কাতার বিশ্বকাপ তাহলে ব্রাজিলেরই!

হেক্সা জয় মানে ষষ্ঠবারের মত বিশ্বকাপ জয়ের এক স্বপ্ন নিয়ে কাতারে এসেছিল ব্রাজিল। শুরুটাও হয়েছিল আশা জাগানিয়া। প্রথম দুই ম্যাচ জিতেই রাউন্ড অফ সিক্সটিনে পা বাড়িয়েছিল সেলেসাওরা। কিন্তু এরপরেই ছন্দপতন। বেঞ্চে থাকা খেলোয়াড়দের ঝালিয়ে নিতে ক্যামেরুনের বিপক্ষে একদম নতুন একটা একাদশ নামিয়েছিল ব্রাজিল। আর তাতেই আসে ধাক্কা। ক্যামেরুনদের বিপক্ষে হেরে বসে কোচ তিতের দল।

আর এরপর থেকেই হেক্সা জয়ের স্বপ্নের আকাশে যেন একটা মেঘ জমেছে। কারণ ইতিহাস বলে, ব্রাজিল তাদের ৫ বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ে কখনোই গ্রুপ পর্বে কোনো ম্যাচ হারেনি। আর সেই কাকতাল সূত্রেই অংক মিলিয়ে অনেকেই ভেবেই বসেছেন যে, ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয় সহজেই আসছে না।

তবে ইতিহাসের আরেক দিক বিবেচনা করলে আবার দেখা যায়, ব্রাজিল তাঁদের পাঁচ বিশ্বকাপ শিরোপা যাত্রায় কখনোই গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচে জয় পায়নি। ১৯৫৮ তে পেলের হাত ধরে ব্রাজিল পেয়েছিল প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ। সেখানেও গ্রুপপর্বে সব ম্যাচ জিততে পারেনি ব্রাজিল। প্রথম ম্যাচ ড্র করে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল সেলেসাওরা।

এরপরের বিশ্বকাপেও সে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছিল। দুই জয় আর এক ড্র নিয়ে পরের রাউন্ডে গিয়েছিল ব্রাজিল। এবং ১৯৬২ বিশ্বকাপেও জিতেছিল শিরোপা।

এরপর ১৯৯৪ বিশ্বকাপে চেকোস্লোভাকিয়া, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে জিতলেও সুইডেনের বিপক্ষে ড্র করেছিল ব্রাজিল। আর সেবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ঐ সেলেসাওরাই। তাই অতীত ইতিহাস মিলালে, এখনো বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি ব্রাজিলের। বরং এখন পর্যন্ত তারাই এ বিশ্বকাপ শিরোপার অন্যতম দাবিদার।

ব্রাজিলকে নিয়ে এসব চিন্তার বাইরে বরং আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, তাঁরা তাঁদের পূর্ণ শক্তির স্কোয়াড নিয়ে সামনে কতটা খেলতে পারবে। কারণ, ইনজুরির কারণে নেইমার এখনো বিশ্বকাপে অনিশ্চিত। দানিলোও রয়েছেন সেই তালিকায়। এরপর গত ম্যাচে ইনজুরিতে পড়ে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গিয়েছে গ্যাব্রিয়েল জেসুসের। তাঁর সাথে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যেতে পারে অ্যালেক্স টেলেসেরও। আপাতত তিতের তাই চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে, কিভাবে তিনি এই দলটা থেকে পরিপূর্ণ একটা কম্বিনেশন বের করে নেবেন।

শেষ ষোলতে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া। এই বিশ্বকাপে কোরিয়া দূর্দান্ত খেললেও অতীত ইতিহাস কিংবা শক্তিমত্তা, যেকোনো কিছুরই বিবেচনায় ব্রাজিল নি:সন্দেহে এগিয়ে। এখন প্রশ্ন শুধু একটাই, ব্রাজিল কি ক্যামেরুনের কাছে হারের স্মৃতি পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পেরেছে কিনা। একটা দুর্দান্ত ঘুরে দাড়ানোর গল্প লিখতে পারলেই হেক্সা জয় আসবে। আর সেটি হলে বিরাট একটা মহাকাব্যই হয়তো লেখা হবে ফুটবলের ইতিহাসে।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link