টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ম্যাচ জিততে হলে একটা ব্যাপার ধ্রুব। বিশেষ করে আপনি যখন রান তাড়া করছেন তখন প্রথম বল থেকেই আপনাকে জয়ের জন্য খেলতে হবে। নিজেদের কাছে কিংবা প্রতিপক্ষ দলের কাছে বার্তাটা স্পষ্ট হওয়া চাই। আমরা জিততে এসেছি। আর বাংলাদেশ ম্যাচ হারে ঠিক এই জায়গাটাতেই। বাংলাদেশ আসলে ম্যাচের শুরুতেও হেরে বসে থাকে।
পাকিস্তান বাংলাদেশকে ১৬৮ রানের টার্গেট দিয়েছে। ক্রাইস্টচার্চের উইকেট বিবেচনায় খুব বড় টার্গেট বলা যাবেনা। তবে বাংলাদেশের জন্য টার্গেটটা যেন বিশাল। উইকেট যাইহোক, ১৫০ রানের বেশি টার্গেট হলেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ভেঙে পড়েন।
আজও যেমন বোলারদের গড়ে দেয়া ভিত্তিটার অপব্যবহার করেছেন ব্যাটাররা। এই ধরনের টার্গেট চেজ করে জেতার জন্য পাওয়ার প্লে ব্যবহার করা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ইনিংসের প্রথম ছয় ওভারেই মোটামুটি একটা ভিত্তি গড়ে ফেলতে চায় যেকোন দল। তবে বাংলাদেশের ওপেনাররা কিংবা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা তা করতে পারেননা কখনোই।
১৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা দলটা পাওয়ার প্লেতে তুলতে পেরেছে মাত্র ৩৮ রান। এরপর আসলে ম্যাচের আর কিছু বাকি থাকেনা। মেকশিফট ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজ আজ রানের দেখা পাননি। ওদিকে নতুন করে সুযোগ পাবার পর থেকেও সাব্বির এখনো নিজেকে প্রমাণ করতে পারছেন না।
বড় আশা নিয়ে সাব্বিরকে জাতীয় দলে ফিরিয়ে আনা হলেও তাঁর প্রতিদান দিতে পারছেন না সাব্বির। প্রত্যাবর্তনের পর খেলা চার ম্যাচে করেছেন মাত্র ৩১ রান। আজই সর্বোচ্চ ১৪ রানের ইনিংস এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ফলে দলে নিজের জায়গাটা আবার হারানোর পথে সাব্বির।
ওপেনারদের এমন ব্যর্থতার পর অন্তত মুখ বাচিয়েছেন আফিফ হোসেন ও লিটন দাস। বিশেষ করে লিটনের ইনিংসটা ছিল কার্যকর। তবে অন্য কোন ব্যাটারই তাঁর পাশে দাঁড়াতে পারেননি। আজ তিন নাম্বারে নেমে ২৬ বলে ৩৫ রান করেছেন তিনি। আফিফের ব্যাট থেকেও এসেছে ২৫ রান।
তবে ব্যাটিং লাইন আপ হিসেবে কখনোই ম্যাচটা জেতার জন্য খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। এছাড়া মিডল অর্ডারে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আউট হয়েছেন নিজের প্রথম বলেই। তবে সাত নাম্বারে নামা ইয়াসির আলি রাব্বি আবার খানিকটা লড়াই করেছেন।
যদিও রাব্বি যখন নেমেছে তখন ৯৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ ইতোমধ্যেই হাতের বাইরে। তবুও একপ্রান্ত থেকে বোলারদের নিয়ে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। অন্তত দলকে একটা সম্মানজনক স্কোর এনে দিতে পেরেছেন। এছাড়া ইনজুরি থেকে ফিরেও যে নিজের ব্যাটের ধারটা কমেনি সেটাও প্রমাণ করলেন রাব্বি।
একমাত্র রাব্বির ব্যাটিং যথার্থ টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংটা দেখা গিয়েছে। মাত্র ২১ বলে করেছেন ৪২ রান। ইনিংসটি সাজিয়েছেন পাঁচটি চার ও দুটি ছয় দিয়ে। ব্যাটিং করেছেন ঠিক ২০০ স্ট্রাইকরেটে। তাঁর ব্যাটিংটাই প্রমাণ করে এই ইনিংসে ১৬৮ রান খুব বড় কোন টার্গেট ছিল না। উপরের দিকের ব্যাটাররা একটু দায়িত্ব নিয়ে খেললেই ম্যাচ জিততে পারতো বাংলাদেশ।
ব্যাটসম্যানদের এমন ব্যর্থতার দিনেও বাংলাদেশের স্কোর দাড়িয়েছে ১৪৬। শেষ দুই বলে রাব্বির দুই বাউন্ডারির পর বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ২১ রানে। রাব্বির এই ইনিংস যেন বাংলাদেশের আক্ষেপ আরো বাড়িয়েছে। টপ অর্ডারে অন্তত একজন বড় ইনিংস খেলতে পারলেও সিরিজটা জয় দিয়ে শুরু করতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশের যে গোড়াতেই গলদ।