পরিণত হয়েছিল। তবে এই আহত বাঘের কাছেই এবার কাবু হয়েছে এশিয়ার লায়ন্সরা। উত্তপ ছড়ানো ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে তিন উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মত পয়েন্ট পেয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।
আগে ব্যাট করতে নামা লঙ্কান শিবিরে শুরুতেই আঘাত করেন শরিফুল ইসলাম, চার রানের মাথায় ফেরান কুশল পেরেরাকে। এরপর অবশ্য কুশল মেন্ডিস ও পাথুম নিশাঙ্কার সাবলীল ব্যাটিংয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। দলীয় ৬৬ রানে মেন্ডিসকে আউট করে ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব, পরের ওভারে প্রথম বিশ্বকাপ উইকেটের স্বাদ পান জুনিয়র সাকিব।
সেসময় লঙ্কানদের হয়ে প্রতিরোধ গড়েন সাদিরা সামারাবিক্রমা এবং চারিথ আসালঙ্কা। দুজনের পঞ্চাশোর্ধ জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকে এগুতে থাকা শ্রীলঙ্কা। কিন্তু পঁচিশতম ওভারে ঘটে নাটকীয়তা, সাকিবের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন সামারাবিক্রমা। একটু পরেই একই পথে হাঁটেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস; না, তার জন্য বল করতে হয়নি, টাইম আউটের ফাঁদে আটকা পড়েন তিনি।
১৩৫ রানে পাঁচ উইকেট হারালেও আসালঙ্কা হাল ছাড়েননি, ডি সিলভাকে নিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন ৭৮ রান। ৩৪ রান করে সিলভা ফিরলেি অবিচল থাকেন তিনি; ইনিংসের শেষদিকে পূর্ণ করেন সেঞ্চুরিও। তাতেই ২৭৯ রানের চ্যালেঞ্জিং পুজি পায় মেন্ডিসের দল।
রান তাড়া করতে নেমে বরাবরের মতই হাতেগোনা কয়েকটা ভাল শট খেলেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন দুই ওপেনার লিটন দাস এবং তানজিদ তামিম। অন্য দিনের মতই বাংলাদেশ যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ের অপেক্ষায় ছিল তখনি ত্রাতা হয়ে আসেন সাকিব আল হাসান এবং নাজমুল শান্ত। দুজনের সাবলীল ব্যাটিংয়ের খানিকটা আশার সঞ্চার হয়।
আর এই আশার আলো সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে কেবল উজ্জ্বল হয়েছে; এই দুই ব্যাটারের দৃঢ়তায় ম্যাচের চালকের আসনে উঠে এসেছিল টাইগাররা। ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন তাঁরা, এরপর পূর্ণ করেছেন শতরানের জুটিও। এই বিশ্বকাপে এটিই বাংলাদেশের প্রথম তিন অঙ্কের জুটি।
৮২ রান করা সাকিবকে আউট করে লঙ্কানদের ব্রেক থ্রু এনে দেন ম্যাথুস, নিজের পরের ওভারে শান্তকেও ফেরান তিনি। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র দশ রান দূরে থাকতে থামতে হয় তাঁকে। এরপরই ছোটখাটো ধ্বস নামে ব্যাটিং অর্ডারে, তবে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু দেখতে হয়নি। ৪২ তম ওভারেই হয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা।
আর এর মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক আসরে প্রথমবার শ্রীলঙ্কাকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সেই সাথে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা করে নেয়ার লড়াইয়েও এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ।