বাজবল অল দ্য ওয়ে

টেস্টে ইংল্যান্ডের স্বর্ণালী দিন ফিরেছে খুব বেশিদিন হয়নি। এইতো কিছুকাল আগেই অধিনায়ক জো রুট যখন দায়িত্বে ছিলেন, টেস্টে বড্ড দুর্দিন পার করছিলেন ইংরেজরা। পরিসংখ্যান বলে, তখন সতেরোটি টেস্ট খেললেও তন্মধ্যে মাত্র একটি টেস্টে জয়ের মুখ দেখেছিলেন রুটরা! কিন্তু হঠাৎ করে চিত্র বদলে গেল ইংল্যান্ডের।

টেস্টে ইংল্যান্ডের স্বর্ণালী দিন ফিরেছে খুব বেশিদিন হয়নি। এইতো কিছুকাল আগেই অধিনায়ক জো রুট যখন দায়িত্বে ছিলেন, টেস্টে বড্ড দুর্দিন পার করছিলেন ইংরেজরা। পরিসংখ্যান বলে, তখন সতেরোটি টেস্ট খেললেও তন্মধ্যে মাত্র একটি টেস্টে জয়ের মুখ দেখেছিলেন রুটরা! কিন্তু হঠাৎ করে চিত্র বদলে গেল ইংল্যান্ডের।

প্রথমে বর্তমান বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডকে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করা এবং তারপর এজবাস্টনে প্রায় হারতে বসা টেস্টটির মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে জয় ছিনিয়ে নেয়া –  টানা চার টেস্ট জয়ে এ যেন এক অন্যরকম ইংল্যান্ড দল। ফর্মে ফিরে আসা এই ইংল্যান্ড দলের নেপথ্যে নি:সন্দেহে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের নাম উচ্চারিত হবে। দলের সবাই তাঁকে ডাকে ‘বাজ’ নামে।

ম্যাককুলাম ইংল্যান্ড দলের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সফলতার মুখ দেখতে শুরু করেছে দলটি। নতুন কোচ ম্যাককুলামের দিকনির্দেশনায় এবং নতুন অধিনায়ক বেন স্টোকসের নেতৃত্বে বোলা যায় ইংল্যান্ড টেস্টে আগ্রাসী এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। ‘শান্ত থাকো এবং ঝড় তুলো’ মন্ত্রধারী, ড্রেসিং রুমে শক্তিশালী দলকে অনুপ্রাণিত করার মতো কোচ ইংল্যান্ড আগে পায় নি।

খোদ ইংল্যান্ড দলের ক্রিকেটারদের এই শক্তিশালী কোচকে নিয়ে ভাবনা কি তা জেনে নেয়া যাক।

  • আমরা টেস্ট ক্রিকেটের ঐতিহ্য তৈরি করতে চাই: বেন স্টোকস

যখন স্টোকস ম্যাককুলামের নিয়োগের কথা শুনেছিলেন, তখনই তিনি এই সিদ্বান্তের যাথার্থতা অনুভব করেছিলেন। তাঁর নিজের অনুরূপ মানসিকতার একজন কোচ তাঁকে বেশ সাহায্য করতে পারবেন বুঝেছিলেন। অবশ্য ম্যাককুলাম ইতোমধ্যেই বলেছেন যে, ‘স্টোকস তার চেয়েও বেশি আক্রমণাত্মক এবং ইতিবাচক মানসিকতার। আমি মনে করি এখানে ইতিবাচক শব্দটি প্রযোজ্য। সবধরনের পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে আমরা নিজেদেরকে খুঁজে বের করতে চাচ্ছি এবং সবসময় ইতিবাচক জিনিসটি কী তা দেখছি। উদাহরণস্বরূপ, এজবাস্টনে চতুর্থ দিনে আমরা নাইটওয়াচম্যানের নাম পরিবর্তন করেছি। আমরা একেনাইট হক’ বলে ডাকতাম। এই মুহুর্তে দল নিয়ে আমরা যেখানে আছি তা বেশ দুর্দান্ত।’

