ক্রিকেট ছেড়ে ভিন্ন পেশায়-বিচিত্র পরিচয়ে

ক্রিকেটারদের মাঠের জীবনটা আসলে খুব অল্প ক’দিনের। ৩৫ থেকে ৪০-এর মধ্যে আজকাল অধিকাংশ ক্রিকেটার ‘গুডবাই’ বলে ফেলেন বাইশ গজকে। তবে, অনেকেই ক্রিকেট ছাড়তে পারেন না। ক্রিকেট  থেকে অবসরে যাওয়ার পর ক্রিকেটাররা সাধারণত ক্রিকেটের কাছাকাছিই থাকেন। কেউ কোচিং, কেউ বা ধারাভাষ্যের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েন।

যদিও, সবাই এমন ‘ক্রিকেটের সাথে থেকে যাওয়ার প্রথা’ মানেন না। এমন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছেন যারা খেলা ছাড়ার পর এ স্রোতে গা ভাসাননি। তাঁরা অন্য সব পেশায় যোগ দিয়েছেন, সাফল্যও পেয়েছেন। আজ তেমনই কিছু ক্রিকেটারের কথা বলবো, যারা ২২ গজ ছাড়ার পর ভিন্নধর্মী আর বিচিত্র সব পেশার সাথে নিজেদের জড়িয়েছেন।

  • ইমরান খান (পাকিস্তান)

ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা একজন অধিনায়ক। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৯২ বিশ্বকাপ ঘরে তুলে পাকিস্তান। বলকে দু’দিকেই সুইং করানোর পাশাপাশি ডেথে সময়ের দাবি মেটাতে পারা ব্যাটিং দক্ষতায় নিজেকে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের কাতারে নিয়ে যান তিনি।

বাইশ গজে বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করার পর ১৯৯২ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানান ইমরান। অবসরের চার বছরের মাথায় যোগ দেন রাজনীতিতে। তারপর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক চড়াই-উতরাই পার করে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর মসনদে বসেন সাবেক এই কৃতি অলরাউন্ডার।

  • অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ (ইংল্যান্ড)

ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হয়েও অবসরের পর বক্সিংয়ে অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের যোগ দেওয়াটা পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়। খেলোয়াড়ি জীবনে দলের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০৫ সালের অ্যাশেজে তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্স এখনও দাগ কাটে অসংখ্য ক্রিকেটভক্তের হৃদয়ে।

ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৭০০০ রান ও ৪০০ উইকেটের মালিক ফ্লিনটফ তাঁর বক্সিং ক্যারিয়ারে দুরন্ত সূচনা করেন। ম্যানচেস্টারে অভিষেক ম্যাচেই পরাজিত করেন আমেরিকান বক্সার রিচার্ড ডসনকে যিনি তখন পর্যন্ত এ খেলায় অপরাজিত ছিলেন।

  • কার্টলি অ্যামব্রোস (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

৬ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা কার্টলি অ্যামব্রোস বল ছেড়ে একসময় হাতে গিটার তুলে নিবেন তা হয়তো কেউই ভাবেনি। ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর তিনি  বেজিস্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। অ্যান্টিগান সোকা/রেগি ব্যান্ড ‘ড্রেড অ্যান্ড দ্য ব্যাল্ডহেড’ এর অন্যতম সেরা বেজ বাদক তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছয়শোরও বেশি উইকেট নেওয়া অ্যামব্রোস বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা বেজিস্ট হিসেবে সুপরিচিত।

  • মাইক ব্রিয়ারলি (ইংল্যান্ড)

বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেটার মাইক ব্রিয়ারলি তাঁর সাফল্যমণ্ডিত ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানার পর লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। মেধাবী এই অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলা ৩১টি টেস্টের ১৭টিতে জয় পাওয়ার পাশাপাশি কেবল ৪টিতে পরাজয় বরণ করে ইংল্যান্ড। খেলা ছাড়ার পর ব্রিটিশ মনোবিশ্লেষক সমিতির প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি।

  • যোগিন্দর শর্মা (ভারত)

ভারতের ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক যোগিন্দর শর্মা খেলা ছাড়ার পর পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর পুলিশ হওয়ার গল্পটি সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর হরিয়ানা পুলিশে চাকরি দেওয়া হয় তাকে। বর্তমানে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কুরুক্ষেত্র জেলার পেহোয়ায় দায়িত্বরত আছেন ভারতের হয়ে সমান চারটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলা এই ক্রিকেটার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link