শেষ ম্যাচ, সংগ্রহ ৩০৬। ধুলিসাৎ হওয়া স্বপ্নের ধূলিকণা ঝেড়ে অন্য এক লড়াইয়ে বাংলাদেশ দল। ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ পাওয়ার লড়াই। তাতে নিজেদের হাতে থাকা কাজটুকু বাংলাদেশ ভালভাবেই করতে পেরেছে। তবুও যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ নেই।
শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নামতে হয় বাংলাদেশের ব্যাটারদের। শুরুটা হয়েছিল দারুণ। সব গ্লানি পেছনে ফেলে লিটন কুমার দাস ও তানজিদ হাসান তামিম দেখে-শুনে শুরু করলেন। বাইশ গজে থিতু হলেন। আশা দেখাচ্ছিলেন বড় রানের। কিন্তু হুট করেই ছন্দপতন।
দ্রুতই ফিরে গেলেন দুই ওপেনার। তানজিদের দূর্বলতা শর্ট বল। ৩৬ রানের ইনিংসে চতুর্থ শর্ট বলেই আউট হয়ে ফিরেছেন। লিটন দাসের আউটটা রীতিমত বিরক্তিকর। লিটন কখনোই পাওয়ার শট খেলেন না। তবুও লং অনে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দেওয়া নিশ্চিতভাবেই দৃষ্টিকটু।
অন্যদিকে এদিন তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ৭৪ রানের ইনিংস। তিনিও নিদেনপক্ষে শত রানের আশার প্রদীপ জ্বেলেছিলেন। তবে যখনও একটু রান তোলার গতি বাড়ানো প্রয়োজন হয়ে পড়ে তখনই তিনি সাজঘরে, বড় শট খেলতে গিয়ে।
নাজমুল হোসেন শান্ত অধিনায়কোচিত এক ইনিংস খেলার পথে আউট হয়েছে ৪৪ রান করে। রান আউটে কাটা পড়েছেন তিনি। তবে সেখানেও তার নিজের সিদ্ধান্তের বলি হতে হয়েছে তাকে। এই ঘটনাগুলোই আসলে বাংলাদেশের ব্যাটারদের সামর্থ্যের দিকে প্রশ্ন তোলে।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের দূর্বলতা রয়েছে। স্কিলের দূর্বলতার ঘাটতি হয়ত চেষ্টা চালিয়ে সমাধান করা সম্ভব। তবে মানসিক সমস্যা অবশ্য পরিপক্কতার ফসল। বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাটারই সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। তারা কখন কোন শট খেলবেন, কখন ব্যাট চালাবেন এসব নিয়ে দ্বিধায় থাকেন প্রচণ্ড।
তাছাড়া বলের মেরিট বুঝে শটের দিক নির্ধারণেও বেশ দূর্বলতা রয়েছে লিটন, তানজিদদের। এছাড়াও শট নির্ধারণেও বেশ ধুকতে দেখা যায় বাংলাদেশের ব্যাটার। এসব কারণেই বড় সংগ্রহগুলো স্বল্পতেই মুখ থুবড়ে পড়ে। তাছাড়া উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার ঘটনাও কম ঘটেনা বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংস। যা মূলত ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝতে না পারা ঘাটতি।
ঠিক সে কারণেও শেষের দিকে সেট ব্যাটারদের অভাবে ৩৪০ দলীয় রান হওয়ার সম্ভাবনা থেমে যায় ৩০০ এর কাছাকাছি জায়গায়। বাংলাদেশের ব্যাটাররা পাওয়ার হিটার নন। তারা শেষের দিকে গায়ের জোরে দ্রুত রান কিংবা বিশাল সব শট খেলতে পারেননা। এই বিষয়টি মেনে নিয়েছে সকলে।
তবে ক্রিকেটীয় স্কিল আর মানসিকতার ঘাটতি অন্তত পুষিয়ে নেওয়া উচিত দলের। নতুবা ব্যক্তিগত সংগ্রহ মাঝারি মানের ইনিংসেই থমকে যাবে। পাশাপাশি মাঝারি সংগ্রহতেই সন্তুষ্টি খুঁজে নিতে হবে গোটা দলকে। তাতে আখেরে দলটা মাঝারি মানেরই থেকে যাবে।
বর্তমানে বিশ্বক্রিকেট ব্যাটারদের বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকে। তাই বোলারদের ম্যাচ জেতাতে স্কোরবোর্ডে রান থাকা চাই। বাংলাদেশের জয়ের মাঝে ফারাক গড়ে দিচ্ছে সেটাই। পরিবর্তন আসা প্রয়োজন। তবে সেটা কবে নাগাদ আসবে তা অনিশ্চিত।