তিনি আরও বলেন, আমরা টেস্ট ক্রিকেটের লেগেসি তৈরি করতে চাই। আমরা সাদা বলের ক্রিকেটেও তা ইতোমধ্যেই করছি। আমরা দেখেছি অন্য দলগুলো কিভাবে আমাদের সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করে।’

  • কখনো এরকম অভিজ্ঞতা হয়নি: জ্যাক লিচ 

জ্যাক লিচ অ্যাশেজ সিরিজে বিধ্বস্ত হয়ে যখন আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলেন। দায়িত্ব নেয়ার সাথে সাথে ম্যাককুলাম এবং বেন স্টোকস এই বাঁহাতি স্পিনারকে আত্ম-সন্দেহের বিরুদ্ধে বুস্টার ডোজ দেওয়ার কাজ করছেন। যাতে তিনি আত্মবিশ্বাস অর্জন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। এমনকি ম্যাককুলাম মঈন আলীকে ডেকে আন্তর্জাতিক টেস্ট থেকে তার অবসর পুনর্বিবেচনার জন্যও বুঝিয়েছেলিন।

জ্যাক লিচ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আপনি বুঝতে পেরেছেন যে দলগুলিতে আমি খেলেছি, আমি যেভাবে ভেবেছি, সেখানে নেতিবাচকতার ভিত্তিতে অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চার বা পাঁচ দিনের অনেক খেলায় আমরা খুব তাড়াতাড়ি জয়ের আশা ছেড়ে দেই। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আমরা সবসময় জয়ের জন্যই চাপ নিচ্ছি, তাই সত্যি বলতে খুব খারাপ পরিস্থিতি বলে কিছু হয়না। আমার জন্য সবচেয়ে বড় বিষয় হল আত্মবিশ্বাস রাখা, এবং এটাই বেন এবং বাজ (ম্যাককুলাম) আমাকে সাহায্য করেছে। দলের অংশ হওয়া খুবই বিশেষ ব্যাপার। স্টোকসের অধীনে খেলার ধরণ সত্যিই আক্রমণাত্মক, এবং আমি আসলেই আক্রমণাত্মক বোলিং উপভোগ করছি। স্টোকসি তাঁর সিদ্ধান্ত ও আমদের উপর আত্মবিশ্বাস রাখে। খেলোয়াড় হিসেবে আমি আগে এর মতো কিছু অনুভব করিনি।’

  • এই প্রথম আমি অনুভব করেছি যে আমি তিন নম্বর হতে পারি: অলি পোপ 

অ্যাশেজের পরাজয় পোপকে দলে তার জায়গা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় রেখেছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ থেকে বাদ পড়ার পর তাঁর আত্ম-সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। ইংল্যান্ডের সাবেক খেলোয়াড়রা তার ব্যাটিংকে “আতঙ্কের” বলে অভিহিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন পোপ নিজেকে আউট করার উপায় খুঁজে বেড়ান।

“আমি কর্ণওয়ালে উপকূলে কয়েক দিন অবকাশে ছিলাম। তখন আমি এমন একটি নম্বর থেকে কল পেয়েছিলাম, যা আমি চিনতে পারিনি। ফোনের অন্যপ্রান্তে ছিল বাজ (ম্যাককুলাম)। আমি সে সময়ে চমকপ্রদ খবর আশা করছিলাম না, কিন্তু বাজ বলেছিল ‘তুমি দলে থাকবে’। আমার মনে আছে, তখন আমি আমার পোষা কুকুরের সাথে একটু উদযাপন করেছিলাম। এবং সে আরও জানালো ‘তুমি তিন নম্বরে ব্যাট করতে যাচ্ছ’। সেই সুযোগ আমাকে স্বাভাবিক খেলা খেলতে দিয়েছে এবং আমাকে আরো বেশি আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। আমি সবকিছুকে একটু বেশি ইতিবাচকভাবে দেখতে শুরু করেছি। কারণ আমি সারে-তে যা করেছি এবং তা আমাকে বেশ সাফল্য এনে দিয়েছে। যা আমি উপভোগ করেছি। আপনি এটিকে লাল বলের প্রত্যাবর্তন বা যাই বলুন না কেন, আমি এটির প্রতিটি মিনিটকে ভালবাসতে শুরু করেছি। এই প্রথম আমি অনুভব করলাম যে, আমি লাল বলের ক্রিকেটে তিন নম্বর হতে পারি।”

