খানিকটা বাড়াবাড়ি কিংবা একটা মরীচিকা। সে যাই হোক। দলগত পারফরমেন্সের উপর ভর করে বাংলাদেশ এবার বিশ্ব জয়ের স্বপ্নে বিভোর। সেই দলটা নিয়েই যত আলোচনা, সমালোচনা। বিশ্বকাপের দলটা ঠিক কেমন হবে, সেই নিয়ে রয়েছে বেশ উৎকণ্ঠা।
প্রতিটা খেলোয়াড় আর পজিশন নিয়ে হচ্ছে কাঁটাছেড়া। সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার জায়গাটা সম্ভবত বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে দলের টপ অর্ডার। দুই টপ অর্ডার ব্যাটার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস পড়েছেন অফফর্মের গ্যাড়াকলে। কিন্তু এই দুইজনই তো ইনিংস শুরুর সবচেয়ে বড় আস্থার নাম।
কেননা ওয়ানডে সুপার লিগের সেরা দশ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় রয়েছেন তামিম ইকবাল। সাত নম্বরে রয়েছেন তিনি। রান করেছেন ৭৮৩। খেলেছেন সুপার লিগের সব ক’টি ম্যাচ। তিনিই টাইগারদের হয়ে ওয়ানডে সুপার লিগে সর্বোচ্চ রান করেছেন।
কিন্তু চিন্তার বিষয়টা অন্য জায়গায়। তার স্ট্রাইকরেট। সেটা বাংলাদেশের ব্যাটারাদের মধ্যে প্রায় শেষের দিকে। তার পেছনে রয়েছেন কেবল মেহেদি হাসান মিরাজ। তামিমের স্ট্রাইকরেট ৭৬.২৪। অন্যদিকে, মিরাজ ৭৪.২০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন পুরো ওয়ানডে সুপার লিগ জুড়ে।
বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন সাকিব আল হাসান। প্রায় ৮০.২৮ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। দলের মিডল অর্ডারের সবচেয়ে বড় ভরসার প্রতীক তিনি। ২০১৯ বিশ্বকাপে তো টাইগারদের হয়ে ব্যাট হাতে রীতিমত একাই লড়ে গেছেন সাকিব আল হাসান।
অন্যদিকে, স্ট্রাইকরেটের বিচারে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছেন লিটন দাস। ৭৯.১০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন তিনি ২৩ ম্যাচে। স্বাভাবিকভাবেই লিটন একটু ধীরস্থির ভাবে ইনিংসের শুরু করেন। পরবর্তীতে রানের গতি বাড়িয়ে, দলের উপর থেকে চাপ কমিয়ে নিতে বেশ সিদ্ধহস্ত তিনি। যদিও তার সাম্প্রতিক পারফরমেন্স সবচেয়ে বেশি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গেল বছর যেখানে ৫২ গড়ে লিটন রান করেছেন ওয়ানডে ক্রিকেটে। সেখানে তিনি এই বছরে রান করেছেন প্রায় অর্ধেক গড়ে। ব্যাটিং ইনিংসের সূচনা করা দুই ব্যাটার তাই বাড়তি চিন্তার কারণ বাংলাদেশের জন্যে। তবে স্বস্তির জায়গা মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল শান্ত দুর্দান্ত ফর্ম।
নিজেকে রীতিমত নতুন রুপে আবিষ্কার করতে শুরু করেছেন মুশফিকুর রহিম। ওয়ানডে সুপার লিগে দশম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। তবুও একটা লম্বা সময় ধরে চলেছে রান খরা। গেল বছরের ২৩ গড়টা এবার হয়েছে ৬২.৬৬। স্ট্রাইকরেট ১০১.৬২। যদিও পুরো সুপার লিগের ২১ ম্যাচ খেলা মুশফিকের স্ট্রাইকরেট ৭৭.৭৫। বাজে সময়টার প্রভাব।
অন্যদিকে, নাজমুল হোসেন শান্ত নিজের সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে শুরু করেছেন। ব্যাট হাতে রয়েছেন দারুণ ছন্দে। সুপার লিগের ৯ ম্যাচ খেলা শান্ত ব্যাট করেছেন প্রায় ৮৪.১৪ স্ট্রাইকরেটে। অন্যদিকে, সদ্যই দলের সাথে যুক্ত হওয়া তাওহীদ হৃদয়ের স্ট্রাইকরেট সবার থেকে উপরে, ১০২.৮৫।
দলের ব্যাটিং ইউনিটটা রয়েছে এখন মিশ্র এক পরিস্থিতিতে। প্রধান পীড়ার কারণটা অবশ্য শুভ সূচনা। অন্তত কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আবারও স্বরূপে ফিরবেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। সেটাই হয়ত প্রত্যাশা সকলের। বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখা যে বাড়াবাড়ি নয়, সেটা প্রমাণের এই তো মোক্ষম সুযোগ।