এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই উড়ন্ত শুরু বাংলাদেশের। জ্যোতি, রুমানা, নাহিদারা রীতিমত উড়ছেন। তবে আসরে বাংলাদেশের কঠিন পরীক্ষাটা দিতে হবে আগামীকাল। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা জিততে পারলেই সহজ হয়ে যাবে বাকি পথটুকু। সেজন্যই সিলেটের তপ্ত রোদে নারী দলের কঠোর অনুশীলন। যেখানে প্রাধান্য পেয়েছেন বাংলাদেশের স্পিনাররাই। আঙুলের মায়াজালেই আরেকবার পাকিস্তানের বিপক্ষে বিজয় উল্লাস করতে চায় বাংলাদেশ।
আত্মবিশ্বাসটা অবশ্য এসেছে এবছর বিশ্বকাপ থেকেই। নিজেদের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপেই বাংলাদেশ হারিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানকে। আর এবারতো লড়াইটা হবে নিজেদের ঘরের মাঠে। খেলাটা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হলেও কিছুদিন আগেই এই পাকিস্তানকে হারানোর জ্বলজ্বলে স্মৃতি নিগার সুলতানা জ্যোতিদের। একই বছর পাকিস্তানকে দুবার হারানোর সুযোগটা তাই হাতছাড়া করতে চাননা রুমানা আহমেদরা।
এর আগে ২০১৮ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও পাকিস্তানকে হারিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। সেজন্যই সিলেটে আরেকবার পাকিস্তান বধের স্বপ্নটা বড় হচ্ছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে জয়ের ধারাটা অব্যাহত রাখতে চায় বাংলাদেশ। আগামীকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে আত্মবিশ্বাস ঝড়লো অলরাউন্ডার রুমানা আহমেদের কণ্ঠেও।
আজ সংবাদ সম্মেলনে এসে এই ক্রিকেটার বলেন, ‘ওরা (পাকিস্তান) ওদের সেরা প্রস্তুতিটাই নিয়ে এসেছে। তবে আমরা আমাদের অ্যাটাকেই চলবো। এর আগে আমরা ওয়ানডেতে হারিয়েছি। এবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট। পাকিস্তানের বিপক্ষে কিন্তু আমরা অনেকদিন ধরেই হারছিনা। জয়টাই ধরে রাখার চেষ্টা করবো।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা হলেও নিজেদের স্পিন আক্রমণের উপরই ভরসা রাখতে চাইছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিসমাহ মারুফরা স্পিন ভালো খেললেও বাংলাদেশের স্পিনাররা আত্মবিশ্বাসী। এই স্পিন দিয়েই শেষ ম্যাচ গুলো জিতেছে বাংলাদেশ। ফলে নিজেদের শক্তির জায়গা থেকে সরে আসতে চায়না বাংলাদেশ।
রুমানা বলেন, ‘আমরা জানি ওরা স্পিন ভালো খেলে। কিন্তু আমরা তো স্পিনেই ওদের অ্যাটাক করছি প্রতিবার। আমাদের স্পিনাররাও প্রতিবার ভাল করছে। আমি মনে করি পাকিস্তানকে হারানোর জন্য আমাদের স্পিনটাই যথেষ্ট।’
ওদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের জয় পাওয়ার পর আজ প্রত্যাশিত জয় পেল, পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দলও। আক্ষরিক অর্থেই তাঁরা উড়িয়ে দিয়েছে মালয়েশিয়াকে। জয় এসেছে নয় উইকেটের বিরাট ব্যবধানে।
জয়ের মঞ্চে প্রস্তুত করে দেয় পাকিস্তানি বোলাররা। মালয়েশিয়া নির্ধারিত ২০ ওভারে নয় উইকেট হারিয়ে করে মাত্র ৫৭ রান। এলসা হান্টার একাই করেন ২৯ রান। তিনি ছাড়া আর মাত্র একজনই দুই অংকের ঘরে রান করতে পেরেছেন। তিনি হলেন ওপেনার ওয়ান জুলিয়া, করেছেন ১১ রান। অতিরিক্ত খাত থেকে এসেছে সাত রান। মানে বাকি নয়জন ব্যাটার মিলে করেন মাত্র ১০ রান।
সংক্ষিপ্ত এই স্কোরের জবাবে ব্যাট করতে নেমে সিলেটের আউটার স্টেডিয়ামে একদমই বেগ পেতে হয়নি বিসমাহ মারুফের দলকে। ওপেনার সিদরা আমিন সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন ২৩ বল মোকাবেলা করে। ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার। দলীয় ৪৫ রানের মাথায় তিনি আউট হয়ে গেলেও আর হোঁচট খেতে হয়নি পাকিস্তানকে। মাত্র নয় ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় পাকিস্তান।
পাকিস্তানের এমন জয়ে অবশ্য ঘাবড়ে যাচ্ছে না বাংলাদেশ। রুমানা আহমেদরা শুধুই মনোযোগ দিতে চান নিজেদের শক্তির দিকে। তারাও যে মাঠে দুর্দান্ত ক্রিকেটই খেলে চলেছেন। বরং ভয়টা ধরার কথা পাকিস্তান শিবিরেই। কেননা শেষ ম্যাচগুলোর ফলাফল তো বাংলাদেশের পক্ষেই কথা বলে।