  • সম্পূর্ণ ভিন্ন মানসিকতা নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া: জেমস অ্যান্ডারসন 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ থেকে বাদ পড়ায় এন্ডারসন বিরক্ত ছিলেন এবং ম্যাককুলাম আসার পর তার ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল ভেবেছিলেন। কিন্তু ঠিকি ম্যাককুলাম তাঁকে দলে সুযোগ দিয়ে ফিরিয়ে আনলেন।

ম্যাককুলামকে নিয়ে অ্যান্ডারসন বলেন, ‘প্রতিপক্ষ দল যখন দুইটি শতকের বড় পার্টনারশিপের কাছাকাছি ছিল স্বাভাবিকভাবে আমরা এ নিয়ে হতাশ ছিলাম। কিন্তু সেই মুহূর্তে যখন কোচ বলে পরেরদিন নিয়ে উত্তেজিত তখন আপনি এই পজিটিভিটি দেখে সম্পূর্ণ ভিন্ন মানসিক অবস্থা নিয়ে ঘুমাতে পারবেন। আমি আগে এমন কোন ড্রেসিং রুম দেখিনি যেখানে আমরা বাঁকানো পিচে ৩০০ তাড়া করা অবস্থায়ও সবাই এত শান্ত ছিল, এবং দৃঢ় বিশ্বাস রেখেছিলো যে আমরা তাদের ধরে ফেলব। ২০ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতায় এই প্রথম দেখেছি, আমাদের ব্যাটাররা সেই কঠিন মুহূর্তেও দারুণ আত্মবিশ্বাস রেখেছে, তারা নির্ভীক ছিল।’

  • ম্যাককুলাম একটি দুর্দান্ত চরিত্র: জ্যাক ক্রাউলি

জ্যাক ক্রাউলি ম্যাককুলামকে নিয়ে বলেন, ‘আমি ব্রেন্ডন ম্যাককুলামকে নিয়ে উত্তেজিত। আমি তাকে খেলতে দেখতে ভালোবাসতাম এবং আমি তাঁকে কোচ হিসেবে কাজ করতে দেখতে চাই। তিনি আসলে আমার জন্য উপযুক্ত, বেশ ইতিবাচক একজন কোচ। তিনি স্পষ্টতই ক্রিকেটেও একটি দুর্দান্ত চরিত্র।’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষে ম্যাককালাম ক্রাউলিকে নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমার কাছে ক্রাউলি একটি বিরল প্রতিভা। আমি মনে করি না বিশ্ব ক্রিকেটে তার মতো খেলোয়াড় আছে। আমি প্রথম এসে তাকে নেটে খেলতে দেখেছিলাম এবং একজন খেলোয়াড় হিসেবে তাকে বোঝার জন্য তার কিছু পুরনো ইনিংস এর কিছু ফুটেজ দেখেছিলাম। খুব দ্রুতই বুঝে গিয়েছিলাম যে, তাঁর মধ্যে এমন কিছু আছে যা অন্য খেলোয়াড়দের নেই।’

ম্যাককুলাম ক্রাউলিকে উপদেশ দিয়্যেছিলেন তাঁর নিজের সেরা ভার্সন টা হতে।

  • তাঁর ক্রিকেট মস্তিষ্ক সারাক্ষণ কাজ করে: স্টুয়ার্ট ব্রড

এন্ডারসনের মতো ব্রডও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলের বাইরে ছিলেন। তিনিও ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিয়তাঁর মধ্যে ছিলেন। ম্যাককালামকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘ম্যাককালামের একটি ক্রিকেট মস্তিষ্ক রয়েছে যা সারাক্ষণ কাজ করে। সে সারাক্ষণ ভাবছে কীভাবে আমরা খেলাটি পরিবর্তন করতে পারি। শুধু যারা সেঞ্চুরি করে সেদিকেই নয়, তিনি সব ছোট ছোট জিনিস, ফিল্ডিংয়ের বিট সবকিছুতে মনোযোগ দেন। যেসব বিষয় খেলার গতি পরিবর্তন করতে সক্ষম। এখন চেঞ্জিং রুমে সত্যিই উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ থাকে, যা খুব ইতিবাচক ব্যাপার। খেলায় কিভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় সেই চিন্তাটাই থাকে সবার মনে।’

