১৯৭১ সালের ৫ জানুয়ারিতে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। তারপরে পেরিয়ে গেছে প্রায় ৫০ বছর। এই ৫০ বছরে ৪০০০ এরও অধিক ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরও হয়েছে ১২টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ।
এসব ম্যাচ বছরের পর বছর উপহার দিয়েছে অনেক নখ কামড়ানো মুহূর্ত, এক এক জন খেলোয়াড়ের অসাধারণ নৈপুণ্য। এসবের মধ্যে থেকে সেরা দশটি ম্যাচ বের করা অনেক কঠিন এবং বিতর্কিত একটা কাজ। এই কাজটাই করেছে ইয়াহু. ক্রিকেট ওয়েবসাইট।
- শ্রীলঙ্কা বনাম অস্ট্রেলিয়া: প্রথম ওয়ানডে (৩ নভেম্বর ২০১০), মেলবোর্ন
এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে ২৩৯ রান সংগ্রহ করে। জবাব দিতে নেমে মাত্র ১৯ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। কুমার সাঙ্গাকারা এবং মাহেলা মিলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৪ রান যোগ করেন। কিন্তু তারপরেই শুরু হয় অজি বোলারদের দাপট।
মাত্র ১০৭ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। ক্রিজে আসেন লাসিথ মালিঙ্গা, তিনি ২৩ বছরের অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস এর সাথে নবম উইকেট জুটিতে ১৩২ রান যোগ করেন। মালিঙ্গা ৪৮ বলে ৫৬ করে ফিরে গেলে উইকেটে আসেন মুরালি। তিনি বাউন্ডারি মেরে দলকে ১ উইকেটের জয় এনে দেন। ওপর প্রান্তে ম্যাথিউস ৮৪ বলে ৭৭ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলেন। এবং ম্যাচে তিনি ম্যান অফ দ্যা ম্যাচও নির্বাচিত হন।
- ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা: প্রথম ওয়ানডে (১৫ ডিসেম্বর ২০০৯), রাজকোট
ভারত প্রথমে ব্যাট করে বীরেন্দ্র শেবাগের ১০২ বলে ১৪৬ রানে তারা ৪১৪ রান সংগ্রহ করে। দলের পক্ষে শচীন টেন্ডুলকার ৬৯, মহেন্দ্র সিং ধোনি ৭২ রান করেছিলেন।
জবাব দিতে নেমে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরাও ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেন। মাত্র ২৪ ওভারেই তারা ১৮৮ রান তুলে ফেলে। উপুল থারাঙ্গা ৬০ বলে ৬৭ রান করে ফিরে গেলে কুমার সাঙ্গাকারা ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৪৩ বলে ৯০ রানের ইনিংস খেলেন। ৩৭ তম ওভারে সাঙ্গাকারা আউট হয়ে গেলে তখনও তাদের দরকার ছিল ৭৮ বলে ৮৯ রান। কিন্তু মাত্র চার ওভারের মধ্যে দিলশান ১২৪ বলে ১৬০, এবং মাহেলা জয়াবর্ধনে ৩ ও সনাথ জয়াসুরিয়া ৫ রান করে বিদায় নিলে চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
শেষ দুই ওভারে তাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৫ রান। ৪৯ তম ওভারে তারা সংগ্রহ করতে পারে মাত্র ৪ রান সাথে দুইটি উইকেটও হারিয়ে ফেলে। ৫০ তম ওভারে বল করতে আসে আশিস নেহেরা, এই ওভারে তিনি মাত্র ৭ রান দিয়ে ভারতের ৩ রানের জয় নিশ্চিত করেন।
- নিউজিল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া: বিশ্বকাপ (২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫), অকল্যান্ড
১৩ ওভারে ৮০ রানে ২ উইকেটে, এই সময় মঞ্চে অবতীর্ণ হলেন ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি। মাত্র ৩২.২ ওভারে অস্ট্রেলিয়াকে গুটিয়ে দেন ১৫১ রানে। বোল্ট নেন ৫ উইকেট, সাউদি ২।
ব্যাটিংয়ে নেমে ম্যাককালাম শুরু করেন ঝড়ো গতির ব্যাটিং। স্টার্ক, জনসনদের এমন পেটানো শুরু করেন যে দেখে মনে হচ্ছিলো খেলা ২০ ওভারের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
সেই সময় অস্ট্রেলিয়া কে ম্যাচে ফেরান স্টার্ক ও কামিন্স। কামিন্স তুলে নেন মাকালামকে এবং স্টার্ক প্রায় গোটা মিডিল অর্ডারকে। একসময় তো নিউজিল্যান্ড ১৪৬ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়। কিন্তু বরফশীতল উইলিয়ামসন কামিন্স কে লং-অফ বাউন্ডারিতে উড়িয়ে নিউজিল্যান্ডকে ১ উইকেটের জয় এনে দেন।
- ভারত বনাম ইংল্যান্ড: ফাইনাল, ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ (১৩ জুলাই,২০০২), লর্ডস
ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয় ভারত এবং ইংল্যান্ড। ট্রেসকোথিকের ১০৯ এবং নাসের হুসেইনের ১১৫ রানে ইংল্যান্ড ৩২৫ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে একসময় ভারতের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ১৪৬ রান।
আউট হয়ে ফিরে গেছেন শচীন, সৌরভ, দ্রাবিড়। কিন্তু ক্রিজে ছিলেন মোহাম্মদ কাইফ এবং যুবরাজ সিং। ম্যাচে তখন থেকেই শুরু হলো যুবরাজ- কাইফ শো। দুইজনের সম্মিলিত বয়স ছিল মাত্র ৪১। এই জুটি ১০৬ বলে যোগ করে ১২১ রান। যুবরাজ ৬৯ রান করে ফিরে গেলেও একপ্রান্তে কাইফের অপরাজিত ৮৭ রানের উপর ভর করে ২ উইকেট এবং তিন বল বাকি থাকতেই জয় পায় ভারত।
- নিউজিল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া: তৃতীয় ওয়ানডে (২০ ফেব্রুয়ারি ২০০৭), হ্যামিল্টন
প্রথমে ব্যাট করে ম্যাথু হেইডেনের ১৬৬ বলে অপরাজিত ১৮১, ওয়াটসনের ৬৮ হাডিনের ৩৮ রানের উপর ভর করে ৫ উইকেটে ৩৪৬ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া।
নিউজিল্যান্ডের সূচনা হয় খুবই ভয়াবহ। ব্যাটিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ড মাত্র ৯.১ ওভারেই ৪১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেন। তারপরে ঝড়ো একটা হাফ সেঞ্চুরি করেন পিটার ফুলটন। দলীয় ১১৭ রানে তিনিও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। তারপরে ক্রেইগ ম্যাকমিলানের ৯৬ বলে ১১৭ এবং ম্যাককালামের অপরাজিত ৯১ বলে ৮৬ রানে তারা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম হয়।
ম্যাকমিলান যখন আউট হয়ে গেলেন তখনও তাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫২ বলে ৬৬ রান। হাতে ছিল মাত্র ৪ উইকেট। শেষ দিকে মার্ক গিলেস্পির ১৫ বলে ২৮ রানের একটা ক্যামিও ইনিংস খেলেন। শেষ ওভারে তাদের দরকার ছিল ৭ রান। সেই সময় ম্যাককালামের ছক্কায় ম্যাচ লেভেল হয়ে যায়। নিউজিল্যান্ডও ম্যাচটিতে ১ উইকেটের জয়লাভ করে।
- অস্ট্রেলিয়া বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ: পঞ্চম ম্যাচ, বেনসন অ্যান্ড হেজেজ সিরিজ (১ জানুয়ারি ১৯৯৬), সিডনি
মাইকেল বেভানকে শ্রেষ্ঠ ফিনিশার হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমে ব্যাট করে ৪৩ ওভারে ১৭৩ রান সংগ্রহ করে। দলের পক্ষে কার্ল হুপার ৯৬ বলে অপরাজিত ৯৩ রানের ইনিংস খেলেন।
টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ৩৮ রানের মধ্যেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে। বেভান, তার সঙ্গী ইয়ান হিলি এবং পল রাইফেলকে সাথে নিয়ে টার্গেটে খেলতে থাকেন। শেষ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ৭ রান হাতে আছে মাত্র দুই উইকেট। স্ট্রাইক প্রান্তে ছিলেন শেন ওয়ার্ন।
শেষ ওভারের বলগুলো ছিল এরকম ডট,ওয়াইড,রানআউট,দুই রান, ডট বল, শেষ পর্যন্ত দাঁড়ালো ১ বলে চার রান দরকার। শেষ বলে মাইকেল বেভান রজার হারপারকে ডাউন দ্যা গ্রাউন্ডে বাউন্ডারি মেরে দেন। এই ম্যাচে তিনি ৮৮ বলে অপরাজিত ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এবং দলকে এক অসম্ভব জয় এনে দিয়েছিলেন।
- পাকিস্তান বনাম ভারত: ফাইনাল, অস্ট্রেলশিয়া কাপ (১৮ এপ্রিল ১৯৮৬), শারজাহ
কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত, সুনীল গাভাস্কার এবং দিলীপ ভেংসরকারের হাফ সেঞ্চুরিতে ২৪৬ রান সংগ্রহ করে ভারত।
টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৬১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। সেখান থেকে জাভেদ মিয়ান্দাদের সেঞ্চুরি, সেলিম মালিক এবং আব্দুল কাদিরের ছোট কন্ট্রিবিউশনে স্কোরবোর্ডে ৯ উইকেটে ২৪১ রান তুলে ফেলে। মিয়ান্দাদ তখনও টিকে ছিলেন। শেষ বলে চেতন শর্মাকে ছক্কা মেরে তিনি দলকে জয় এনে দেন। জাভেদ মিয়ান্দাদ এই ম্যাচে ১১৪ বলে ১১৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
- অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল (১৪ জুন ১৯৯৯), এজবাস্টন
