পেস বিপ্লবের বিশ্বকাপ সম্ভাবনা

একটা বিশ্বকাপ, একটা দেশের লালিত স্বপ্ন পূরণের মঞ্চ। সেই মঞ্চে স্বপ্ন পূরণের দায়িত্বটা নিতে হয় বোলারদেরই। কেননা কথায় আছে, ব্যাটসম্যানরা আপনাকে ম্যাচ জেতাবে, আর বোলাররা জিতাবে টুর্নামেন্ট।

একটা বিশ্বকাপ, একটা দেশের লালিত স্বপ্ন পূরণের মঞ্চ। সেই মঞ্চে স্বপ্ন পূরণের দায়িত্বটা নিতে হয় বোলারদেরই। কেননা কথায় আছে, ব্যাটসম্যানরা আপনাকে ম্যাচ জেতাবে, আর বোলাররা জিতাবে টুর্নামেন্ট।

তাই তো প্রশ্ন উঠেছে, ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে লাল-সবুজের প্রত্যাশা পূরণে কতটুকু সক্ষম বাংলাদেশি বোলাররা; বিশেষ করে পেসাররা? বর্তমানে ওয়ানডে ফরম্যাটে পেসারদের ফর্মের দিকে তাকালে অবশ্য উত্তরটা ইতিবাচক হবে।

তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে দারুণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ। দেশে কিংবা বিদেশের মাটিতে ম্যাচজয়ী ভূমিকা রাখছেন তাঁরা। বিশ্বকাপে তাই এই পেস আক্রমণের উপর ভরসা করাই যায়।

চলতি বছরে সাত ম্যাচ খেলে বারো উইকেট শিকার করেছেন এক্সপ্রেস পেসার তাসকিন আহমেদ; গড় ১৫ এর একটু বেশি, আর ইকোনমি মাত্র ৩.৭১।

এর আগের বছরে ১৪ উইকেট নিয়েছেন দশ ম্যাচে, সময়ের সাথে উন্নতি চোখে পড়ার মতই। আরেক পেসার ইবাদত হোসেন ৮ ম্যাচে নিয়েছেন এগারো উইকেট; ইকনোমি ৫.৩৮। পুরো ক্যারিয়ারে ১২ ম্যাচ খেলা এই ডানহাতির ঝুলিতে আছে বাইশ উইকেট।

তরুণ পেসার হাসান মাহমুদও দেখিয়েছেন বোলিং ঝলক। এখন পর্যন্ত ২০২৩ সালে ২০.৯২ বোলিং গড়ে ১২ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

মুস্তাফিজুর রহমান কিছুটা ম্লান হলেও সাত ম্যাচে নিয়েছেন সাত উইকেট, আর ওভারপ্রতি খরচ করেছেন মাত্র ৫.০৮ রান। পরিসংখ্যান যেমনই হোক ডেথ ওভারে রান আটকানোর জন্য বাংলাদেশের বড্ড প্রয়োজন তাঁকে।

বামহাতি পেসার শরিফুল এ বছর বেশি সুযোগ না পেলেও নিজেকে প্রমাণ করেছন ঠিকই। মাত্র তিন ম্যাচ মাঠে নেমেই পেয়েছেন সাত উইকেট। সবমিলিয়ে তাই বাংলাদেশের পেস বিভাগ এখন ইন ফর্ম।

যদিও অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে খানিকটা পিছিয়ে আছে টিম টাইগার্স। তাসকিন আহমেদ এবং মুস্তাফিজুর রহমান ছাড়া কোন পেসারেরই নেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা।

এই দুইজনও খেলেছেন একটি করে বিশ্বকাপ। তাই বিশ্ব মঞ্চে চাপের মুখে কেমন পারফর্ম করবে হাসান-এবাদতরা সেটা ভাবনার বিষয়। যদিও তাসকিন, ফিজরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারলে এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) টুর্নামেন্টে স্পোর্টিং পিচই বানানো হয়। তবে আয়োজক যেহেতু ভারত, তাই পেসারদের কাজ একটু তো কঠিন হবেই। ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের পেসারদের পারফরম্যান্স কেমন সেটাও দেখা উচিত।

অথচ প্রতিবেশী দেশটির মাটিতে কেউই পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচই খেলতে পারেননি এখন পর্যন্ত। এমন কিছুও দুশ্চিন্তা বাড়াবে টিম ম্যানেজমেন্টের।

পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে বাংলাদেশের পেসাররা এখন দলের সম্পদ। কিন্তু, বিশ্বকাপে অনভিজ্ঞতা এবং ভারতের মাটিতে ম্যাচ না খেলা বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তুলনামূলক অভিজ্ঞ তাসকিন আহমেদ এবং নিয়মিত আইপিএল খেলা মুস্তাফিজুর রহমানের উপর তাই বাড়তি দায়িত্ব হবে পেস বিভাগকে এগিয়ে নেয়া।

২০১৯ সালের মত আবারো বিভীষিকাময় পেস বোলিং দেখতে চায় না কেউই; সেবার মাশরাফির অফ ফর্ম আর ফিজের খরুচে বোলিংয়ের কারণেই আকাঙ্খিত ফল পায়নি টিম বাংলাদেশ।

এবার স্বপ্নটা আরো ডালপালা মেলেছে, একই সাথে বেড়েছে তাসকিন, এবাদতদের উপর প্রত্যাশাও। সেই প্রত্যাশার কতটুকু পূরণ করতে পারবে বাংলার পেসারররা সেটা দেখতে আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...