বিশ বছরের অপেক্ষা হলো না শেষ

নিজেদেরকে নিঙড়ে দিয়েও ফলাফল নিয়ে আসা গেল না নিজেদের পক্ষে। আবারও পরাজিত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলারদের।

বহু অপেক্ষার প্রহর যেন আরও খানিকটা দীর্ঘ হল। দুই দশেক ধরে যেই প্রহরের পানে চেয়ে থাকা, তা হচ্ছে আরও একবার। নিজেদেরকে নিঙড়ে দিয়েও ফলাফল নিয়ে আসা গেল না নিজেদের পক্ষে। আবারও পরাজিত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলারদের। ১-০ গোল ব্যবধানে কুয়েত চলে যায় ফাইনালে।

তবে বিশ বছরের অপেক্ষার অবসানটা সম্ভবত হতেই পারত দুই মিনিটে। ম্যাচের একেবারে প্রথম দিকে নিজেদের সবচেয়ে বড় সুযোগটাই পেয়েছিল বাংলাদেশ। রাকিব হোসেনের গতির কাছে পরাস্ত কুয়েতের লেফট ব্যাক হুসেইন আলি মুহাইসেন। বল টেনে ডি-বক্সের বাইরের দেখে মাটিতে গড়ানো এক ক্রস রাকিবের।

সেই বলটা কুয়েতের অধিনায়ক খালিদ এল ইব্রাহিমের পা গলে খুঁজে নেয় শেখ মোরসালিনের পা। আগের দুই ম্যাচে দুই গোল করা মোরসালিন সম্ভবত অবাক হয়েই বল নিজের আয়ত্ত্বে নিয়েছেন। শট চালিয়েছেন বটে। তবে সেই শট গিয়ে আঘাত করে কুয়েতের গোলরক্ষকের গায়ে। ম্যাচের ১.৪৩ মিনিটের মাথায় ১-০ গোলে এগিয়ে যেতে পারতে বাংলাদেশ।

তবে সেটা হয়নি। বাংলাদেশ এরপর আর তেমন কোন আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারেনি। তবে কুয়েত বেশ কয়েকবার আক্রমণ সাজিয়ে বাংলাদেশের রক্ষণে আঘাত হেনেছে। সেই দূর্গের শেষ সেনানী আনিসুর রহমান জিকোর প্রথম অর্ধে কোন গোল হজম করতে দেননি। দুইটি দূর্দান্ত গোলের সম্ভাবনা নিজ হাতে নস্যাৎ করেন জিকো। প্রচণ্ড চাপেও বাংলাদেশ লড়াইটা করে গেছেন পুরো প্রথম অর্ধে।

গোল শূন্য ড্র নিয়েই প্রথম অর্ধ শেষ করে দুই দল। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৩ এর প্রথম সেমিফাইনালে অন্তত একপেশে ম্যাচ খেলবার বিন্দুমাত্র সুযোগ পায়নি কুয়েত। পুরো নব্বই মিনিট কুয়েতকে গোল করবার সহজ সুযোগ দেয়নি তপু বর্মণরা। অন্যদিকে মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশ আক্রমণে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। দ্বিতীয় অর্ধে, আবারও সেই রাকিব-মোরসালিন জুটির কল্যাণে তৈরি হয় গোলের সম্ভবনা।

এবারও রাকিব আগের দিন ভুটানের বিপক্ষে যেখান থেকে গোল করেছিলেন, এদিনও সেই একই জায়গা থেকে শট চালিয়েছেন। কয়েক ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে গোলবারে নেওয়া সেই শট পরাস্ত হয়েছিলেন কুয়েতের গোলরক্ষক আবদুলরহমান কামিল। কিন্তু পরাস্ত করা যায়নি ক্রসবারকে। এগিয়ে যাওয়ার সেই সুযোগও হাতছাড়া হয় জামাল ভূঁইয়ার দলের।

তবে তাতে অবশ্য টলেনি বাংলাদেশের লড়াই করবার মনোভাব। নিজেদের সর্বোচ্চটুকু উজাড় করে গোলবার অক্ষত রেখেছেন হৃদয়, বিশ্বনাথ, তারিকরা। বাংলাদেশ শেষের দিকে গোল হজম করবার অভ্যাস থেকে বেড়িয়ে ম্যাচ নিয়ে গেছে অতিরিক্ত সময়ে। অবশেষে ভাঙে বাংলাদেশের বাঁধ। ১০৭ মিনিটের সময় গোলের দেখা পেয়ে যায় কুয়েত।

ক্লান্ত বাংলাদেশ রক্ষণের মনোযোগের ঘাটতি। সেটারই সুযোগ নিয়েছেন কুয়েতের রাইট ব্যাক আবদুল্লাহ আল বালৌশি। তপুর পায়ের ফাঁক গলে অনায়াসে বল জড়িয়ে যায় জালে। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলতে থাকা আনিসুর রহমান জিকোরও কিছুই করার ছিল না সেখানটায়। বাংলাদেশ পিছিয়ে যায় ১-০ গোল ব্যবধানে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...