৯৯ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে ২১৩ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার ৬১ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে। সেখান থেকে জ্যাক ক্যালিসের ৫৩ এবং জন্টি রোডসের ৪৩ রানে ৬ উইকেটে ১৭৫ রান সংগ্রহ করে। তখনও তাদের দরকার ছিল ৩১ বলে ৩৯ রান।
শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ৯ রান স্ট্রাইক প্রান্তে ছিলেন ল্যান্স ক্লুজনার, যিনি এই টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি তখনও ১২ বলে ২৩ রান তুলে ফেলেছিলেন। প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি মেরে তিনি স্কোর লেভেল করে ফেলেন। কিন্তু তৃতীয় বলে অ্যালান ডোনাল্ডের দৌড়ে রান আউট হয়ে তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।
- অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: পঞ্চম ওয়ানডে (১২ মার্চ ২০০৬), জোহানেসবার্গ
সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে ৪৩৪ রানের এক বিশাল সংগ্রহ দাড় করে। রিকি পন্টিং ১০৫ বলে ১৬৪ মাইক হাসি ৫১ বলে ৮১ ক্যাটিচের ৭৯ এবং গিল্ক্রিস্ট ৫৫ রান করেন।
জবাব দিতে নেমে মাত্র ৩ রানেই ডিপেনারকে হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা । দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে গিবস এবং স্মিথ মিলে মাত্র ২১ ওভারেই ১৮৭ রান তুলে ফেলেন। স্মিথ ৫৫ বলে ৯০ রান করে আউট হয়ে যান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে গিবস এবং এবিডি মিলে আরও ৯৪ রান যোগ করেন। গিবস মাত্র ৩৩ বলেই ৭৭ রান করেন।
শেষ পর্যন্ত তিনিও ১১১ বলে ১৭৫ রান করে আউট হয়ে যান। তখনও তাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১০৯ বলে ১৩৬ রান। শেষ দিকে জোহান ভ্যান ডার ওয়াথ ১৮ বলে ৩৫ রান করে মার্ক বাউচারকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছিলেন। শেষ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ৭ রান। পঞ্চম বলে মার্ক বাউচার চার মেরে ম্যাচ এবং দলের সিরিজ জয় নিশ্চিত করেন।
- বিশ্বকাপ ফাইনাল: ২০১৯ (ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ড), লর্ডস
ওয়ানডে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ম্যাচ (তর্কযোগ্যভাবে) অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ম্যাচটি ছিল ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। ৫০ ওভারের খেলায় ম্যাচটি অমীমাংসিতই রয়ে গিয়েছিল। ম্যাচটা গড়িয়েছিল সুপার ওভারে। সেখানেও ম্যাচটা টাই হয়েছিল। কিন্তু ক্রিকেটের অদ্ভুত এক বাউন্ডারি নিয়মে ইংল্যান্ড জয়ী হয়ে যায়। আর টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনাল হারার দু:সহ যন্ত্রণা হজম করতে হয় নিউজিল্যান্ডকে।
লর্ডসে নিউজিল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ২৪১ রান সংগ্রহ করে।দলের পক্ষে হেনরি নিকোলস ৫৫, টম লাথাম ৪৭ এবং কেন উইলিয়ামসন ৩০ রান করেন। জবাবে দিতে নেমে একসময় ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৮৬ রান।
সেখান থেকে বেন স্টোকসের অপরাজিত ৮৪ এবং বাটলারের ৫৯ রানে ম্যাচটা ইংল্যান্ডের জয়ের দিকেই ছিল। কিন্তু বাটলারের বিদায়ে ম্যাচটা আবার ম্যাচটা ঘুরতে শুরু করে। শেষ ওভারের ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। ম্যাচের তৃতীয় বলে দৌড়ে দুই রান নেওয়ার সময় ফিল্ডারদের থ্রতে ব্যাটসম্যানের ব্যাটের কানায় লেগে চার হয়ে যায়। অর্থাৎ ঐ বলে রান হয় ৬।
পরের বলে বেন স্টোকস ৬ মারলে জেতার জন্য প্রয়োজন হয় ২ বলে ৩ রান। কিন্তু পরের দুই বলে দুই রান এবং সাথে দুইটি রান আউটও হয়। ম্যাচটি গড়ায় সুপার ওভারে। সুপার ওভারেও দুই দল সংগ্রহ করে ১৫ রান। কিন্তু বাউন্ডারি ছিল ইংল্যান্ডের বেশি ২৬-১৭। এই নিয়মের কারণে ইংল্যান্ডকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তারা প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পায়।