সেই অধিনায়কেরা কে কোথায়!

তবে কেউ কি মনে রেখেছেন ক্রিকেটের এই ক্ষুদ্র সংস্করণের প্রথম বৈশ্বিক আসরের অধিনায়কেরা কে কে ছিলেন? কোন দলকে কে নেতৃত্ব দিয়েছিল তা কি কারো স্মৃতিতে রয়েছে? এভাবেই হয়ত স্মৃতির অতল গহীনে বিলিন হয়ে যায় সবকিছু। কিন্তু খেলা ৭১ আজ হাজির হয়েছে ভিন্নধর্মী এক তালিকা নিয়ে। আজকের তালিকার পুরোটা জুড়ে থাকবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের অধিনায়কেরা এবং তাঁদের বর্তমান খোঁজখবর। চলুন তবে শুরু করা যাক।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। আজ থেকে প্রায় ১৪ বছর আগে ২০০৭ সালে। ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণের প্রথম বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের আগ্রহের মাত্রা ছিল আকাশচুম্বী। ২০২১ সালের গেল বিশ্বকাপে ১৬ দল অংশ নিলেও, প্রথম আসরে দল সংখ্যা ছিল ১২টি। গ্রুপ, কোয়ার্টার ও সেমিফাইলান পেরিয়ে ভারত ও পাকিস্তান উঠেছিল সেই মহা আয়জনের প্রথম ফাইনালে। তারপরের ইতিহাস বোধ করি সবারই জানা।

তবে কেউ কি মনে রেখেছেন ক্রিকেটের এই ক্ষুদ্র সংস্করণের প্রথম বৈশ্বিক আসরের অধিনায়কেরা কে কে ছিলেন? কোন দলকে কে নেতৃত্ব দিয়েছিল তা কি কারো স্মৃতিতে রয়েছে? এভাবেই হয়ত স্মৃতির অতল গহীনে বিলিন হয়ে যায় সবকিছু। কিন্তু খেলা ৭১ আজ হাজির হয়েছে ভিন্নধর্মী এক তালিকা নিয়ে। আজকের তালিকার পুরোটা জুড়ে থাকবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের অধিনায়কেরা এবং তাঁদের বর্তমান খোঁজখবর। চলুন তবে শুরু করা যাক।

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)

চ্যাম্পিয়নকে দিয়েই শুরু করা যাক এই তালিকা। ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণের প্রথম শিরোপা জয়ী অধিনায়ক ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তাঁর হাত ধরেই এই পরবর্তীতে ওয়ান্ডে বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। মহেন্দ্র সিং ধোনি ২০২০ সালে সকল ধরণের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। তবে তিনি নিয়মিত আইপিএল এ অংশ নিচ্ছেন তা নিশ্চয়ই সকলের অজানা নয়।

তাঁর নেতৃত্বে চেন্নাই সুপার কিংস এ বছর জিতেছে নিজেদের আইপিএলের চতুর্থ শিরোপা। তাঁর এই অভিজ্ঞতা এবং দূরদর্শীতা কাজে লাগাতেই বর্তমানে তাঁকে ভারত জাতীয় ক্রিকেটের বিশ্বকাপ দলের সাথে যুক্ত করা হয়েছে মেন্টর হিসেবে।

  • শোয়েব মালিক (পাকিস্তান)

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এবারের সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর মাতাচ্ছেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক।

তাঁর অধীনেই পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের ফাইনালে পদার্পণ করেছিল। তবে আফসোস সেই বিশ্বকাপের শিরোপা আর জেতার সুখস্মৃতি নেই শোয়েব মালেকের। তিনি এবারের বিশ্বকাপে শেষ মুহূর্তে যুক্ত হয়েছেন দলের সাথে। অভিজ্ঞতা নিঙড়ে দিয়ে দলের জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নিজের সামর্থ্য অনু্যায়ী চেষ্টা করে যাচ্ছেন মালিক।

  • অ্যাডাম গিলক্রিস্ট (অস্ট্রেলিয়া)

ওয়ানডেতে দাপুটে ও অন্যতম পরাশক্তি দল অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা চারে ওঠার গৌরব অর্জন করে অ্যাডাম গিলক্রিস্টের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কল্যাণে। সাবেক এই উইকেট-কিপার ব্যাটার বর্তমানে অবসরে রয়েছেন এবং দিনাতিপাত করছেন সম্পূর্ণ নিজের মতো করে। মাঝেমধ্যে ধারাভাষ্য দেন।

  • ড্যানিয়েল ভেট্টোরি (নিউজিল্যান্ড)

