আগের দিন যেখানে শেষ করেছে বাংলাদেশ, ঠিক সেখান থেকেই যেন শুরু। তৃতীয় দিন ব্যাট হাতে দ্রুত রান তোলার তাড়না প্রশমিত হয়নি টাইগারদের। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান ছন্দেই ছিলে।
অন্তত দ্বিতীয় দিনের মত বিপর্যয়ে পড়েনি বাংলাদেশ দল। দেখেশুনে সংগ্রহ ক্রমশ বড়ই করেছেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটার। তবে দলীয় ৩৫ তম ওভারে হাফ সেঞ্চুরি করা জাকির কাটা পড়েন রান আউটে। ৭১ রান করে জাকির প্যাভিলনের পথে ধরেন।
তবে তাতেও রানের গতি স্লথ হয়নি টাইগার ব্যাটারদের। মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। অন্যদিকে হাত চালিয়ে খেলতে থাকেন মুমিনুল হক। নিজের হারানো ফর্মের খোঁজে থাকা মুমিনুল বহুদিন বাদে যেন ব্যাটে রান খুঁজে পেলেন। তিনি আর শান্ত মিলেই প্রথম সেশন পার করেন। বাংলাদেশের তখন সংগ্রহ ২৫৫ রান দুই উইকেট হারিয়ে।
লিড তখনই আকাশচুম্বী। লাঞ্চের পর আফগানদের জন্যে রানের পাহাড়ের উচ্চতা বেড়েছে শুধু। যদিও লাঞ্চের পরপরই দারুণ খেলতে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত আমির হামজার শিকারে পরিণত হন। বাইশ গজে মুশফিকুর রহিমও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। তিনি ফিরে গেছেন তিন বলে আট রান করে।
তাতেও টলেনি বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস। তেমনটা হওয়ার কথাও নয়। তখনও চালকের আসনেই ছিল বাংলাদেশ। এরপরের জুটি গড়েন মুমিনুল ও লিটন দাস। বাংলাদেশ নিজেদের রেকর্ড লক্ষ্যমাত্রাই ছুড়ে দিতে চেয়েছে আফগানিস্তানের জন্যে।
সেটাই করেছে বাংলাদেশ। ৬৬১ রানের লিড নিয়ে তবেই থেমেছে টাইগাররা। চা-বিরতির পরও আরও দশ ওভার ব্যাটিং করে টাইগাররা। তাতে লিটন পৌঁছে যান হাফ সেঞ্চুরিতে, অন্যদিকে ১৩ ম্যাচ পরে মুমিনুল হক ছুঁয়ে দেখেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার।
চার উইকেটে ৪২৫ রান করে ঘোষণা করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাস। পাঁচ দিনের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ টার্গেট ছুড়ে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। সেবার তারা ৬৬০ রানের লক্ষ্য় পেয়েছিল লংকানরা। বেশ বড় ব্যবধানে হেরেছিল শ্রীলঙ্কা সেবার, ৪২৩ রানে।
স্বাভাবিকভাবেই আফগানিস্তানের জন্যে ভীষণ চাপ। সেই চাপ সামলে ওঠার আগেই দ্বিগুণ হয়। ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ঠিকানা হয় ইব্রাহিম জাদরানের। তাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন শরিফুল ইসলাম। জয় প্রায় অসম্ভব। কিন্তু সেটি যেন আরও খানিকটা বিষিয়ে তুলছে টাইগার পেসাররা।
তাসকিনের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল কেড়ে নেয় রহমত শাহের উইকেট। সেই তাসকিনের বলেই মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদী। সম্ভবত বেশ খানিকটা বাউন্স প্রত্যাশা করছিলেন শাহিদী। তবে প্রত্যাশিত বাউন্স ছিল না সেটি।
তিনি মাঠ ছাড়ার পর খেলাও আর বেশিক্ষণ গড়ায়নি মাঠে। আলোক স্বল্পতার কারণে দিনের খেলা শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মাঠে থাকা দুই আম্পায়ার। তাতে দিনের শেষ বেলায় দুই উইকেট হারিয়ে ৪৫ রানের সংগ্রহ নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফগানরা। জয়ের জন্যে হাতে দু’দিন থাকলেও, রান করতে হবে আরও ৬১৭। অসম্ভব এক লক্ষ্য।