দ্য ওয়ান্ডারফুল ওয়ালশ

১৯৯৩ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১ রানের জয়ের সেই ঐতিহাসিক টেস্টে শেষ উইকেট শিকার করেন ওয়ালশ! ১৮৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৪৪ রান করার পর শেষ উইকেটে টিম মে ও ক্রেইগ ম্যাকডারমটের ৪০ রানের জুটিতে তখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে অজিরা। ২ রানের দরকার থাকলেও শেষ উইকেটে ক্রেইগ ম্যাকডারমটকে দুর্দান্ত এক বাউন্সারে আউট করে দলকে শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় এনে দেন ওয়ালশ। ১-০ তে পিছিয়ে ক্যারিবীয়রা ১২ বছর পর অজিদের মাঠে তখন সিরিজের হারের দ্বারপ্রান্তে থাকলেও ওয়ালশের অসাধারণ বোলিংয়ে দুর্দান্ত জয়ে সিরিজে সমতা ফেরায়।

টেস্ট ইতিহাসের কিংবদন্তি পেসারদের নাম আসলে নি:সন্দেহে সবার উপরের দিকেই থাকবেন ক্যারিবীয় তারকা কোর্টনি ওয়ালশ। টেস্ট ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে যিনি শিকার করেন ৫০০ উইকেট! ক্যারিয়ারের শুরু থেকে একদম শেষ অবধি পেস আর স্যুইং বিষে বিধ্বস্থ করেছেন ব্যাটারদের। ওয়ালশ-অ্যামব্রোসদের ভয়ংকর পেস দাপটের সামনে সেসময় খুব কম ব্যাটারই প্রতিরোধ গড়তে পারতো।

টেস্ট ক্রিকেটে শিকার করেছেন ৫১৯ উইকেট! ২০০১ সালে যখন ক্রিকেটকে বিদায় জানান ওয়ালশ তখন তিনি টেস্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন! মাত্র ২৪.৪৪ গড়ে ৫১৯ উইকেট শিকার করেন এই কিংবদন্তি ক্যারিবিয়ান পেসার।

১৯৯৩ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১ রানের জয়ের সেই ঐতিহাসিক টেস্টে শেষ উইকেট শিকার করেন ওয়ালশ! ১৮৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৪৪ রান করার পর শেষ উইকেটে টিম মে ও ক্রেইগ ম্যাকডারমটের ৪০ রানের জুটিতে তখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে অজিরা।

২ রানের দরকার থাকলেও শেষ উইকেটে ক্রেইগ ম্যাকডারমটকে দুর্দান্ত এক বাউন্সারে আউট করে দলকে শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় এনে দেন ওয়ালশ। ১-০ তে পিছিয়ে ক্যারিবীয়রা ১২ বছর পর অজিদের মাঠে তখন সিরিজের হারের দ্বারপ্রান্তে থাকলেও ওয়ালশের অসাধারণ বোলিংয়ে দুর্দান্ত জয়ে সিরিজে সমতা ফেরায়।

২০০১ সালে সিডনি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে অজি স্পিনার কলিন মুলারের নীল রঙের চুল দেখে হাসতে থাকেন ওয়ালশ। মুলারের সেই নীলাভ বর্ণের চুলের জন্য সিডনির দর্শকরাও হাততালি দিয়ে সমর্থন জানায়। অবশ্য ওই ওভারেই মুলারের বলে ধরা পড়েন ওয়ালশ!

১৯৮৮ সালে ব্রিসবেন টেস্টের প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেটে টনি ডডমাইডেকে শিকার করেন ওয়ালশ। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে বল করতে নেমে নিজের প্রথম দুই বলেই মাইক ভেলেটা ও গ্রায়েম উডকে ফিরিয়ে হ্যাট্রিক পূর্ণ করেন ওয়ালশ। টানা তিন বলে তিন উইকেট না নিয়ে টেস্ট ইতিহাসে সেটিই ছিলো প্রথম হ্যাট্রিক।

১৯৮৬ সালে শারজাহতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ২৪৮ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৫০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন চরম বিপর্যয়ে লঙ্কানরা। তবে পরের চিত্রটা আরো ভয়াবহ! ৫০ রানে ৫ উইকেট থেকে ওয়ালশ ম্যাজিকে মাত্র ৫৫ রানেই অলআউট শ্রীলঙ্কা! ৪.৩ ওভারে ৩ মেইডেনে মাত্র ১ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ৫ উইকেট! এটি ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পেল।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ডাকের রেকর্ডে আছে ওয়ালশের নাম। মুত্তিয়া মুরালিধরনের ৫৯ ডাকের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৪ ডাকের মালিক ওয়ালশ!

ক্যারিয়ারের শেষ সময়েও ওয়ালশ ছিলেন ফর্মের তুঙ্গে। ২০০০ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর বছরখানেক আগে মাত্র ১৮.৬৯ গড়ে শিকার করেন ৬৬ উইকেট! এমনকি ক্যারিয়ারের শেষ বছরে ২২.২৫ গড়ে শিকার করেন ২৭ উইকেট!

১৯৯৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েলিংটন টেস্টে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩৭ রানে ৭ উইকেট শিকার করেন ওয়ালশ। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৮ রানে ৬ উইকেট সহ ওই ম্যাচে ৫৫ রানের বিনিময়ে নেন ১৩ উইকেট! ওই ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সর্বকালের সেরা পারফরম্যান্সের একটি হিসেবে ওয়ালশের ওই পারফরম্যান্সটি বিবেচনা করা হয়।

১৯৯১ সালে কোর্টনি ওয়ালশের নো বলে বলে আউট হন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ডিন জোন্স। জোন্স অবশ্য জানতেন না বল। ক্রিজ ছেড়ে হাটা শুরুর পরে ক্যারিবীয়রা স্টাম্প ভেঙে রান আউট করেন! আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী অবশ্য নো বলে উইকেট পড়ার পর ব্যাটার ক্রিজ ছেড়ে চলে যায় তাহলে রান আউট হবে না। কিন্তু অন ফিল্ড আম্পায়ার তখন জোন্সকে আউট ঘোষণা করে!

ভারতের স্পিনবান্ধব উইকেটে বেশ ভালোই রেকর্ড আছে ওয়ালশের। ১৮.৫৫ গড়ে ভারতের মাটিতে তিনি শিকার করেছেন ৪৩ উইকেট। ১৩ ইনিংসে সেখানে তিনি তিনবার শিকার করেছেন ফাইফর। ভারতের মাটিতে কখনোই উইকেটশূন্য ছিলেন না ওয়ালশ!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...