২০০৭ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল অবধি দলকে নিয়ে যেতে সামনে থেকে অবদান রেখেছিলেন ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। বা- হাতি এই স্পিনার ব্ল্যাকক্যাপসদের অন্যতম সেরা অস্ত্র ছিলেন। এর পাশাপাশি নিজের বুদ্ধিমত্তার সম্পূর্ণ ব্যবহার করে দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণের প্রথম বৈশ্বিক আয়োজনের সেমিফাইনালে। খেলোয়াড় জীবন থেকে অবসর নিলেও ক্রিকেট থেকে অবসর নেননি ভেট্টোরি। বর্তমানে কোচের দায়িত্ব পালন করে যুক্ত আছেন ক্রিকেটের সাথেই।

  • পল কলিংউড (ইংল্যান্ড)

ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় পর্ব থেকে সবগুলো ম্যাচ হেরে বিদায় নেয় ইংল্যান্ড, প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর থেকে। তবে তাঁর আগে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে প্রথম পর্ব পার করিয়েছিলেন পল কলিংউড। সাবেক অধিনায়ক বর্তমানে দলের সহকারী কোচ। এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করছেন কলিংউড।

  • মোহাম্মদ আশরাফুল (বাংলাদেশ)

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সকলের জন্যেই এক নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে হাজির হয়েছিল ২০০৭ সালে। তাঁর ব্যতিক্রম ঘটেনি বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও। প্রথমবারের মতো এই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া এক নবীন দল বাংলাদেশের উপর তেমন কোন প্রত্যাশা ছিলনা বললেই চলে।

তবু মোহাম্মদ আশরাফুল হয়ত বিশ্বাস করেছিলেন দল অন্তত পার করতে পারবে প্রথম পর্ব। সেই বিশ্বাস থেকেই মোহাম্মদ আশরাফুল দলের অধিনায়কত্বের হাল ধরে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন দ্বিতীয় পর্ব অবধি।

ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে নিজের নাম জড়িয়ে জাতীয় দলের জায়গা হারিয়েছেন আশরাফুল। আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন জাতীয় দলের হয়ে আবার মাঠ মাতাতে। সেই লক্ষ্যে অব্যহত রেখেছেন ঘরোয়া লিগে রানের চাকা।

  • গ্রায়েম স্মিথ (দক্ষিণ আফ্রিকা)

ঘরের মাঠে ক্রিকেটের নতুন এক সংস্করণের প্রথম আসরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেই সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার গ্রায়েম স্মিথ। রানরেটের গ্যারাকলে পড়ে সেই আসরের দ্বিতীয় পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় স্মিথের দলকে। অসাধারণ লড়াকু দলনেতা বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটের ডিরেক্টর পদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

  • মাহেলা জয়াবর্ধনে (শ্রীলঙ্কা)

ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা একজন ব্যাটার মাহেলা জয়াবর্ধনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি। দ্বিতীয় পর্ব অবধি দলকে নিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে খেলোয়াড়ি জীবনের পাঠ চুকিয়ে জাতীয় দলের পরামর্শক হিসেবে গিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।

  • রামনরেশ সারওয়ান (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম আসরে বাদ পড়েছিল প্রথম পর্ব থেকেই। সেই হতাশার যাত্রার দলপতি ছিলেন রামনারেশ সারওয়ান। ক্রিকেটার রামনারেশ এখন মনোনিবেশ করেছেন ক্রিকেট কোচিং ক্যারিয়ারে।

  • রায়ান ওয়াটসন (স্কটল্যান্ড) 

রায়ান ওয়াটসনের নেতৃত্বে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেয় স্কটল্যান্ড। সেবার প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয় দলটিকে। রায়ান ওয়াটসন বর্তমানে কোচিং পেশায় নিয়োজিত আছেন।

  • প্রোসপার উৎসেয়া (জিম্বাবুয়ে)

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ে দলের অধিনায়ক ছিলেরন অফ স্পিনার প্রোসপার উৎসেয়া। প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়া জিম্বাবুয়ে দলের অধিনায়ক ২০১৪ সালে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ হন। ২০১৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে চলে যান তিনি।

  • স্টিভ টিকোলো (কেনিয়া)

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে কেনিয়া প্রথম এবং শেষ বারের মতো অংশ নেয় ২০০৭ সালে। তাঁদের দলের কাপ্তান ছিলেন অলরাউন্ডার স্টিভ টিকোলো। খেলোয়াড় জীবন থেকে অবসর নেওয়া টিকোলো বর্তমানে তানজানিয়া জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...