আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ক্যাম্প করতে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে ওমান যাবে বাংলাদেশ। ওমানে গিয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টার কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। আর বিশ্বকাপের বায়ো বাবলে প্রবশে করার আগে ছয় দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে দল গুলোকে। তবে যারা বায়ো বাবল থেকে বিশ্বকাপ খেলতে যাবে তাঁদের কোয়ারেন্টাইন মওকুফ করা হবে।
আজ (২৩ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এই সব তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী। তবে তিনি জানিয়েছেন ওমানে গিয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টার কোয়ারেন্টাইনে থাকা লাগলেও দেশ থেকে সবাইকে করোনার ভ্যাকসিন ও করোনা টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত যে তথ্য আছে, এখান থেকে করোনা নেগেটিভ টেস্ট রিপোর্ট নিয়ে যেতে হবে। সবাইকে ভ্যাকসিন নিতে হবে। এরপর ওখানে আমরা যতটুকু জানি ২৪ ঘন্টার একটা কোয়ারেন্টাইন প্রিরিয়ডের কথা বলা আছে।’
ওমানে ক্যাম্প শেষে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ ও বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব খেলবে বাংলাদেশ। এরপর বিশ্বকাপের মূল পর্ব খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) বায়ো বাবলে প্রবেশ করতে হবে বাংলাদেশকে।
বিসিবির প্রধান চিকিৎসক জানিয়েছেন আইসিসির নির্দেশনা তাঁরা এখনো পূর্ণাঙ্গ না পেলেও তাদের কাছে তথ্য রয়েছে ছয় দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। অন্য দল গুলোর ক্ষেত্রেও একই শর্ত প্রযোজ্য হবে। তবে কোন দল যদি বিশ্বকাপের আগে সিরিজ খেলার জন্য বায়ো বাবলে থাকে এবং বায়ো বাবল থেকেই চ্যাটার্ড ফ্লাইটে বিশ্বকাপ খেলতে যায় তবে কোয়ারেন্টাইন মওকুফ করবে আইসিসি।
দেবাশীষ বলেন, ‘আমাদের কাছে যে তথ্য আছে যে ছয় দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা আইসিসি আপাতত সবাইকে দিচ্ছে। যে দল গুলো বায়ো বাবলের ভিতর আছে তারা যদি চ্যাটার্ড ফ্লাইট ব্যবহার করে সেক্ষেত্রে তাদের ছয় দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না। তবে পূর্নাঙ্গ নির্দেশনা আমরা এখনো হাতে পাইনি। আশা করি আগামী দুই এক দিনের ভিতর পাবো।’
বিসিবির প্রধান চিকিৎসক আজ কথা বলেছেন তামিম ইকবাল খানের চোট নিয়েও। চোটের কারণে দীর্ঘ দিন ধরেই মাঠের বাইরে ছিলেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার। চোট কাটিয়ে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষে গতকাল থেকে অনুশীলন শুরু করেছেন তামিম। সব কিছু ঠিক থাকলে নেপালের এভারেস্ট প্রিমিয়াম লিগেও খেলতে যাবেন তিনি।
দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন এই লিগে খেলাটাও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অংশ। এখানে যদি সব ঠিক থাকে তারপর ভবিষৎয়ের বিষয় গুলো নিয়ে চিন্তা করবেন তাঁরা। তবে এখন তামিমের সব কিছুই শতভাগ ঠিক আছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের এই প্রধান চিকিৎসক।
তিনি বলেন, ‘জিম্বাবুয়ে সিরিজ শেষে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ থেকে তামিমকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল প্রায় আট সপ্তাহ পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে যাওয়ার জন্য। তামিম গত এক মাস ধরেই রিহ্যাব প্ল্যান ফলো করেছে। যথেষ্ট অধ্যবসায় ও কস্টের সাথে এই জটিল প্রক্রিয়া শেষ করেছে। গত দুই তিন ধরে ও ব্যাটিং ফিল্ডিং শুরু করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সাথে তামিমের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, এই এভারেস্ট প্রিমিয়াম লিগে খেলা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ারই একটা অংশ। খেলার ভিতরই বোঝা যাবে ওর স্কিল ও অন্য বিষয় কতটুকু ম্যানেজ করতে পারছে। ওর ফিডব্যাকের উপর আমরা পরেরটা চিন্তা করবো। তামিম এখন শতভাগ সব করতে পারছে। খেলার বিষয়টা অন্য রকম। ও যতোক্ষণ পর্যন্ত খেলার ভিতর না আসবে ও নিজকে বিচার করতে পারবে না। ওর খেলাটা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অংশ। এই খেলার উপর নির্ভর করবে ভবিষৎয়ে আমরা কীভাবে আগাবো।’
শুধু তামিমই নয়; দীর্ঘ দিন ধরে চোপের কারণে মাঠের বাইরে রয়েছেন তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ। চোট কাটিয়ে তিনিও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এর আগে তাকে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় তেমন কিছু পাওয়া না গেলেও বিসিবির চিকিৎসক জানিয়েছেন বায়ো মেকানিকাল বোলিং এসেসমেন্টের জন্য দেশের বাইরে পাঠাতে হবে হাসান মাহমুদকে।
তিনি বলেন, ‘হাসান মাহমুদ আমাদের এখানে বেশ দীর্ঘ সময় ধরে পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতে আছে। আমরা বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন ভাবে ওর পরিক্ষা ও স্ক্যান করেছি। পরীক্ষায় বড় কোন সমস্য আমরা পাইনি। ওর একটা প্রোপার বায়ো মেকানিকাল বোলিং এসেসমেন্ট দরকার। যেটা দূর্ভাগ্যজনক ভাবে আমাদের দেশে নেই। আমরা চেষ্টা করছি বিদেশে যেখানে এই ফ্যাসেলেটিজ গুলো আছে সেখানে পাঠিয়ে দেবো এসেসমেন্টের জন্যে।’
করোনার কারণে বিভিন্ন দেশে এখন ভ্রমণ জটিলতা রয়ে গেছে। আমরা দুই তিন জায়গাতে কথা বলেছি। যদি সব ঠিক থাকে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ওকে আমরা দেশের বাইরে পাঠাতে পারববো।