‘চলো বিপদকে আক্রমণ করা যাক, বিপদের দিকে দৌড়ানো যাক’ – এভাবে বাজ দলকে অনুপ্রাণিত করতে থাকেন।

  • আমি জাদেজাকে প্রথম বলে ছয় মারতে চেয়েছিলাম: অ্যালেক্স লিস

অ্যালেক্স লিস বলেন, ‘বেন এবং বাজ এর সমর্থন আমার খেলার আক্রমণাত্মক ধরণকে ত্বরান্বিত করেছে। সত্যি বলতে, আমি জাদেজাকে প্রথম বলে ছয় মারতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ইয়র্কার এর কৌশলে পড়ে যাই। যেখানে ফিল্ডাররা ছিল না সেখানে আমি শুধু বল মারার চেষ্টা করেছ। যদিও আমি যেমনটা চেয়েছি তেমন ফল পাইনি। আমি বড় সেঞ্চুরি করতে চাই- ওপেনিং ব্যাটার হিসেবে এভাবেই আমার ভূমিকা রাখতে হবে।’

  • আমরা এখনও অজানার দিকে যাচ্ছি: জো রুট

জো রুটের ব্যাটিং নিয়ে কারোরই কোনো সন্দেহ ছিল না। কিন্তু প্রশ্ন ছিল কীভাবে তিনি অধিনায়কত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দেয়াকে নিবেন এবং নতুন পদ্ধতির সাথে কিভাবে মানিয়ে নিবেন তা নিয়ে। সন্দেহ ছিল ম্যাককুলামের জোয়ারে তিনি কি নিঃশব্দে হারিয়ে যাবেন নাকি আরো চমৎকারভাবে জ্বলে উঠবেন!

জো রুট বলেন,বেন চেয়েছিল আমরা যেন বিনোদন দেই। সে চেয়েছিল আমরা যেন মাঠের রকস্টার হই।’

রুট আরও বলেন যে, ‘পুরো ব্যাপারটি ছিল আনন্দলাভের চেষ্টা করা এবং যতগুলো সুযোগ আসবে সেগুলো কাজে লাগিয়ে সবাইকে উপভোগ করতে দেয়া। আমি মনে করিনা আমি কখনো রকস্টারের মতো দেখতে বা উপলব্ধি করতে পারবো। কিন্তু খুব সম্ভবত, আজ দশ সেকেন্ডের মতো হলেও আমি তা করতে পেরেছি।’

আশা করি আমরা এখনও অজানার দিকে যাচ্ছি এবং সামনে আরও অনেক কিছু আসবে। আমরা যা করছি, তাতে আমাদের শুধু বিশ্বাস রাখতে হবে। চমৎকার চারটি বা তার বেশি সপ্তাহ পার হয়েছে এবং আমি মনে করি যে এখনও আরও অনেক কিছুর সম্ভাবনা রয়েছে, যা খুবই উত্তেজনাপূর্ণ।’, যোগ করেন তিনি।

  • ম্যাককুলাম টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে: বেন ফোকস

বেন ফোকস সাধারণৎ জশ বাটলারের উপস্থিতির জন্য টেস্ট দলে জায়গা পান না। এবং ম্যাককালাম যখন দলের দায়িত্ব নেন ক্রিকেটের এই ঘরানাটি নিয়ে ফোকস এর মনে অনেক সন্দেহ কাজ করছিল। তিনি বলেন, ‘আমার কয়েকটি প্রশ্ন ছিল এবং আমি কীভাবে খেলতে চাই তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ছিলাম। ম্যাককালাম আমার সকল সন্দেহ দূর করে দেয়। তার সাথে খোলামেলা আলোচনা করা আমার জন্য ভাল ছিল। তিনি টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে। কিন্তু ইংল্যান্ডের হয়ে খেলাটা কতটা আশ্চর্যজনক হতে পারে তা গত দুই সপ্তাহে অনুধাবন করেছি।’

