ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, শিরোনামের বাইরে থাকাটা খুব একটা পছন্দ নয় তাঁর। তবে এবার হয়ত সেই শিরোনামের বাইরে থাকার পুরোদস্তুর বন্দোবস্ত করে ফেললেন পর্তুগাল তারকা। গেল কয়েক মাসে তাজা খবরের খোরাক মিটিয়েছেন তিনি। সেই ধারা অবশ্য এখনও অব্যাহত রাখছেন ক্রিশ্চিয়ানো। তাঁকে ঘিরে নতুন সব আলোচনা সামনে আসা যেন থামছেই না।
২০২২ এর শেষদিকে শেষ হল ফুটবল বিশ্বকাপ। সেখানে রীতিমত নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। দলকে শিরোপা জেতাতে সামনে থেকে অবদান রেখেছিলেন তাঁর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দী লিওনেল মেসি। সমপরিমাণ তো দূরে থাক নিজের সামর্থ্যের ধারে কাছেও পৌঁছুতে পারেননি ক্রিশ্চিয়ানো। এর আগে থেকেই অবশ্য তিনি ধুঁকছিলেন অফ ফর্মে।
সেই সাথে তাঁর সাবেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথেও সম্পর্কের ক্রমাগত অবনতি হচ্ছিল তাঁর। বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে বিস্ফোরক এক সাক্ষাৎকার দিয়ে তিনি রীতিমত আলোড়ন ফেলে দেন পুরো ফুটবল দুনিয়াতে। সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো গেল ডিসেম্বরেই পাড়ি জমিয়েছেন সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসার ক্লাবে। এ নিয়ে সমালোচনা আর আলোচনার বন্যা বয়ে যায় সর্বত্র।
বিপুল অর্থের বিনিময়ে তিনি সৌদি আরবারে ক্লাবটির জার্সি নিজের গায়ে জড়িয়েছেন। সেই অর্থেরর হিসেব করতেও যেন চক্ষু চড়কগাছ হবার মত অবস্থা। রীতিমত ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দলবদলেই নিজেকে খুঁজে পাচ্ছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তবে জোর গুঞ্জন রয়েছে যে তিনি আল নাসারের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের সাথে চুক্তি হওয়ার দ্বারপ্রান্তেই ছিলেন রোনালদো।
সৌদির ঘরোয়া ফুটবলে আল নাসারের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আল হিলাল ক্লাব। সেই আল হিলাল ক্লাবের সাথেই প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল রোনালদোর। তবে শেষমেশ সমীকরণের শেষপ্রান্তের অমিলের কারণে আল নাসারের ডেরায় গিয়ে হাজির হন রোনালদো। এমনটা হওয়ার পেছনে অবশ্য সৌদি এক ফুটবলারের দলবদল ছিল প্রধান কারণ।
সৌদি আরবের খেলোয়াড় মোহাম্মাদ কান্নো প্রাথমিকভাবে সম্মতি জানান আল নাসারের এক চুক্তিতে। তবে শেষ অবধি তিনি নিজের ইচ্ছে পরিবর্তন করেন। নিজের চুক্তি বাড়িয়ে নেন আল হিলালের সাথে। ঠিক সে কারণেই দলবদলের উপর নিষেধাজ্ঞা পায় আল হিলাল। অগ্যতা চোখের সামনে এশিয়ান ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুক্তিটা হয়ে যেতে দেখে আল হিলাল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। নয়ত সমূহ সম্ভাবনা ছিল আল হিলালের জার্সি গায়ে সৌদির মাটিতে রোনালদো পা রাখার।
এদিকে অবশ্য আরও একখানা গুজব ছড়িয়েছে। রোনালদোকে ২০৩০ বিশ্বকাপের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের প্রচার করবার একটা শর্ত নাকি জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। এর বিনিময়ে অবশ্য উপার্জিত অর্থের সমপরিমাণ অর্থ পেতে পারতেন রোনালদো। তবে আল নাসার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে শুধুমাত্র ক্লাব ব্যতিত আর কোনদিকেই মনোযোগ দিতে হবে না রোনালদোর। তাঁকে দলে ভেড়ানোর একটাই উদ্দেশ্য ক্লাবে। আর সেটি শিরোপা জয়। নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে এমনটাই জানিয়েছে আল নাসার ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
রোনালদোকে ঘিরে নিত্যনতুন গল্প-গুজবের অবতারণা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড়কে ঘিরে আলোচনা হওয়াও স্বাভাবিক। তবে ঠিক কবে নাগাদ এই গুঞ্জন আর গুজবের বায়ুবীয় প্রবাহ থামবে, সেটা এখনই বলে দেওয়া বেশ কঠিন।