ফুটবল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশ

জিতলে যাওয়া যাবে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের রাউন্ড টু-তে। আর হারলেই প্রায় বছর খানেকের নির্বাসনে চলে যেতে হতো। এই সমীকরণ নিয়েই ঘরের মাঠে মালদ্বীপের মুখোমুখি বাংলাদেশ ফুটবল দল।

জিতলে যাওয়া যাবে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের রাউন্ড টু-তে। আর হারলেই প্রায় বছর খানেকের নির্বাসনে চলে যেতে হতো। এই সমীকরণ নিয়েই ঘরের মাঠে মালদ্বীপের মুখোমুখি বাংলাদেশ ফুটবল দল। তবে দ্বিতীয় সমীকরণকে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ২-১ গোলের ব্যবধানে।

মালদ্বীপ থেকে প্রথম লেগের ম্যাচে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ দল। ঘরের মাঠে জয় ব্যতিত আর কোন চিন্তাই হয়ত ছিল না বাংলাদেশের ফুটবলারদের সামনে। তাছাড়া একেবারে কানায় কানায় পূর্ণ মাঠে পারফরম করার উজ্জীবনী শক্তি তো থাকেই। দর্শকদের হতাশ করবার আরও এক স্মৃতি উপহার দিতে চায়নি বাংলাদেশ দল।

ম্যাচের একেবারে শুরুর দিকেই ম্যাচে এগিয়ে যায় জামাল ভূঁইয়ার দল। তবে শুরুতে খানিকটা খাপছাড়াই ঠেকেছে বাংলাদেশকে। তবে সময় যত গড়িয়েছে বাংলাদেশ দল  নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। প্রতিটা মুহূর্ত মালদ্বীপের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিলেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও রাকিব হোসেন।

এই দু’জনের গতির কাছে বারংবার পরাস্ত হতে হয়েছে মালদ্বীপের রক্ষণকে। ম্যাচের ১১ মিনিটেই গোলের ঠিকানা খুঁজে নেয় ফাহিম-রাকিব জুটি। একেবারে গোললাইন থেকেই ফাহিমের বাড়িয়ে দেওয়া বা-পায়ের ক্রসকে রাকিব গোলবারের দিকে ঠেলে দেন। একেবারেই শুরুতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশের আক্রমণের ধার কমেনি এক ছটাক। বরং তারা পূর্ণ উদ্দ্যমেই নিজেদের আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকে। তবে স্রোতের বিপরীতে মালদ্বীপ ম্যাচে সমতায় ফেরে ৩৬ তম মিনিটে। আইশাম ইব্রাহিমের গোলে ম্যাচের স্কোরলাইন তখন ১-১।

তবে প্রথমার্ধেই ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিলো বাংলাদেশের সামনে। বেশ ক’বার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন ফাহিমরা। তাতে মধ্য বিরতিতে ১-১ গোলের স্কোরলাইন নিয়েই ড্রেসিং রুমে ফেরে দুই দল। তবে বিরতিতে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার টোটকা সম্ভবত বেজায় উজ্জীবিত করেছিল দলকে।

তাইতো দ্বিতীয়ার্ধের একেবারে শুরুতে ব্যবধান বাড়ায় বাংলাদেশ। ম্যাচের ৪৬ তম মিনিটে স্কোরকার্ডে নাম তুলে নেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। আগের লেগে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র গোল করা সাদ উদ্দিনের জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক হুসেইন শরিফ। তবে রিবাউন্ড হওয়া সেই বলটি খুঁজে নেয় ফাহিমের পা। ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়াতে কোন ভুল করেননি ফাহিম।

গোলের ব্যবধান তখন ২-১। বাংলাদেশ দল জয়ের পথেই ছিল। তবুও নিজেদেরকে রক্ষণের আবরণে ঢেকে না ফেলে বরং আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকে। বেশ ক’বার সুযোগও তৈরি করে সোহেল রানা, জামাল ভূইয়ারা। তবে কাজের কাজ গোল আর পাওয়া হয়নি।

অন্যদিকে মালদ্বীপও হন্যে হয়ে আরেকটি গোলের সন্ধান করতে থাকে। বেশ কয়েকবার রক্ষণে ভয় ধরানো আক্রমণ সাজায় হামজা মোহাম্মদরা। তবে মিতুল মারমা গোলবার রেখেছেন অক্ষুন্ন।  বাংলাদেশের রক্ষণ ও মিতুলের দৃঢ়তায় শেষ বাশি বাজা অবধি আর কোন গোল হজম করতে হয়নি বাংলাদেশের।

তবে ম্যাচের ৫৮ মিনিটে মিডফিল্ডার সোহেল রানা অহেতুক এক ট্যাকেল করেন। রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়া করেন। তখন বেজায় চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ দল। তবুও শেষ অবধি সেই চাপ সামলে নেয় বিশ্বনাথ ঘোষরা। ম্যাচের অন্তিম লগ্নে মুজিবুর রহমান জনিকে ফাউল করে মালদ্বীপের আহনাফ রাশিদ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।

শেষ অবধি কোন দলই গোলের দেখা পায়নি। তাতে করে ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। তাতে করে বাংলাদেশের মৃতপ্রায় ফুটবল পেয়ে যাচ্ছে আরও ৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ। এশিয়ান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশ জায়গা করে নিয়েছে ‘আই’ গ্রুপে। সেখানে তাদের জন্যে অপেক্ষমান অস্ট্রেলিয়া, ফিলিস্তিন ও লেবানন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...