টেস্ট ক্রিকেটে আমার দৃষ্টিভঙ্গি সর্বদা সহনশীলতার ও সমীকরণের ছিল। কিন্তু যখন আপনি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেন, তখন এর আরেকটি দিক থাকেবিনোদন ফ্যাক্টর। যেটি ম্যাককুলাম আমাকে অনুধাবন করিয়েছে।

  • ম্যাককুলামের সাথে ফোন কলটি চিরকাল আমার মনে থাকবে: ক্রেইগ ওভারটন

কাউন্টি ক্রিকেটে ক্রেইগের সতীর্থ হলেন বেন স্টোকস। কাউন্টিতে দারুণ ফর্মে থাকা এ ক্রিকেটার নিশ্চিত ছিলেন না তিনি দলে ডাক পাবেন কিনা। কিন্তু মার্ক উড, ক্রিস ওকস এবং জোফরা আর্চারের ইনজুরি এবং অ্যান্ডারসনকে বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাকে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্টের জন্য ডাক পাঠায়।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ফোনে একটি মিসড কল ও একটি টেক্সট দেখেতে পাই। ম্যাককুলাম আমাকে কল ব্যাক করতে বলেছেন। সেই স্মৃতি আমার চিরকাল মনে থাকবে। এর কয়েক সপ্তাহ পর আমি বেন স্টোকসের কাছ থেকে কল পাই। যিনি আমাকে বলেছিলেন আমি যেন সারে-র জন্য যা করি ঠিক তাই করি।’

  • তিনি আমাকে যা বলেছিলেন তা ছিল মাঠে গিয়ে নিজেকে চাপিয়ে দিতে: জনি বেয়ারস্টো

অর্ডার আপ- ডাউন হতে ক্লান্ত হয়ে, উইকেটকিপিং গ্লাভস খুলে ফেলায় হতাশ, বেয়ারস্টো সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তেমন খুশি ছিলেন না। তাকে চাপ দূর করার জন্য এবং তাকে নিজের মতো হতে বলার জন্য তার কাউকে দরকার ছিল। সে ভূমিকাই পালন করেছেন ম্যাককালাম।

বেয়ারস্টো এ ব্যাপারে বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমাকে আমার মতো হওয়া। তিনি আমাকে যা বলেছিলেন তা ছিল, মাঠে গিয়ে নিজেকে চাপিয়ে দিতে। এটি একটি উত্তেজনাপূর্ণ ছিল এবং সেভাবে আমি সবসময় আমার ক্রিকেট খেলেছি। আমি তরুণ জনির কাছে ফিরে গেছি, যেখানে আপনি শুধু বল পেটাতে দেখছেন এবং দেখছেনই।’

  • ম্যাককুলাম মহান মানুষ: স্যাম বিলিংস

বেন ফোকস কোভিড আক্রান্ত হওয়ার ফলে স্যাম বিলিংস তাঁর জায়গায় উইকেটকিপিংয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। আইপিএলে কেকেআরের সাথে থাকাকালীন সময় থেকে তিনি ম্যাককালামকে ভালভাবে চিনতেন। বলা বাহুল্য, তিনি ইতিমধ্যেই বাজবলে বিক্রি হয়েছেন। বিলিংস ম্যাককালামকে নিয়ে বলেন, ‘সর্বোপরি ম্যাককালাম একজন মহান মানুষ। তিনি ইতিমধ্যেই দলে যে প্রভাব ফেলেছেন তাতে আমি বিস্মিত নই। তিনি ইংলিশ ক্রিকেটে একটি অসাধারণ সংযোজন হবেন। ইংল্যান্ড দলকে বিকশিত করতে সাহায্য করার জন্য তিনিই সঠিক ব্যক্তি, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

একজন যোগ্য শিক্ষক যেমন বদলে দিতে পারে একঝাঁক শিক্ষার্থীর জীবন, ইংল্যান্ড দলের বেলায় সেই যোগ্য শিক্ষকের ভূমিকায় ধরে নেয়া যায় ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে। যার সঠিক পথপ্রদর্শনে নতুন করে টেস্টে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। এবার ম্যাককুলামের ছায়াতলে বিশ্বজয়ের পালা ইংলিশদের।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...