স্পিনস্বর্গে স্পিনারদের নৃত্য। আর বৃষ্টি, আলোকস্বল্পতা। মিরপুর টেস্টের দৃশ্যপটটাই ছিল এমন। তবে যতটুকুই খেলা গড়িয়েছে, তাতেও রোমাঞ্চ কম ছড়ায়নি। আর সেই রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অবশেষে ৪ উইকেটে হারলো বাংলাদেশ।
ব্যাটাররা আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকবেন। স্পিনাররা করবেন উইকেট উল্লাস। মিরপুর টেস্টে আজ এই ধারায় চলল চতুর্থ দিনের খেলাও। ২ উইকেটে ৩৮ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করা বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১৪৪ রানে। জয়ের জন্য ১৩৭ রানের লক্ষ্যে শুরুতে ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারালেও গ্লেন ফিলিপস আর মিশেল স্যান্টনারের অবিচ্ছিন্ন ৭০ রানে জুটিতে জয়ের নিশানা খুঁজে পেয়েছে কিউইরা।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে একাই লড়াই করে গিয়েছেন জাকির হাসান। বাকিরা এজাজ প্যাটেলের স্পিনের সামনে কাবু হয়ে ছিলেন আসা যাওয়ার মধ্যেই। বাঁহাতি এ কিউই স্পিনার একাই নেন ৬ উইকেট।
অবশ্য দিনের শুরুটা খুব খারাপ ছিল না বাংলাদেশের ইনিংসের। জাকির ও মমিনুল দিনের শুরুতে বেশ কয়েকবার বাউন্ডারি খুঁজে নেন। কিন্তু দুই প্রান্ত থেকে স্পিনারদের বোলিং দেওয়ার পরই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। ১৫তম ওভারে এজাজ প্যাটেলের বল পুল করতে গিয়ে ব্যর্থ হন মমিনুল। ব্যাটে সংযোগ না ঘটায় বল লাগে প্যাডে। আম্পায়ারও তর্জনী উঁচিয়ে আউটের সংকেত দিতে ভুল করেননি।
বাংলাদেশের ইনিংসের ধ্বসও শুরু হয় সেখান থেকেই। মুশফিকুর রহিমও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৯ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে স্যান্টনারের বলে ফিরে যান তিনি। এর পর আর কেউই ক্রিজে দাঁড়াতে পারেনি। জাকির হাসান শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও তিনিও নবম ব্যাটার হিসেবে আউট হন। বাংলাদেশ অলআউট হয় ১৪৪ রানে।
১৩৭ রানের লিড নিয়ে শুরুতেই বাংলাদেশের দরকার ছিল দারুণ কিছুর। বোলিং ইনিংসে সেটাই এনে দেন শরিফুল ইসলাম। লাঞ্চের পরপরই ইনসুইং দিয়ে কনওয়ের উইকেট তুলে নেন এ পেসার। এর পর বাকি কাজ করেন মিরাজ ও তাইজুল। এ দুই স্পিনারের স্পিনঘূর্ণিতে একে একে ফিরে যান কেন উইলিয়ামসন, হেনরি নিকোলস, টম ব্লান্ডেলরা।
তবে ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ডকে এর পরে পথ দেখান গ্লেন ফিলিপস ও স্যান্টনার। প্রথম ইনিংসে ৮৭ রান করা ফিলিপস এ দিনও বংলাদেশের জয়ের পথে বাঁধা হয়ে দাড়ান। শেষ পর্যন্ত ৭০ রানের জুটি গড়ে কিউইদের ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। ৪৮ বলে এ ব্যাটার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৪০ রানে। আর তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন মিশেল স্যান্টনার।