বেজেছে বিদায়ের সুর, শেষ হবে ধোনির অধ্যায়!

‘শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে, অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন’ – বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে লেখা লাইন দু’টো কি সুন্দর মিলে যায় মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে। রবীন্দ্রনাথের মত দৃপ্ত পায়ে হেঁটেই বাইশ গজে আসেন তিনি, এরপর কেবল তাঁর ব্যাটের ঝনঝনানি শোনা যায়।

তবে মধুরতম শব্দ বোধহয় আর শোনা যাবে না, চেন্নাই সুপার কিংসের সাত নম্বর জার্সি গায়ে আর কেউ বোধহয় গ্যালারি মাতিয়ে তুলবেন না। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে কাউকে আঙ্গুল নাড়িয়ে পরামর্শ দিতে দেখা যাবে না; দেখা যাবে না দুর্ধর্ষ কোন ইয়র্কারের বিপরীতে হেলিকপ্টার শট।

সব ভাল জিনিসকেই একদিন শেষ হতে হয় – প্রকৃতির অমোঘ সত্যি ধোনির জন্যও প্রযোজ্য। তাই তো সেই সত্যি মেনে নিয়ে বিদায় বলতে যাচ্ছেন তিনি, কোন চমকপ্রদ কিছু না ঘটলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ম্যাচটিই তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ।

২০০৪ সালে ভারতের আকাশী-নীল জার্সিতে পথ চলা শুরু, সেই পথ শেষ হয়েছে ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। না, কোন আড়ম্বরপূর্ণ বিদায় নয়, চুপিসারে একটা পোস্ট দিয়েই অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন কুল। আইপিএল থেকেও হয়তো এমন নীরবে সরে দাঁড়াবেন তিনি।

১৭ বছরের আইপিএল ক্যারিয়ার এই তারকার, পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয়েছিল ২০০৮ সালে। এরপর একের পর এক মৌসুম পার হয়েছে, সেই সাথে সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর অর্জনের ঝুলি। সবমিলিয়ে পাঁচবার আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন; ফাইনাল খেলেছিলেন গুণে গুণে দশবার।

মানুষ সংখ্যা মনে রাখবে না; মানুষ মনে রাখবে অনুভূতিগুলো, ওয়াংখেড়েতে ছয় হাঁকিয়ে বিশ্বজয়ের যে আনন্দ ধোনি এনে দিয়েছিলেন সেটাই মানব হৃদয়ে থেকে যাবে অনন্তকাল। সেই সাথে থেকে যাবে তাঁর নাম, থেকে যাবে তাঁকে আরেকটু সময় মাঠে দেখার তীব্র ইচ্ছে। তাই তো তিনি যদি আর একটা ম্যাচ খেলার ঘোষণাও দেন, সেটাই ঈদের আনন্দ দিবে পুরো ক্রিকেটাঙ্গনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link