Social Media

Light
Dark

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ

এবারের এশিয়া কাপের শিরোপার দাবিদার বাংলাদেশ। না, অমূলক বা মনগড়া কোন আলাপ নয়। সত্যিকার অর্থেই এদফা বাংলাদেশের সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল। এর পেছনের কারণ বাংলাদেশের বর্তমান স্কোয়াড। সেই সাথে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ওয়ানডে পারফরমেন্স।

বাংলাদেশের স্কোয়াড নিয়ে অনেকের অনেক রকম মত থাকতে পারে। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম শক্ত দল এটি। ১৭ জনের এই স্কোয়াডে তারুণ্যের উদ্দীপনা যেমন থাকছে, তেমনি থাকছে অভিজ্ঞতার পরিপক্ক ভীত।

এই ১৭ জন থেকেই তো একাদশ নির্বাচিত হবে। সেই একাদশের ওপেনিং পজিশনে তানজিদ হাসান তামিম হতে পারেন লিটনের সঙ্গী। তরুণ তামিম কিন্তু সদ্যই নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেছেন শ্রীলঙ্কার মাটিতে। ইমার্জিং এশিয়া কাপে দুরন্ত গতিতে চলেছে তার ব্যাট। তাছাড়া এবারের এশিয়া কাপের অধিকাংশ ম্যাচই হবে শ্রীলঙ্কায়। অভিজ্ঞতাও অর্জন করে এসেছেন এই তরুণ।

তার সঙ্গী আবার দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলের সাথে থাকা লিটন দাস। গেল বছরটা ব্যাট হাতে অসাধারণ কাটিয়েছেন লিটন। যদিও এ বছরে একটু ধুকছেন তিনি। তবে ক্ল্যাসিক লিটন নিজের দিনে একাহাতে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে জানেন। সেই সাথে এবারের লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগেও (এলপিএল) রয়েছেন তিনি। কন্ডিশনটা মানিয়ে নিতে সমস্যা তার হবার কথা নয়।

তিন নম্বরে যিনি ব্যাট করতে নামবেন, তিনি সম্ভবত এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটারদের একজন। নাজমুল হোসেন শান্ত ১১ ওয়ানডে ইনিংসে রান করেছেন ৪৪৯। একটি সেঞ্চুরি ছাড়াও এ বছর তিনটি অর্ধশতক রয়েছে তার নামের পাশে। তাছাড়া ইংল্যান্ডের মত দলের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারনী ও ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলার সুখস্মৃতিও রয়েছে শান্তর।

ভাল ছন্দে থাকা শান্তর সাথে ব্যাটিং অর্ডারে যুক্ত হচ্ছেন আরেক তরুণ তুর্কি, তাওহিদ হৃদয়। ক্যারিয়ারের স্থায়ীত্ব খুব বেশি দিনের নয়। তবে এরই মধ্যে কার্য্যকর সব ইনিংস খেলার প্রশংসা তিনি পাচ্ছেন সর্বত্র। পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে তিনি ব্যাট করতে জানেন। দলকে চাপমুক্ত রাখতে অল্প সময়েই তিনি আস্থাভাজন এক ব্যাটারে পরিণত হয়েছেন।

অধিনায়কত্বে আবার ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। তার মত আগ্রাসী একজন অধিনায়ক পালটে দিতে পারে পুরো ড্রেসিং রুমের চিত্র। তাছাড়া সাকিব পুরো দলকে একটা চাপে রাখেন। সুস্থ চাপ, পারফরমেন্স করবার চাপ। তিনি অনুপ্রাণিত করেন দলের বাকিদের। ব্যাটে-বলে দলের জয় ছিনিয়ে নিতে তার তো জুড়ি মেলা ভার। তিনিও খেলছেন লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ।

আয়োজক দেশের কন্ডিশনটাও রপ্ত হয়ে যাচ্ছে তার। অভিজ্ঞতা, সেই ঝুলিটা যে ভীষণ ভারি। এমন আরেক ভারী ঝুলি নিয়ে দলের সাথেই থাকছেন মুশফিকুর রহিম। না, স্রেফ অভিজ্ঞতার বলে নয়। সাম্প্রতিক সময়ে তিনিও কার্য্যকর সব ইনিংস খেলে দলের জয়ের রাখছেন। হোক সেটা জাতীয় দল কিংবা কোন ফ্রাঞ্চাইজি দল। ভরসার প্রাত্র তিনি তো সেই কবে থেকেই।

মেহেদী হাসান মিরাজের মত আরও একজন কার্য্যকর অলরাউন্ডার নি:সন্দেহে থাকছেন একাদশে। একজন বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিত লাভ করতে শুরু করেছিলেন মিরাজ। কিন্তু এরপরই নিজের ভেতরে থাকা ব্যাটার সত্ত্বার বাইরে নিয়ে এলেন। পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার তিনি। ব্যাট-বল হাতে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেওয়ার সক্ষমতা তিনি ধারণ করেন।

অন্যদিকে একাদশে যদি শামিম হোসেন পাটোয়ারি সুযোগ পান, তবে দলের ব্যাটিংটা আরও খানিকটা পোক্ত হয়। অপ্রচলিত সব শট খেলতে তিনি ওস্তাদ। তাতে দ্রুত রান অন্তত তুলতে তিনি পারেন। শেষের দিকে যা কিনা যুক্ত করে দিতে পারে বাড়তি কিছু রান।

আর রইলো বাকি বাংলাদেশের পেস আক্রমণ। সেটা ইতিহাস সেরা বলাই যায়। তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম ও এবাদত হোসেনকে নিয়ে গড়া আক্রমণটা উপমহাদেশের অন্যতম সেরা। এই পাঁচ জনের যেকোন তিনজন একাদশে নিয়মিতই থাকবেন। তবে যেই থাকুক না কেন, তারা প্রত্যেকে নিজের কাজটা বেশ ভালভাবেই করতে জানেন।

তাতে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ শক্তিশালীই হয় বৈকি। এমন একটা গোছালো একাদশ নিশ্চয়ই প্রতিটা দলের চাহিদা। এই দলই তো শিরোপা জয়ের জন্যে হবার কথা ভারসাম্যপূর্ণ। স্রেফ নির্দিষ্ট দিনে একটা দল হয়ে খেলতে পারলেই, ধরা দেবে অধরা শিরোপা। প্রত্যাশার পারদ তাইতো আকাশ ছোঁয়া। দু’দফা শিরোপার কাছে যাওয়ার আক্ষেপ ঘুচবে তবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link