ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এখন ফুটবল বিশ্বের টক অ দ্য টাউন। তবে, সেটা মাঠের ঘটনা নয় – মাঠের বাইরের ঘটনায়। খ্যাতনামা সাংবাদিক পিয়ার্স মরগ্যানকে দেওয়া রোনালদোর দেড় ঘণ্টার সাক্ষাৎকার আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সাক্ষাৎকারে এই পর্তুগীজ সুপার স্টার তাঁর দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, কোচ এরিক টেন হ্যাগ ও নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে বিস্ফোরক সব মন্তব্য করেছেন।
এই ঘটনায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের স্বনামধন্য ক্লাবটির ইমেজ ক্ষুন্ন হয়েছে। আর তাঁর মাশুল গুণতে হবে খোদ রোনালদোকে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ রোনালদোকে এক মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করতে চলেছে। আর এখানেই শেষ নয়, যিনি সাক্ষাৎকারটা নিয়েছেন সেই মরগ্যান জানালেন রোনালদো নিজে থেকেই সাক্ষাৎকারটা দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন।
কোচ এরিক টেন হ্যাগের সাথে কোনো কালেই সম্পর্কটা সুখকর ছিল না রোনালদোর। ক্লাব ও ক্লাবের কোচের ওপর মন বিষিয়ে উঠেছিল সিআরসেভেনের। ৩৭ বছর বয়সী এই পর্তুগীজ তারকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের শেষ ম্যাচে অসুস্থতার কারণে দলে ছিলেন না। কিন্তু, পরবর্তীতে জানা যায়, কোচ টেন হাগ রোনালদোকে জানায়, সে স্কোয়াডে থাকলেও একাদশে থাকবেন না। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই খবর জানার পরেই রোনালদো ক্লাবকে জানিয়ে দেয়, অসুস্থতা জনিত কারণে সে খেলার জন্য প্রস্তুত নয়।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড গত মৌসুমে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে কোয়ালিফাই করতে না পারায় তখন থেকেই রোনালদো ক্লাব ছাড়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে। কিন্তু ভাল কোন ক্লাবই ৩৭ বছর বয়সী এই তারকা নিজেদের দলে ভেড়ানোর আগ্রহ না দেখালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেই থেকে যেতে হয়।
এমনকি কিছুদিন আগেই টটেনহ্যামের বিপক্ষে ম্যাচে,ম্যাচ চলাকালীন সময়ে মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়াতে টেন হাগ দুই সপ্তাহের বেতন সমপরিমাণ জরিমানা করেন রোনালদোকে। সবকিছু মিলিয়ে টেন হাগ এবং রোনালদোর সম্পর্ক আস্তে আস্তে আরও অবনতির দিকেই এগোচ্ছিল।
যদিও রোনালদোর পিয়ার্স মরগ্যানকে দেয়া সাক্ষাৎকার নিয়ে ক্লাবের পক্ষ থেকে অফিশিয়াল কোন মন্তব্য না এলেও সংবাদমাধ্যম ‘মেট্রো’ এর বরাত দিয়ে জানা যায় ক্লাব কর্তৃপক্ষ রোনালদোর এই সাক্ষাৎকার দেয়াতে খুব একটা সন্তুষ্ট তো নয়ই বরং রোনালদোকে এক মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করতে চলেছে।
অপরদিকে পিয়ারস মরগ্যান ‘টকস্পোর্ট’ নামক এক শোতে উপস্থিত হয়ে তার এও সাক্ষাৎকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে গিয়ে বলেছেন যে, রোনালদোই তার সাক্ষাৎকার নিতে মরগানকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এটা পানির মতই পরিষ্কার যে, রোনালদোই তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে আমাকে ডেকে পাঠিয়েছে। আমি নিজ থেকে এটা করিনি। গত বেশ কিছুদিন ধরেই তার ভেতরে ইউনাইটেডকে নিয়ে এই ধরনের হতাশা জমে উঠেছিল,যেটা সে প্রকাশ করতে চেয়েছে মাত্র। সে মনে করেছে তার এগুলো বলতেই হবে, সে জানে এটা ক্ষতিকারক হবে,সাথে সাথে এটা নিয়ে অনেক সমালোচনাও হবে কিন্তু তবুও তাকে এসব প্রকাশ করতেই হবে। কিন্তু তবুও সে মনে করেছে এগুলা সত্য এবং মানুষের এগুলো জানা উচিত।’
মরগ্যান আরও যোগ করেন, ‘আমরা জানি সত্য কথা অনেক সময় মানুষকে আঘাত করে। সে বেশ কিছুদিন ধরেই এগুলা নিয়ে ভাবছিল এবং তার মধ্যেই আমাকে কল দেয়। সামনেই বিশ্বকাপ আর এই এক মাস সে ইউনাইটেড থেকে দূরে থাকবে। এই একমাস তাকে যথেষ্ট সময় দেবে ইউনাইটেড এর সাথে তার সব সমস্যা সমাধানের জন্য। আশা করি সে বিশ্বকাপ থেকে ফিরে এসে সব সমস্যা সমাধান করে ফেলবে।’