অনেকটা একপেশে লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর। নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলেছে অজিরা। বিশ্বকাপ শেষ হতেই এবারের আসরের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে একাদশ গঠন করেছে আইসিসি।
পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, রানার্স আপ নিউজিল্যান্ড ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ড থেকেও টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটাররা জায়গা পেয়েছেন এই তালিকায়। শিরোপাজয়ী অজিদের পক্ষে সুযোগ পেয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যাডাম জাম্পা ও জশ হ্যাজেলউড। ইংল্যান্ড থেকে উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে জশ বাটলার, পাকিস্তান থেকে বাবর আজম, নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট এবং শ্রীলঙ্কা থেকে এই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ওয়ানিন্দু হাসারঙ্গা।
সাবেক ক্রিকেটার, সাংবাদিক ও ধারাভাষ্যকারদের নুয়ে গঠিত এক প্যানেলের ভোটেই নির্বাচিত করা হয়েছে এবারের আসরের সেরা দল। ইয়ান বিশপ, নাতালাই জারমানোস, শেন ওয়াটসন, লরেন্স বুথ, শহিদ আজমিদের নিয়ে গঠিত এই প্যানেলের প্রধান ছিলেন বিশপ।
বিশপ বলেন, ‘যেকোনো দল নির্বাচন করতে হলে ভিন্ন ভিন্ন মত মিলিয়েই ফাইনাল দল গঠন করা হয়। তর্ক-বিতর্ক, মতামত সবকিছু মিলিয়েই টিম গঠন করা হয়েছে। এমন প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক টুর্নামেন্ট থেকে সেরা টিম বাছাই করা খুবই কঠিন। সুপার ১২ থেকে ফাইনালের ম্যাচগুলোই বিবেচনা করা হয়েছে দল নির্বাচনের জন্য।’
প্রায় ৪৮ গড়ে ২৮৯ রান করে অজিদের শিরোপা জয়ের অন্যতম নায়ক ডেভিড ওয়ার্নার আছেন এই দলের ওপেনিংয়ে। ওয়ার্নারের সাথে আছেন ইংলিশ উইকেটকিপার ব্যাটার জশ বাটলার। ৮৯.৬৬ গড়ে পুরো টুর্নামেন্টে ২৬৯ রান করেছেন এই ব্যাটার! শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করেছিলেন ৬৭ বলে সেঞ্চুরি!
এরপর তিনে আছেন পাকিস্তানি অধিনায়ক বাবর আজম। ৬০.৬০ গড়ে ৩০৩ রান করা বাবর নেতৃত্বে আছেন টুর্নামেন্টের সেরাদের নিয়ে গঠিত এই দলের। পুরো টুর্নামেন্টেই দেখিয়েছেন ধারাবাহিক পারফরম্যান্স। এই তালিকার চারে জায়গা পেয়েছেন লঙ্কান সেনসেশন চারিথ আসালাঙ্কা।
দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে নজরকাঁড়া এই লঙ্কান নব্য তারকা পুরো টুর্নামেন্টে করেছে ৪৬ গড়ে ২৩১ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪৯ বলে ৮০ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস ছাড়াও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছেন অসাধারণ ৬৮ রানের এক ইনিংস।
পরবর্তী পজিশন গুলোতে যথাক্রমে সুযোগ পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ব্যাট হাতে অন্যতম সেরা পারফরমার এইডেন মার্করাম ও ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলি। অলরাউন্ডার কোটায় মঈন ছাড়াও আছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক লঙ্কান অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
এরপর লেগ স্পিন বিভাগে আছে অজিদের বিশ্বকাপ জয়ে বল হাতে সেরা অবদান রাখা অ্যাডাম জাম্পা। পেস বিভাগে অজি তারকা জশ হ্যাজেলউডের সাথে আছেন ট্রেন্ট বোল্ট ও প্রোটিয়া গতিদানব আনরিচ নর্কে। এবং একমাত্র অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে এই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন পাকিস্তানি তারকা শাহীন শাহ আফ্রিদি।
আইসিসির বিবেচনায় এবারের আসরের সেরা দল
- ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া) – ২৮৯ রান, গড় ৪৮.১৬
- জশ বাটলার (উইকেটরক্ষক, ইংল্যান্ড) – ২৬৯ রান, গড় ৮৯.৬৬
- বাবর আজম (অধিনায়ক, পাকিস্তান) – ৩০৩ রান, গড় ৬০.৬০
- চারিথ আসালাঙ্কা (শ্রীলঙ্কা) – ২৩১ রান, গড় ৪৬.২০
- এইডেন মার্করাম (দক্ষিণ আফ্রিকা) – ১৬২ রান, গড় ৫৪
- মঈন আলী (ইংল্যান্ড) – ৯২ রান (স্ট্রাইক রেট ১৩১.৪২), বল হাতে ৭ উইকেট
- ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা) – ১৬ উইকেট।
- অ্যাডাম জাম্পা (অস্ট্রেলিয়া) – ১৩ উইকেট।
- জশ হ্যাজেলউড (অস্ট্রেলিয়া) – ১১ উইকেট।
- ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড) – ১৩ উইকেট।
- এননরিচ নরকে (দক্ষিণ আফ্রিকা) – ৯ উইকেট।
- ১২ তম খেলোয়াড়: শাহীন আফ্রিদি (পাকিস্তান) – ৭ উইকেট।