বায়ার্ন ‘ম্লান’ মিউনিখ

জার্মানির ঘরোয়া লিগ বুন্দেসলিগায় সর্বশেষ ২০১০/১১ মৌসুমে শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। এরপর থেকে টানা দশ বার বুন্দেসলিগায় চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি। ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগে একটানা এতগুলো লিগ শিরোপা জয়ের রেকর্ড আর কোন ক্লাবের নেই। জার্মানির লিগে বাভারিয়ানদের আধিপত্য বোঝাতে এই কীর্তি বোধহয় যথেষ্ট।

জার্মানির ঘরোয়া লিগ বুন্দেসলিগায় সর্বশেষ ২০১০/১১ মৌসুমে শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। এরপর থেকে টানা দশ বার বুন্দেসলিগায় চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি। ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগে একটানা এতগুলো লিগ শিরোপা জয়ের রেকর্ড আর কোন ক্লাবের নেই। জার্মানির লিগে বাভারিয়ানদের আধিপত্য বোঝাতে এই কীর্তি বোধহয় যথেষ্ট।

কিন্তু এবারের মৌসুমে মিউনিখের রং বদলাতে শুরু হয়েছে, বুন্দেসলিগার সেই দাপুটে বায়ার্নকে কেমন যেন ম্লান দেখাচ্ছে। লিগের পয়েন্ট টেবিলের দিকে লক্ষ্য করলেই সেটা স্পষ্ট, সাত ম্যাচ শেষ হলেও টেবিলের টপ ফোরে জায়গা হয়নি মুলার, নয়্যারদের। ৭ ম্যাচে মাত্র ১২ পয়েন্ট জেতা দলটি আছে পাঁচ নম্বরে। তালিকার শীর্ষে থাকা ইউনিয়ন বার্লিনের সঙ্গে পার্থক্যটা পাঁচ পয়েন্টের।

আর এই ভগ্নদশার কারণ বায়ার্ন মিউনিখের সাম্প্রতিক ফর্ম। মৌসুমের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে দারুণভাবেই নিজেদের শিরোপা ধরে রাখার মিশন শুরু করেছিল জার্মান জায়ান্টরা। কিন্তু এরপরই খেই হারিয়ে বসে নাগেলসম্যানের শিষ্যরা। পরের পাঁচ ম্যাচে জিততে পেরেছে মাত্র একটি ম্যাচ, আর সর্বশেষ চার ম্যাচে একবারও পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি তাঁরা।

বুন্দেসলিগায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফ্র্যাঙ্কফুর্টকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। পরের ম্যাচে উলফসবার্গকে হারিয়েছিল ২-০ ব্যবধানে। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আরো ভয়ংকর রূপ ধারণ করে ক্লাবটি; ভিএফএল বোছুমের জালে সাতবার বল জড়ায় তারা। হয়তো তাই ভিএফএল বোছুমের অভিশাপ নেমে এসেছিল বায়ার্ন মিউনিখের ভাগ্যে।

বরুশিয়া এম’গ্লাডবাচের বিপক্ষে ড্র দিয়ে শুরু হয় বায়ার্ন মিউনিখের পতন, এরপর ইউনিয়ন বার্লিন এবং ভিএফবি স্টুটগার্টের বিপক্ষেও জিততে পারেনি, পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছিল। আর সর্বশেষ এফসি অগসবার্গের সাথে তো হেরেই বসেছে বাভারিয়ানরা। ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেও কেন যেন আকাঙ্খিত ফলাফল পাচ্ছে না দলটি।

মূলত গোল স্কোরিং সমস্যায় ভুগছে বায়ার্ন মিউনিখ। নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচে ১৫ গোল করা মুলার, কোম্যানরা শেষ চার ম্যাচে করেছে মাত্র চার গোল। প্রায় প্রতি ম্যাচেই সুযোগ সৃষ্টি কিংবা গোলমুখে শট নেয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে বায়ার্ন, কিন্তু গোল করার ক্ষেত্রে ঠিকই ব্যর্থ হতে হয়। বায়ার্ন মিউনিখের চলতি মৌসুমের খেলা দেখলে উপলব্ধি করা যায় যে একজন ‘নাম্বার নাইন’-এর কতটা অভাব বোধ করছে তাঁরা।

অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দেখা মিলেছে বিপরীত দৃশ্য। লিগের খেলায় বিবর্ণ বায়ার্ন মিউনিখ ইউরোপীয় টুর্নামেন্টে ধরে রেখেছে দাপুটে পারফরম্যান্স। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচে ইন্টার মিলানকে ২-০ গোলে হারানোর পর, বার্সেলোনাকেও হারিয়েছে একই ব্যবধানে। যদিও নিজেদের গ্রুপের সবচেয়ে বড় দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারানোর আত্মবিশ্বাস ঘরোয়া লিগে কাজে লাগাতে পারছে না বায়ার্ন মিউনিখ।

টানা ব্যর্থতায় আলোচনার জন্ম হয়েছে কোচ জুলিয়ান নাগেলসম্যানের চাকরি নিয়েও। যেকোনো সময় হয়তো এই ট্যাকটিশিয়ানকে বরখাস্ত করবে বায়ার্ন মিউনিখ – এমন অপেক্ষায় রয়েছে ভক্ত-সমর্থকরা। তবে আপাতত সেই আলোচনায় জল ঢেলে দিয়েছেন ক্লাবের সিইও অলিভার কান৷ কিংবদন্তি এই গোলরক্ষককে জানিয়ে দিয়েছেন যে নাগেলসম্যানের উপর পূর্ণ ভরসা আছে তাদের।

ইউরোপিয়ান ফুটবলে এখন শুরু হয়েছে বিরতি, আন্তর্জাতিক ফুটবল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠবে সবাই। আর এই বিরতির সময়টা কাজে লাগাতে পারলেই ঘুরে দাঁড়াবে বায়ার্ন মিউনিখ। নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে আবারও পুরোনো ছন্দে ফেরার লক্ষ্য মাথায় রেখে এরই মাঝে হয়তো কাজে নেমে পড়েছে নাগেলসম্যান। কিন্তু যদি সেখানেও ব্যর্থ হন তিনি, তাহলে ধরে নেয়া যায় যে বায়ার্ন মিউনিখের সামনে আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...