বিশ্বকাপ জার্সি নিয়ে এত লুকোচুরি কেন!

ক’দিনের বৃষ্টির ঝাপটা শেষে, আবারও শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। বেলা তখন তিনটে, পশ্চিম দিকে সূর্য খানিকটা হেলতে শুরু করলেও তেজ কমেনি। ৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রার তপ্ত রোদের মধ্যে বেড়িয়ে এলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। একেবারে সুটেড-বুটেড হয়ে। অসহ্য গরমেও এক ফালি হাসি ধরে রাখার চেষ্টা। বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে বলেই।

আরও একটি বিশ্বকাপের পর্দা এই উঠল বলে। বাংলাদেশ জাতীয় দল প্রস্তুত বটে। এদফা অবশ্য সোজাসাপ্টা বলে দেওয়া হয়েছে বড় কিছু প্রত্যাশা না করতে। বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু তো বলেই বসেছেন, ‘দল সেমি ফাইনালে খেলবে- টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমরা এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারিনি।’

খানিকটা তেঁতো হলেও, এটাই যে সত্য। কিন্তু তবুও যে এই বঙ্গদেশের পাগলাটে ক্রিকেট ভক্তরা টিভি সেটের পর্দার সামনে বসে যাবে প্রতিটি ম্যাচ দেখতে। সুদূর আমেরিকার গ্যালারিতেও যে লাল-সবুজের পতাকা উড়বে না, সে নিশ্চয়তা দেওয়ার উপায় নেই এক ছটাক।

তাছাড়া সমর্থকরা যে বাংলাদেশের জার্সির জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান, সে কথা না বলে দিলেও চলে। কিন্তু এখন অবধি বাংলাদেশের জার্সি হয়নি উন্মোচিত। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া অধিকাংশ দেশই নিজেদের জার্সি এনেছে জনসম্মুখে। বরাবরের মতই লুকোচুরি খেলছে বাংলাদেশ। কি আছে সেই জার্সিতে?

বাংলাদেশের ক্রিকেটকে ঘিরে ভক্তদের আবেগ প্রায় আকাশ ছোঁয়া। ভীষণ দুর্দিনেও গ্যালারীতে জয়োধ্বনি হয়। ক্ষোভ থেকে তা অবশ্য মাঝে মধ্যে পরিণত হয় দুয়োধ্বনিতে। তবে গ্যালারি একেবারে ফাঁকা থাকে না। তাইতো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল থেকে শুরু করে জার্সি, সবকিছুই নিয়েই বেশ খুঁতখুঁতে সকলে। জার্সি প্রকাশ হওয়া মাত্রই সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। প্রশংসাতেও যে ভাসে না জার্সি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, তাও কিন্তু নয়।

তবে চাইলে কি অফিসিয়াল ফটোশ্যুট হতে পারত না বিশ্বকাপের জার্সিতে? হয়ত চাইলে সম্ভব হতো। কেননা বিশ্বকাপের আর প্রায় ১৫ দিন মত বাকি। জার্সি তো তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা ইতোমধ্যেই। অন্তত ডিজাইন তো প্রস্তুত। চাইলে একসেট জার্সি পরে ছবি তোলার কাজটা সেরে নিতে পারত বাংলাদেশ দল।

কিন্তু না, তেমনটি হয়নি। ভীষণ গরমেও ফরমাল প্রক্রিয়াতে ছবি তুলেছে দল। তাতে অবশ্য খারাপের কিছু নেই। বিস্তর সমালোচনা করবার মত বিষয়ও নয় এটি। তবে একটা বিশ্বকাপ জার্সি যে দমে যাওয়া উন্মাদনার আগুনে জ্বালানি হয়ে কাজ করত সেটা তো নিশ্চয়ই বলে দেওয়ার নয়।

জার্সি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা এক হিড়িক হয়ত ঢিলেঢালা মনোভাবকে বদলে দিতে পারত। ঝিমিয়ে পড়া দর্শকদের একটু হলেও চাঙ্গা করে তোলা যেতে পারত। সেই কাজটিও সম্পাদনা করা গেল না এদফা। দায়ভার কারও কাঁধে তো প্রতিনিয়তই তুলে দেওয়া যায়। এবার না হয় সে কাজও তোলা থাক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link