ব্রেট লি’র মতি‘গতি’

বাবা ছিলেন একজন ফুটবল কোচ। সে একটা তরুণদের ফুটবল দলকে কোচিং করাতো। সেখানে একটা খেলোয়াড় ছিল নাম নিল ম্যাকেঞ্জি। সে সম্ভবত দলের সেরা একজন খেলোয়াড় ছিল। যখন তাঁর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অভিষেক হয়, আমার বাবা আমাকে বলেছিল তাঁকে চিনে। আমি তাঁর নাম্বার পেলাম। একটা ফোন কলও করলাম। আমি যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না! আমি নিল ম্যাকেঞ্জির সাথে কথা বলছি! আমার বয়স তখন ছিল ১০ বছর।

মাইক হাসির মতই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকটা ত্রিশ বছর বয়সে। হাসি অবশ্য পরে এসেও নিজেকে নিয়ে গেছেন বিশ্বসেরাদের তালিকায়। সে দিক থেকে নিউজিল্যান্ডের বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা তারকা ডেভন কনওয়ে বেশ দূরে আছেন। তবে হাসির মতই পরে এসেও নজরকাঁড়া পারফরম্যান্সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাতাচ্ছেন এই নিউজিল্যান্ডের নব্য তারকা।

দক্ষিণ আফ্রিকায় জাতীয় দলে সুযোগ না পেয়ে ছুঁটে আসেন নিউজিল্যান্ডে। এখানে অবশ্য নিরাশ হননি তিনি। সামর্থ্য দেখিয়ে সুযোগ পেয়েছেন আর সেই সুযোগ লুফে নিয়ে ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছেন সবার।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) পঞ্চদশ আসরে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে সুযোগ পেয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন এই ব্ল্যাকক্যাপস তারকা।

আইপিএল অভিষেকে মাত্র তিন রানে ফেরেন তিনি। এরপর সুযোগের অপেক্ষায় বেঞ্চে ছিলেন ছয় ম্যাচ। দল যখন প্লে অফে দৌঁড়ে ছিটকে গেছে, দলে সুযোগ পেলেন। পরের ছয় ম্যাচে ৩ ফিফটিতে করলেন ২৪৯ রান! দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা এই ব্ল্যাকক্যাপ তারকা ছেলেবেলার স্মরণীয় মজার এক গল্প শেয়ার করেছেন চেন্নাই সুপার কিংসের এক ভিডিও বার্তায়।

তখন তিনি দক্ষিণ আফ্রিকাতেই ছিলেন। সেখানেই বেড়ে উঠা। বাবা ছিলেন ফুটবল কোচ। কনওয়ের বাবার কোচিংয়ের ছাত্র ছিলেন সাবেক প্রোটিয়া ক্রিকেটার নিল ম্যাকেঞ্জি। কনওয়ে তখন বেশ ছোট। জাতীয় দলে অভিষেক হল ম্যাকেঞ্জির। বাবার কাছ থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে নিলের সাথে কথা বললেন, সেই থেকে গড়ে উঠে বন্ধুত্বপূর্ণ এক সম্পর্ক।

কনওয়ে বলেন, ‘আমার বাবা ছিলেন একজন ফুটবল কোচ। সে একটা তরুণদের ফুটবল দলকে কোচিং করাতো। সেখানে একটা খেলোয়াড় ছিল নাম নিল ম্যাকেঞ্জি। সে সম্ভবত দলের সেরা একজন খেলোয়াড় ছিল। যখন তাঁর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অভিষেক হয়, আমার বাবা আমাকে বলেছিল তাঁকে চিনে। আমি তাঁর নাম্বার পেলাম। একটা ফোন কলও করলাম। আমি যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না! আমি নিল ম্যাকেঞ্জির সাথে কথা বলছি! আমার বয়স তখন ছিল ১০ বছর।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে আছে সেই ফোন কলের কথা। আমি বলেছিলাম, হ্যালো নিল, আমি ডেভন। আমি শুধু তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে চাই, ব্রেট লি আসলে কত জোরে বল করে? সে প্রতিত্তোরে বলেছিল, আমার বাবার গাড়ির চেয়েও নাকি লি’র বলের গতি বেশি।’

এভাবে নিলের সাথে বেশ ভাল সখ্যতা গড়ে উঠে কনওয়ের। নিলের সাথে অবশ্য পরবর্তীতে খেলারও সুযোগ পান তিনি। সেখানেও নিলকে পেয়ে একই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তিনি। লি কতটা জোরে বল করে?!

কনওয়ে বলেন, ‘১০ বছর বাদে জোহানেসবার্গে আমি তাঁর সাথে খেলার সুযোগ পাই। ব্রেট লি কত জোরে বল করে সে ব্যাপারে তখন নিল আমাকে একটা ধারণা দিয়েছিল। ছোটবেলা থেকে তাঁর সাথে ফোনে কথা বলা, তাঁকে লম্বা সময় ধরে অনুসরণ করা এবং একসাথে খেলার সুযোগ পাওয়াটা আমার জন্য অসাধারণ কিছু স্মৃতি।’

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৫৮ টেস্ট ও ৬৪ ওয়ানডে খেলেছেন নিল ম্যাকেঞ্জি। প্রোটিয়াদের হয়ে এই দুই ফরম্যাটে করেছেন প্রায় ৫ হাজার রান। খেলেছেন এক টি-টোয়েন্টি ম্যাচও। ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষে কোচিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...