বুমরাহর নীল বিষে বিষাক্ত বেঙ্গালুরু

জাসপ্রিত বুমরাহ যেন মায়াবী কোন সর্প, অদ্ভুত মায়ার জালে ব্যাটারদের আটকে নীল বিষে বিষাক্ত করে দেন তিনি। কিছু বুঝে উঠার আগেই একের পর এক উইকেটের পতন ঘটে, আবার বুঝে লাভ হয় না কেননা তাঁকে ঠেকানোর উপায় জানা নেই কারোই। আকাশী-নীল জার্সিতে সুন্দরতম বোলিংয়ের প্রদর্শনী দেখানো এই পেসার আইপিএলেও নীল বিষ ছড়িয়ে দেন। মার কাটারি এই টুর্নামেন্টেও তিনি বড্ড কিপ্টে।

এইতো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ১৯৬ রান করেছিল। জেরাল্ড কোয়েটজি, আকাশ মাধওয়ালদের ওপর রীতিমতো তান্ডব চালিয়েছিলেন দীনেশ কার্তিক, রজত পতিদাররা। অথচ বিধ্বংসী ব্যাটারদের বিপক্ষেও আনপ্লেয়েবল বুমরাহ, চার ওভারে খরচ করেছেন স্রেফ ২১ রান। আর সেটার বিনিময়ে তুলে নিয়েছেন পাঁচ পাঁচটি উইকেট।

বিরাট কোহলিকে দিয়ে উইকেটের খাতা খুলেছিলেন তিনি, নিজের প্রথম ওভারেই। ইনফর্ম কোহলি তাঁর সুইং বুঝতেই পারেননি; বাধ্য হয়ে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পিছনে। দ্বিতীয় ওভারে অবশ্য কোন উইকেট পাননি এই ডানহাতি, সেটাই বোধহয় আরো খানিকটা তাঁতিয়ে দিয়েছিল তাঁকে – যার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে তাঁর শেষের দুই ওভারে। রীতিমতো রূদ্র মূর্তি ধারণ করেছিলেন তিনি।

সতেরোতম ওভারের চতুর্থ বলে হাফসেঞ্চুরিয়ান ফাফ ডু প্লেসিসকে থামিয়ে দেন এই তারকা, তবে পরের বলে মহিপাল লমরকে যেভাবে টো-ক্রাশিং ইয়র্কারে আউট করেছেন সেটা বেশিদিন মনে রাখবেন ভক্ত-সমর্থকেরা। এই ওভারেও কেবল চার দেন তিনি, অন্যপ্রান্তে যখন বাউন্ডারির ঝড় বয়ে যাচ্ছিলো তখন একাই প্রতিরোধ গড়েছিলেন।

ব্যক্তিগত চতুর্থ ওভারে আবারো জোড়া উইকেট শিকার করেন এই পেসার। এবার সাজ ঘরের পথ দেখান সৌরভ চৌহান আর বিজয়কুমারকে। ততক্ষণে ফাইফার পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। শেষপর্যন্ত ২১/৫ বোলিং ফিগার নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাঁকে। চলতি আইপিএলে এটিই এখন পর্যন্ত সেরা বোলিং পারফরম্যান্স।

সতীর্থদের সঙ্গে তুলনা করলে মনে হবে জাসপ্রিত বুমরাহ বোধহয় অন্য কোন পিচে বল করছেন। বাকি বোলাররা যেখানে তুলোধুনোর শিকার হয়েছেন সেখানে তাঁর এমন বোলিং আসলে এই পারফরম্যান্সের মাহাত্ম্য বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। বিশ্বকাপের আগে নিজেদের স্ট্রাইক বোলারের এমন অপ্রতিরোধ্য রূপ দেখে চোখ চক চক করতেই পারে টিম ইন্ডিয়ার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link