সপ্তাহ দুই বা তিন আগেও ভারতের বিশ্বকাপ স্কোয়াড ভাবনায় ছিলেন না দীনেশ কার্তিক। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে অনেক খানি, হুট করেই নির্বাচকদের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে উঠে এসেছেন তিনি। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ধারাবাহিক ব্যর্থতা সত্ত্বেও নিজেকে আরও একবার প্রমাণ করতে সমস্যা হয়নি তাঁর, ৩৮ বছর বয়সে এসেও তাই তাঁকে দেখে বিস্মিত হতে হয়।
অবশ্য সমর্থকদের মনোযোগ তো এই ব্যাটারের পাওনা বটে, ক্রিকেটের প্রতি তাঁর যেই নিবেদন সেটির পুরষ্কার হিসেবে কিছু তো পেতেই হত। লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ম্যাচের কথা ভাবা যাক, আট বলে চার রান করে আউট হয়েছিলেন তিনি। পরের দিন পুরো দলের ছুটি থাকলেও একাই অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে – কারণটা স্পষ্ট, নিজের পারফরম্যান্সে তুষ্ট ছিল না তাঁর মন।
এই তারকা এখন পার্ট টাইম ক্রিকেটার, প্রায় সময় স্টুডিওতে বসে ক্রিকেট নিয়ে কথা বলেন। ধারাভাষ্যকার পরিচয়েও ইতোমধ্যে পরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি – এ বয়সে এসে ব্যাট হাতে না নামলেই হত, তবু বাইশ গজে আরো একবার লড়াইয়ের লোভ সামলাতে পারেননি।
২০২২ সালে ব্যাঙ্গালুরু দলে নিয়েছিল এই উইকেট কিপারকে, ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে থাকা একজনের প্রতি ফ্রাঞ্চাইজি বিশ্বাস রেখেছে এমন ভাবনা এরপর তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছে নিজেকে নিংড়ে দেয়ার জন্য। ১৮৩.৩৩ স্ট্রাইক রেটে সেবার ৩৩০ রান করেছিলেন তিনি, সেই সুবাদে ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা হয় তাঁর।
প্রায় একই ধরনের প্রত্যাবর্তনের গল্প আবারও লিখতে যাচ্ছেন এই ডানহাতি। চলতি আইপিএলে ২০০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ইতোমধ্যে ২২৬ রান করেছেন তিনি। সত্যি বলতে, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ৮৩ রানের টর্নেডো ইনিংসই মূলত জাতীয় দলের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে তাঁকে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজগামী বিমানে উঠতে পারবেন দীনেশ কার্তিক সেটা অবশ্য এখনও নিশ্চিত নয়। ঋষাভ পান্ত আছেন, সাঞ্জু স্যামসন আছেন, ঈশান কিশাণকেও রাখা হয়েছে ভাবনায় – এদের হারিয়ে সেরা পনেরোতে প্রবেশ করা নিঃসন্দেহে কঠিন। তবে কার্তিক তো কঠিনকেই ভালবাসেন; ফর্ম, ফিটনেস আর নিবেদন ঠিকঠাক থাকলে তাই গত বারের মত এবারও বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে দেখা যাবে তাঁকে।