২০২৪ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে বাংলাদেশকে

২০২৪ সাল যে ভীষণভাবে পরীক্ষায় ফেলবে গোটা দলকে। নিজেদের ‘কমফোর্ট জোন’ থেকে বেড়িয়ে আসতেই হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের।

একটা নতুন শুরু। বিগত বছরের ভুল, গ্লানি, হতাশা সবকিছু পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। ২০২৪ এ পদার্পণের পরপরই হয়ত বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের মনেও ছোটাছুটি করেছে সেই প্রত্যয়। সেটা হওয়াও তো বেশ প্রয়োজন। ২০২৪ সাল যে ভীষণভাবে পরীক্ষায় ফেলবে গোটা দলকে। নিজেদের ‘কমফোর্ট জোন’ থেকে বেড়িয়ে আসতেই হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের।

নতুন বছরের সাথে সাথে নতুন পঞ্জিকাও যুক্ত হয়েছে। নব্য ক্রিকেট পঞ্জিকা অনুযায়ী বেশ ব্যস্ত সময়ই কাটবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের। স্বাভাবিকভাবেই এই বছর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটাই টাইগার ক্রিকেটে প্রধান্য পাবে। বিশ্বকাপের বছরে সেটাই বরং হওয়াটা স্বাভাবিক।

এই বছরে, অর্থাৎ ২০২৪ সালে বাংলাদেশ নিদেনপক্ষে ২১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে, দ্বি-পাক্ষিক ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে। তবে সংখ্যাটা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরবর্তী রাউন্ড নিশ্চিত করতে পারলে টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সংখ্যা বাড়বে।

তবে বাংলাদেশের মূল চ্যালেঞ্জটা এবার টেস্ট ক্রিকেট। নতুন পঞ্জিকা অনুযায়ী বাংলাদেশ ১৪টি টেস্ট ম্যাচ খেলতে চলেছে। ২০২৩ এ যে সংখ্যাটি ছিল মাত্র চার। সেটা বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৪টিতে। এখানেই মূলত বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের আসল পরীক্ষা। সেই সাথে পরীক্ষা অবশ্য ক্রিকেট বোর্ডেরও। কেননা কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতাধীন খেলোয়াড়দের বেশ হিসেব কষেই ব্যবহার করতে হবে ক্রিকেট বোর্ডকে।

তাছাড়া দুইটি ভিন্ন দল গঠনের দিকেও হাঁটতে হতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে। কেননা টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট ম্যাচের বিবেচনায় প্রতিটা খেলোয়াড়ই দুই ফরম্যাটে সমানতালে সার্ভিস দেওয়ার নিশ্চয়তা নেই। তাছাড়া ইনজুরিও মস্ত বড় এক দুশ্চিন্তার কারণ। ঠিক সে কারণেই সাদা ও লাল বলের দুইটি পৃথক দল গঠনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তেই হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডকে।

হয়ত পুরোদস্তুর পৃথক দল গড়া সম্ভব হবে না। বেশ কিছু খেলোয়াড়কে তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে হতে পারে। তবে সে সবের ম্যানেজমেন্টও ঠিকঠাক হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি খেলোয়াড়দেরও হতে হবে বাড়তি সতর্ক। নিজেদের সক্ষমতা বিচারেই ফরম্যাট বাছাই করা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। সেই সাথে নিজেদের ফিটনেসের উপর বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে খেলোয়াড়দের।

টি-টোয়েন্টি ও টেস্টের সংখ্যা বাড়লেও বাংলাদেশের ওয়ানডে ম্যাচের সংখ্যা কমেছে। মোটে নয়টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। দীর্ঘ এক পথ চলায় টাইগাররা এই ফরম্যাটই যেন আয়ত্ত্ব করতে পেরেছে। এই ফরম্যাটে প্রতিপক্ষের সাথে টক্কর দিতে শিখেছে বাংলাদেশ। তবে সার্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী জৌলুশ হারিয়ে যেতে বসেছে ওয়ানডে ক্রিকেট।

তাতে করে দ্বি-পাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ আয়োজনের প্রবণতাও কমে আসছে। ২০২৪ সালে পাকিস্তান স্রেফ তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে। তাতেই বরং ওয়ানডে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা নিম্নগামী তার আভাস জোড়াল হয়। সেখানেই বরং বাংলাদেশের মূল চ্যালেঞ্জ। নিজেদের পছন্দসই ফরম্যাটের বাইরেও বাংলাদেশকে উন্নতি করতে হবে। নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখতে হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ময়দানে।

সে কাজের জন্য অবশ্য খেলোয়াড়, কর্তাদের সমন্বয় হওয়া প্রয়োজন। দুই পক্ষেই স্বচ্ছতাও প্রয়োজন। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ দল ছিল বিশৃঙ্খল এক পরিস্থিতির মাঝে। তেমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটুক দেশের ক্রিকেটে- তেমন প্রত্যাশাই হয়ত করেন সাধারণ দর্শক-সমর্থকরা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...